Advertisement
E-Paper

‘শেষ দেখে ছাড়ব, দরকারে যাব সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্তও!’ শোভনের বিরুদ্ধে লড়াই নিয়ে জানিয়ে দিলেন রত্না

শুক্রবার কলকাতা হাই কোর্টে বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের এজলাসে দেড় ঘণ্টার বেশি সময় ধরে শোভন-রত্নার বিবাহবিচ্ছেদ সংক্রান্ত মামলা চলে। শুক্রবারেই শুনানি শেষ হয়েছে। পরের সপ্তাহে রায় ঘোষণা হতে পারে।

অমিত রায়

শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৯:১৮
Ratna Chatterjee to take divorce case against Sovan Chatterjee to Supreme Court

(বাঁ দিক থেকে) শোভন চট্টোপাধ্যায়, রত্না চট্টোপাধ্যায় এবং বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

স্বামী শোভন চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে চলা বিবাহবিচ্ছেদ মামলার ‘শেষ’ দেখে ছাড়বেন তিনি। প্রয়োজনে যাবেন সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত। শনিবার হুঁশিয়ারির সুরে বলেই দিলেন শোভন-জায়া রত্না চট্টোপাধ্যায়। শুক্রবার হাই কোর্টে শোভনের সঙ্গে তাঁর বিবাহবিচ্ছেদের মামলার শুনানির পরে গভীর রাত পর্যন্ত বাবা দুলাল দাস-সহ নিজের আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলেছেন বেহালা পূর্বের তৃণমূল বিধায়ক। শনিবার সক্কাল সক্কাল রিকশায় চড়ে নিজের ১৩১ নম্বর ওয়ার্ডের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে বেরিয়েছিলেন রত্না। বাড়ি ফিরে আবার নিজের ওয়ার্ডের (বিধায়কের পাশাপাশি রত্না কলকাতা পুরসভার কাউন্সিলারও বটে) পাশাপাশি তাঁর বিধানসভা কেন্দ্রের কাজকর্ম সেরেই আনন্দবাজার অনলাইনের প্রশ্ন সামলেছেন রত্না।

শনিবার পর্ণশ্রীর বাসভবনে বেহালা পূর্বের তৃণমূল বিধায়ক তথা কাউন্সিলর রত্না চট্টোপাধ্যায়।

শনিবার পর্ণশ্রীর বাসভবনে বেহালা পূর্বের তৃণমূল বিধায়ক তথা কাউন্সিলর রত্না চট্টোপাধ্যায়। ছবি: অমিত রায়।

বাড়ির তিনতলার বসার ঘরের দেওয়াল জুড়ে এখনও শোভনের সঙ্গে তাঁর দু’টি যুগল ছবি রয়েছে। সেই ছবির নীচে বসেই বিচ্ছেদ মামলা সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে হুঁশিয়ারি দিয়ে রত্না বলেন, ‘‘২০১৭ সাল থেকে আমি আদালতে লড়াই করে যাচ্ছি। নিম্ন আদালত মামলা নিয়ে রায় দেবে। যদি শোভনবাবু হেরে যান, তা হলে উনি হাই কোর্টে যাবেন। আমি পরাজিত হলে আমিও যাব। আবার হাই কোর্টের ক্ষেত্রেও একই ভাবনা রয়েছে আমার। হাই কোর্টের রায় আমার পক্ষে না গেলে আমি সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত যাব। ছেড়ে আমি দেব না!’’ রত্না আরও বলেন, ‘‘শোভনবাবু যে যে দায়িত্ব ছেড়ে গিয়েছিলেন, সব দায়িত্ব একে একে আমি কাঁধে তুলে নিয়েছি। আমাদের দুই সন্তানের সব দায়িত্বই এখন আমার। তাদের জন্যই আমাকে লড়তে হবে।’’

২০১৭ সালে আলিপুর আদালতে বিবাহবিচ্ছেদের মামলা করেছিলেন শোভন। কলকাতার প্রাক্তন মেয়রের পক্ষে যাঁরা সাক্ষী ছিলেন, তাঁদের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। রত্নার পক্ষেও চার জন সাক্ষী দিয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে শোভন-জায়া রত্না নিম্ন আদালতে আর্জি জানিয়েছিলেন, তাঁর পক্ষে আরও কিছু সাক্ষী রয়েছেন। তাঁদেরও সাক্ষ্য নেওয়া হোক। কিন্তু আলিপুর কোর্ট তা খারিজ করে শুনানি শুরুর নির্দেশ দিয়েছিল। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করেই হাই কোর্টে মামলা করেন বেহালা পূর্বের তৃণমূল বিধায়ক রত্না।

শুক্রবার সেই মামলার শুনানিতে শোভনের হয়ে সওয়াল করেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূলের এই আইনজীবী নেতাকে নিয়েও কিছুটা আক্ষেপ রয়েছে রত্নার। তাঁর কথায়, ‘‘২০১৭ সালে যখন আমি শোভনবাবুর বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করেছিলাম, তখন দলের যাঁরা আমাকে শোভনবাবুর বিরুদ্ধে মামলা চালিয়ে এক ইঞ্চিও জমি না ছাড়ার কথা বলেছিলেন, তাদের একজন হলেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়।’’ তৃণমূলের বিধায়কের আরও বক্তব্য, ‘‘কল্যাণদা আমায় বলেছিলেন, আগে বাংলার মায়েরা নিজের মেয়ের নাম ‘সুচিত্রা’ রাখত অভিনেত্রী সুচিত্রা সেনের ওপর তাদের ভালবাসা থেকে। আর এখন বাংলার মায়েরা নিজেদের মেয়ের নাম ‘বৈশাখী’ রাখবে না। কারণ, বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় একজন মহিলা ভিলেন। তোমার ঘর-সংসার ভেঙে তছনছ করে দিয়েছে। সেই কল্যাণবাবুই এখন আমায় ‘প্রভাবশালী’ এবং আমার বাবাকে ‘কালারফুল’ বলে আদালতে কটাক্ষ করছেন।’’

শুক্রবার কলকাতা হাই কোর্টে বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের এজলাসে দেড় ঘণ্টার বেশি সময় ধরে শোভন-রত্নার বিবাহবিচ্ছেদ সংক্রান্ত মামলা চলে। শুক্রবারেই শুনানি শেষ হয়েছে। পরের সপ্তাহে রায় ঘোষণা হতে পারে। তাই আপাতত কলকাতা হাই কোর্টের রায়ের দিকেই তাকিয়ে দু’পক্ষ। সেই রায়ের পরে উভয় পক্ষেরই পরবর্তী গন্তব্য হতে পারে দেশের শীর্ষ আদালত। রত্নার কথায় স্পষ্ট যে, তিনি ছেড়ে দেওয়ার পাত্রী নন।

Ratna Chatterjee Shovan Chatterjee Divorce Case Tmc Leader
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy