Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
পুরভোটে আধাসেনা

নবান্ন নির্দেশ না-মানলে দিল্লি দেখাচ্ছেন সুশান্ত

বিধাননগর ও আসানসোল পুর নিগম, হাওড়া পুর নিগমের ১৬টি ওয়ার্ড এবং শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের ভোট নিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশন ও নবান্নের দড়ি টানাটানি অব্যাহত। এতটাই যে, ওই ভোট অবাধ ও শান্তিপূর্ণ করার ক্ষেত্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার তাদের নির্দেশ না-মানলে বিষয়টি ভারতের নির্বাচন কমিশনকে জানানো হতে পারে বলে বুধবার ইঙ্গিত দিয়েছেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার সুশান্তরঞ্জন উপাধ্যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০১৫ ০৩:৫৬
Share: Save:

বিধাননগর ও আসানসোল পুর নিগম, হাওড়া পুর নিগমের ১৬টি ওয়ার্ড এবং শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের ভোট নিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশন ও নবান্নের দড়ি টানাটানি অব্যাহত। এতটাই যে, ওই ভোট অবাধ ও শান্তিপূর্ণ করার ক্ষেত্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার তাদের নির্দেশ না-মানলে বিষয়টি ভারতের নির্বাচন কমিশনকে জানানো হতে পারে বলে বুধবার ইঙ্গিত দিয়েছেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার সুশান্তরঞ্জন উপাধ্যায়।

‘‘কোনও বিতর্ক চাই না। তবে রাজ্য নির্দেশ না-মানলে আমি সব কিছু ভারতের নির্বাচন কমিশনকে জানাতে পারি,’’ বলেন সুশান্তবাবু।

তিন পুর নিগম এবং শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের ভোট নিয়ে, বিশেষ করে ওই নির্বাচনে আধাসেনা মোতায়েন নিয়ে টানাপড়েন চলেছে দীর্ঘদিন ধরে। রাজ্য নির্বাচন কমিশন চেয়েছিল, পুর নিগম ও শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হোক। এই মর্মে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে চিঠিও দিয়েছিল কমিশন। জবাবে কেন্দ্র জানায়, রাজ্যে যে-আধাসেনা মোতায়েন আছে, কমিশন তাদের মধ্য থেকে ছয় কোম্পানি জওয়ান নিতেই পারে। তবে এই ব্যাপারে অবশ্যই রাজ্য সরকারের সম্মতি নিতে হবে।

কিন্তু নিরাপত্তার কারণে রাজ্যের কোনও এলাকা থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনী তুলে আনা সম্ভব নয় বলে কমিশনকে জানিয়ে দিয়েছে নবান্ন। এ কথা জানার পরে সুশান্তবাবু মঙ্গলবার ফের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে চিঠি লিখে বাহিনী পাঠানোর আর্জি জানান। তার জবাবে একই কথা জানিয়েছে কেন্দ্র।

এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়ে আবার নবান্নে চিঠি পাঠিয়েছে কমিশন। সুশান্তবাবু বলেন, ‘‘বুধবার নতুন করে চিঠি দিয়েছি। তার সঙ্গে জুড়ে দিয়েছি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের চিঠিও। দেখা যাক, রাজ্য কী করে।’’ তবে কেন্দ্রীয় বাহিনী পাওয়া যাবে কি না, সেই ভরসায় না-থেকে বিধাননগর পুর নিগমের দত্তাবাদ এবং বিমানবন্দর এলাকার কিছু জায়গায় ইএফআর-কে টহল দিতে বলেছেন সুশান্তবাবু।

যদিও নবান্নের সঙ্গে কমিশনের টানাপড়েনটা থেকেই যাচ্ছে। রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের পদে বসার সময় সুশান্তবাবু বলেছিলেন, তিনি সরকারের সঙ্গে বিবাদবিতর্কে যেতে চান না। এ বারেও মুখে বলেছেন, বিতর্ক চান না। কিন্তু রাজ্য তাঁদের নির্দেশ না-মানলে দিল্লিকে জানানোর ইঙ্গিতেই স্পষ্ট, টানাপড়েন এখনই শেষ হচ্ছে না। এর দূরপ্রসারী প্রভাব নিয়েও জল্পনা চলছে। আগামী বছর এ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। তারই প্রস্তুতি হিসেবে ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণার আগে ভারতের নির্বাচন কমিশন সংশ্লিষ্ট রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেন। কমিশনের এক অফিসার জানান, বিধানসভা ভোটের এক-দেড় বছর আগে থেকে রাজ্যের অপরাধ সংক্রান্ত তথ্য, অপরাধ দমনে পুলিশের ভূমিকা, পুরসভা বা পঞ্চায়েত ভোট হলে কী পরিস্থিতিতে তা হয়েছে— সবই গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখা হয়। ওই অফিসার বলেন, বিধানসভা ভোটের আগে দেশের নির্বাচন কমিশন যদি দেখে যে, রাজ্য নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ সরকার অগ্রাহ্য করেছে এবং তা নিয়ে বিরোধী শিবির যদি সরব হয়, তা হলে বিষয়টি শাসক দলের কাছে অস্বস্তিকরই হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Municipal election Election commissioner Asansol
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE