Advertisement
E-Paper

তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন, ফের অঘটনের হুঙ্কার কুণালের

আগে থেকে ঘোষণা করে প্রেসিডেন্সি জেলের ভিতরেই ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন তিনি। সারদা-তদন্ত যথাযথ ভাবে না-হলে তিনি আবার কোনও অঘটন ঘটাবেন বলে বৃহস্পতিবার আদালতে দাঁড়িয়ে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সাংসদ কুণাল ঘোষ। অনেকে মনে করছেন, ‘অঘটন’ বলতে আত্মহত্যার চেষ্টার মতোই কিছু একটা করার হুমকি দিয়েছেন রাজ্যসভার ওই সদস্য।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০১৫ ০৩:৪৪
বৃহস্পতিবার ব্যাঙ্কশাল আদালতে কুণাল ঘোষ। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।

বৃহস্পতিবার ব্যাঙ্কশাল আদালতে কুণাল ঘোষ। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।

আগে থেকে ঘোষণা করে প্রেসিডেন্সি জেলের ভিতরেই ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন তিনি। সারদা-তদন্ত যথাযথ ভাবে না-হলে তিনি আবার কোনও অঘটন ঘটাবেন বলে বৃহস্পতিবার আদালতে দাঁড়িয়ে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সাংসদ কুণাল ঘোষ। অনেকে মনে করছেন, ‘অঘটন’ বলতে আত্মহত্যার চেষ্টার মতোই কিছু একটা করার হুমকি দিয়েছেন রাজ্যসভার ওই সদস্য।

সারদা গোষ্ঠীর আর্থিক কেলেঙ্কারিতে মুখ্যমন্ত্রী-সহ শাসক দলের অনেক নেতা-মন্ত্রীর বিরুদ্ধে বারবার তোপ দেগেছেন কুণাল ঘোষ। এ বার সিবিআইয়ের তদন্তকেই নিশানা করেছেন তিনি! এবং এ বারেও মঞ্চ হিসেবে বেছে নিয়েছেন আদালতকেই। কুণাল বৃহস্পতিবার নগর দায়রা আদালতে বিচারক অরবিন্দ মিশ্রের এজলাসে অভিযোগ তোলেন, সারদা কেলেঙ্কারিতে আট জন সাংসদ জড়িত। ২০১৩ সালে সারদার কর্ণধার সুদীপ্ত সেন রাজ্য ছেড়ে পালানোর পরে এক শীর্ষ নেতার বাড়ি থেকে তাঁর কাছে কয়েক লক্ষ টাকা পাঠানো হয়েছিল। এ-সবই সিবিআই জানে। কিন্তু তাঁদের কাউকেই জেরা পর্যন্ত করা হচ্ছে না। কেন? এটাই প্রশ্ন কুণালের।

শুধু অভিযোগ করে বা প্রশ্ন তুলেই থেমে যাননি ওই সাংসদ। এজলাসে দাঁড়িয়েই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এবং প্রশাসনকে হুঁশিয়ারি দেন, এমন ভাবে তদন্ত চলতে থাকলে তিনি আবার অঘটন ঘটিয়ে ফেলবেন।

সারদা ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলসের মামলায় সারদা-প্রধান সুদীপ্ত সেন ও সংস্থার অন্যতম ডিরেক্টর দেবযানী মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে এ দিন কুণালকেও কলকাতার নগর দায়রা আদালতে তোলা হয়। এই মামলায় সিবিআই ও অভিযুক্তদের আইনজীবীদের সওয়ালের পরে কুণাল নিজের বক্তব্য বলতে ওঠেন। শুরুতেই নিজের শারীরিক অবস্থার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, “কাল থেকে (বুধবার) আমার শরীরে যন্ত্রণা হচ্ছে। ইঞ্জেকশন শুরু হয়েছে। আমার জন্য তো আর এসএসকেএম নেই! জেলেই চিকিৎসা হয়।” অনেকেই বলছেন, এই মন্তব্যে সারদা কেলেঙ্কারিতে ধৃত পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্রকেই বিঁধেছেন রাজ্যসভার এই সদস্য। কারণ, মদনবাবু অসুস্থতার কারণে দীর্ঘদিন ধরেই এসএসকেএম হাসপাতালের উডবার্ন ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছেন।

মদনবাবুকে এখানেই ছেড়ে দেননি কুণাল। তাঁর বক্তব্য, সারদা রিয়েলটি মামলায় ধৃত মদনবাবু সারদার কর্মী ইউনিয়নের সভাপতি ছিলেন। সারদা ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলসের মামলাতেও ওই মন্ত্রীকে অভিযুক্ত করা হবে না কেন, সেই প্রশ্ন তোলেন তিনি। সারদা রিয়েলটি মামলায় একের পর এক অভিযুক্ত কী ভাবে জামিন পাচ্ছেন, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন কুণাল। ওই মামলায় অভিযুক্ত সৃঞ্জয় বসু ও রজত মজুমদার এর আগেই জামিন পেয়েছেন। মঙ্গলবার জামিন পান ইস্টবেঙ্গলের অন্যতম কর্মকর্তা দেবব্রত ওরফে নিতু সরকার। আদালত এ দিন সুদীপ্ত-দেবযানীর মতো কুণালকেও ৬ এপ্রিল পর্যন্ত জেল-হাজতে রাখার নির্দেশ দেয়।

সারদা কেলেঙ্কারিতে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার সময় সুপ্রিম কোর্ট বলেছিল, এই কেলেঙ্কারিতে বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের বিষয়টি উদঘাটন করতে হবে। সেই প্রসঙ্গ টেনে এ দিন আদালত থেকে জেলের গাড়িতে ওঠার সময় কুণালের মন্তব্য, “বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের মামলায় সিবিআই যেন বৃহত্তম সমঝোতা না-করে।”

সারদা-তদন্তে নেমে বৃহস্পতিবার অসমের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা অঞ্জন দত্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই। অসমে সারদার একটি সংবাদপত্র ছাপার বিষয়ে ওই প্রাক্তন মন্ত্রীর সংস্থার সঙ্গে চুক্তি হয়েছিল। মূলত সেই বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ হয়েছে বলে অঞ্জনবাবু পরে জানান।

এ দিনই অন্য লগ্নি সংস্থা এমপিএস-এর কর্ণধার প্রমথনাথ মান্নাকে আবার সিবিআইয়ের হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে বিধাননগর আদালত। লেক টাউন থানায় প্রতারণার মামলায় তিনি ১০ দিন সিবিআই হেফাজতে ছিলেন। এ দিন তাঁকে আদালতে তোলা হয়। সিবিআইয়ের আইনজীবীরা আবেদন জানান, ওই লগ্নি-কর্তাকে আবার তদন্ত সংস্থার হেফাজতেই পাঠানো হোক। বিচারক সেই আর্জি মঞ্জুর করে নির্দেশ দেন, প্রমথনাথ সোমবার পর্যন্ত সিবিআই হেফাজতে থাকবেন।

Kunal Ghosh CBI Rose valley Sudipta Sen Nitu ED Srinjoy Bose
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy