Advertisement
E-Paper

গুলি-বোমার কথা উড়িয়ে দিলেন উপাচার্য

টিএমসিপি-র বিরুদ্ধে রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ে বোমা-গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠার ঠিক পরের দিন শিক্ষক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সরকারি উৎসবে এ নিয়ে একটি বাক্যও খরচ করলেন না মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০৩:৩০

টিএমসিপি-র বিরুদ্ধে রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ে বোমা-গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠার ঠিক পরের দিন শিক্ষক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সরকারি উৎসবে এ নিয়ে একটি বাক্যও খরচ করলেন না মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

শুক্রবার নজরুল মঞ্চের অনুষ্ঠানে তৃণমূল সরকার শিক্ষাক্ষেত্রে কতটা সাফল্য পেয়েছে, তার বিস্তৃত খতিয়ান দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। মঞ্চে উপাচার্যদের মধ্যে প্রথম সারিতেই বসেছিলেন রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অনিল ভুঁইমালিও। যিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে গুলি চলার কথা শুনে বলেছিলেন, ‘‘কই কারও গায়ে তো লাগেনি গুলিটা!’’ তাঁর হাত দিয়েও একাধিক পুরস্কার দেওয়ালেন মমতা। হাসিমুখে কথাও বললেন। কিন্তু বক্তৃতায় রায়গঞ্জ প্রসঙ্গের ধার-কাছ দিয়েও গেলেন না।

প্রশ্ন ওঠে, বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন অশান্তি ধোঁয়াচ্ছে, সেখানে হাজির থেকে পরিস্থিতি মোকাবিলার বদলে কলকাতায় পুরস্কারের মঞ্চে উপস্থিত থাকাটা কতটা যথাযথ? অনিলবাবু দাবি করেন, অনুষ্ঠানে আসাটা তাঁর কাছে ‘বাধ্যবাধকতার বিষয়’ ছিল। কীসের বাধ্যবাধকতা? ব্যাখ্যা এড়িয়ে অনিলবাবু বলেন, ‘‘এই অনুষ্ঠানটা খুব গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। আসতেই হতো।’’

তা হলে কি বিশ্ববিদ্যালয়ে গুলি চলা বা বোমা পড়াটা কম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়? উপাচার্যের দাবি, ‘‘মিথ্যা রটনা হচ্ছে। আমার কাছে যা খবর, তাতে সেখানে গুলিও চলেনি, বোমাও পড়েনি।’’ তা হলে কার্তুজের খোল মিলল কী করে? তিনি জবাব দেন, ‘‘সব মিথ্যা প্রচার। দূরে কোথাও কোনও ঝামেলা হচ্ছিল, সেখান থেকে বোমা-গুলির শব্দ এসেছে।’’

ওই দিন মেয়েকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করাতে যাওয়া এক অভিভাবক অবশ্য বলেন, ‘‘মেয়েকে নিয়ে কী ভাবে যে পালিয়েছি, তা বলে বোঝাত পারব না। বোমা পড়ছে, গুলি ছোড়া হচ্ছে।’’ যাদের বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর অশান্ত করে তুলতে দেখেছিলেন ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীরা, তাদের বিরুদ্ধে মারধর, সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করা, বোমা-গুলি ছোড়ার অভিযোগ থানায় জমা পড়েছে। ছাত্র পরিষদ ও টিএমসিপি, পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে। নানা চাপের মুখে পুলিশও নিজেই পৃথক মামলা করেছে। অথচ এক জনও শুক্রবার রাত পর্যন্ত গ্রেফতার হয়নি। এ দিন বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ছিল। হস্টেলে পড়ুয়ারা আতঙ্কে।

গোলমালের পরেই উপাচার্য দাবি করেছিলেন, তখন তিনি খেতে বেরিয়েছিলেন। এ দিন তিনি বলেন, কলকাতায় আসার জন্য তিনি বেরিয়ে গিয়েছিলেন। মাঝরাস্তায় গোলমালের কথা শোনেন। শুনে ফিরে গেলেন না কেন? উপাচার্যের ব্যাখ্যা, ‘‘তত ক্ষণে পুলিশ ঝামেলা কমিয়ে ফেলেছিল।’’

কারা কেন ঝামেলা করেছিল? উপাচার্য প্রথমে বলেন, ‘‘যারা ভর্তি হতে পারেননি, তাঁদের অভিভাবকেরা কিছু বাইরের লোক নিয়ে হামলা করেছিল।’’ মিনিট দশেকের মধ্যে বয়ান বদলে যায়। উপাচার্য দাবি করেন, ‘‘ছাত্র পরিষদের ছেলেরা কিছু বাইরের লোক নিয়ে কলেজে ধুন্ধুমার বাধিয়েছিল। কারণ ওখানে ছাত্র সংসদ এখন ওদের দখলে। সামনে আবার ছাত্র নির্বাচন আসছে। ছাত্র পরিষদ রাজনৈতিক মাইলেজ চাইছে।’’ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার গণ্ডগোলের পর থেকে তৃণমূল যে প্রচার শুরু করেছিল, উপাচার্যও সেই ধুয়োই ধরেন।

জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মৃণাল মজুমদার দাবি করেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে সিসিটিভি ফুটেজ চাওয়া হয়েছে। তাতে জড়িতদের চিহ্নিত করা, গুলি ও বোমা ছোড়ার প্রমাণও মিলবে। দায়িত্বে থাকা পুলিশ অফিসারদের ভূমিকাও খতিয়ে দেখা হবে।’’ ছাত্র পরিষদের একাংশের আশঙ্কা, গোলমালের সময়ে এক শিক্ষক কন্ট্রোল রুমের দরজা বন্ধ করে বসেছিলেন। তিনি ফুটেজ নষ্ট করে থাকতে পারেন। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে দাবি করা হয়, সোমবারই ভিডিও ফুটেজ পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হবে।

Raiganj University VC TMCP bomb blast
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy