E-Paper

নারী দিবসে দণ্ডি কেটে, অশ্রুজলে চাকরি দাবি

শুধু আর্তি বা কান্না নয়, বাদ যায়নি ব্যঙ্গবিদ্রুপও। নবম-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষকপদ প্রার্থীদের অধিকাংশেরই পরনে ছিল কালো পোশাক। তাঁদের মিছিলে এক চাকরিপ্রার্থী কুম্ভকর্ণ সেজে ঘুমোনোর অভিনয় করছিলেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০২৩ ০৫:৪৮
picture of Protest.

শিয়ালদহ থেকে এসএসসি-র চাকরিপ্রার্থীদের মিছিল। বুধবার। ছবি: রণজিৎ নন্দী

রাস্তায় শুয়ে পড়েছেন কেউ কেউ। অনেকে দণ্ডি কাটতে কাটতে এগিয়ে চলেছেন। আকুল কান্নায় কেউ কেউ প্রার্থনা করছেন চাকরি। আবার কারও কারও দাবি, লক্ষ্মীর ভান্ডারের ৫০০ টাকার দয়া চান না তাঁরা, চান স্বনির্ভর হতে। তাঁদের মধ্যে মিল দু’জায়গায়। তাঁরা সকলেই মহিলা আর তাঁদের সকলেরই দাবি চাকরি। বুধবার, ৮ মার্চ, নারী দিবসে রাজপথে নারীদেরই আর্তনাদ আর দাবি শুনল কলকাতা। তবে তাঁদের সুবিধা-অসুবিধা দেখতে সর্বত্রই ছিলেন পুরুষ কর্মপ্রার্থীরা।

এ দিন একসঙ্গে দু’টি চাকরিপ্রার্থী মঞ্চ বিক্ষোভের কর্মসূচি নিয়েছিল। ময়দানে গান্ধী-মূর্তির পাদদেশে ধর্নায় বসা নবম-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষকপদে চাকরিপ্রার্থীরা শিয়ালদহ থেকে রওনা হয়ে এসএন ব্যানার্জি রোড হয়ে মঞ্চে ফেরেন। মাতঙ্গিনী হাজরার মূর্তির নীচে বিক্ষোভরত স্কুলের ‘গ্রুপ সি’ বা তৃতীয় শ্রেণি এবং ‘গ্রুপ ডি’ বা চতুর্থ শ্রেণির কর্মী-পদে চাকরিপ্রার্থীরা মঞ্চেই কর্মসূচি পালন করেন।

শুধু আর্তি বা কান্না নয়, বাদ যায়নি ব্যঙ্গবিদ্রুপও। নবম-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষকপদ প্রার্থীদের অধিকাংশেরই পরনে ছিল কালো পোশাক। তাঁদের মিছিলে এক চাকরিপ্রার্থী কুম্ভকর্ণ সেজে ঘুমোনোর অভিনয় করছিলেন। আর তাঁর কানের কাছে সমানে শাঁখ ও কাঁসর বাজাচ্ছিলেন দুই মহিলা চাকরিপ্রার্থী। চিৎকার করে তাঁরা স্লোগান দিচ্ছিলেন, ‘কুম্ভকর্ণ সরকার, এ বার জাগা দরকার।’ মুক্তি বিশ্বাস নামে এক চাকরিপ্রার্থী বলেন, ‘‘বুধবার আন্দোলন ৭২৫ দিনে পড়ল। এত দিন ধরে সরকার ঘুমাচ্ছে। এমন ঘুম তো কুম্ভকর্ণও ঘুমোয়নি!’’ মিছিলে ছিল কর্মপ্রার্থীদের প্রতীকী মরদেহও।

ধর্মতলায় প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে শুরু হয় মহিলা চাকরিপ্রার্থীদের দণ্ডি কাটা। তাঁদের যাতে কোনও অসুবিধা না-হয়, সেই জন্য রাস্তায় জল ছেটাচ্ছিলেন পুরুষ কর্মপ্রার্থীরা। রাসমণি পাত্র নামে এক চাকরিপ্রার্থী বললেন, ‘‘দণ্ডি কাটলে শুনেছি ভগবানও প্রার্থনা পূরণ করেন। নারী দিবসে আমাদের মহিলা মুখ্যমন্ত্রীর কানে কি এই কাতর আবেদন পৌঁছচ্ছে না? এক দিকে সাদা খাতা জমা দিয়ে চাকরি হয়ে যাচ্ছে, অন্য দিকে আমরা যোগ্য হয়েও নিয়োগের দাবিতে রাস্তায় দণ্ডি কাটছি!’’

তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মী-পদে চাকরিপ্রার্থীদের দাবি, লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা নয়, তাঁরা চাকরি চান। সেখানকার মহিলা কর্মপ্রার্থীরা জানান, ২০০ দিন ধরে আন্দোলন চলছে। এক মহিলা চাকরিপ্রার্থী বলেন, ‘‘লক্ষ্মীর ভান্ডারের ৫০০ টাকা চাই না। আমাদের চাকরি চুরি হয়ে গিয়েছে। তা ফেরত চাই। আমরা যোগ্য। আমরা চাই, দ্রুত কাউন্সেলিং শুরু হোক।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Recruitment Scam Protest Kolkata

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy