Advertisement
০১ মে ২০২৪
Puja Donation

চাঁদার জুলুম হলেও অভিযোগ দায়েরে অনীহা

পুজোর আগে চাঁদার জুলুম থেকে বাদ যাচ্ছে না বড় বা ছোট মালবাহী গাড়িও। পুজোর দিন যত এগিয়ে এসেছে, ততই এই জুলুমবাজি বেড়েছে বলে ভুক্তভোগীদের দাবি।

An image of Money

—প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০২৩ ০৭:০৭
Share: Save:

ব্যবসার জিনিস কিনতে বড়বাজার গিয়েছিলেন এক ব্যবসায়ী। জিনিস নিয়ে ফেরার সময়ে পিয়ারী দাস লেনে আচমকা তাঁর পথ আটকান জনা পাঁচেক যুবক। কিছু বলার আগেই ‘নাম-গোত্রহীন’ পুজোর বিল ধরিয়ে দেওয়া হয় হাতে। ব্যবসায়ী সেই মতো চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় শুরু হয় বচসা। যা গড়ায় ধাক্কাধাক্কিতে। পরে নিজেকে স্থানীয় বাসিন্দা বলে পরিচয় দিয়ে মোবাইলে ভিডিয়ো করতে গেলেই ঘটনাস্থল থেকে চম্পট দেয় অভিযুক্তেরা।

দিন তিনেক আগের ওই ঘটনার পরেই তিনি গিরিশ পার্ক থানায় যান বলে দাবি ওই ব্যবসায়ীর। কিন্তু কোনও ব্যবস্থা নেওয়া তো দূর, বরং তাঁকেই বুঝিয়ে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। ওই ব্যক্তির অভিযোগ, ‘‘বিলে কালীপুজো এবং বিচিত্রানুষ্ঠান লেখা ছিল। ক্লাবের নাম কিছু চোখে পড়েনি। স্থানীয় বাসিন্দা শুনেই হাত থেকে বিলটি কেড়ে নিয়ে আমাকে চলে যেতে বলা হয়।’’

পুজোর আগে চাঁদার জুলুম থেকে বাদ যাচ্ছে না বড় বা ছোট মালবাহী গাড়িও। পুজোর দিন যত এগিয়ে এসেছে, ততই এই জুলুমবাজি বেড়েছে বলে ভুক্তভোগীদের দাবি। কখনও পিয়ারী দাস লেন, দয়াল মিত্র লেনে তো কখনও স্ট্র্যান্ড ব্যাঙ্ক রোডে এমনটা ঘটছে। উল্টোডাঙা এলাকাতেও গাড়ি থামিয়ে চাঁদার জুলুমবাজি চলছে বলে অভিযোগ। রাতেও গাড়ি দাঁড় করিয়ে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। বড়বাজারে মালবাহী গাড়ি নিয়ে আসা এক চালক শশী কুমার বললেন, ‘‘গাড়ি প্রতি ১০০, ২০০ চাইছে। খালি গাড়ি হলে এক রকম চাঁদা, মাল বোঝাই থাকলে আর এক রকম। কোনও কথা না শুনেই গাড়ির সামনে উঠে পড়ছে। কিছু বললেই বলছে, বছরে তো এক বার।’’

আবাসন বা বসত এলাকায় চাঁদার জুলুমবাজির অভিযোগ তুলনামূলক ভাবে কম। তবে বাণিজ্যিক এলাকায় এই অভিযোগ বেশি বলে দাবি। ঝামেলার ভয়ে অধিকাংশ ভুক্তভোগীই থানা-পুলিশের দ্বারস্থ হচ্ছেন না। দক্ষিণ থেকেও কালীপুজোকে ঘিরে চাঁদার জুলুমের অভিযোগ মিলছে। এ প্রসঙ্গে আমহার্স্ট স্ট্রিটের একটি বড় কালী পুজো কমিটির এক উদ্যোক্তার যদিও দাবি, ‘‘গাড়ি থামিয়ে কে, কোথায় চাঁদা নিচ্ছেন, জানি না। আমাদের এ দিকে এ সব হয় না। তবে পুজো করতে তো টাকাও লাগবে। শুধু স্পনসর, বিজ্ঞাপন দিয়ে সব হয় না।’’

এ দিকে চাঁদার জুলুম নিয়ে কোনও লিখিত অভিযোগ আসেনি বলে দাবি করেছে লালবাজার। এমনকি, প্রতিটি থানাকে আগে থেকেই প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়া রয়েছে বলেও তারা জানাচ্ছে। পুজো ঘিরে যে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে নিয়মিত ধরপাকড়ও চলার দাবি করেছে লালবাজার। এক পুলিশকর্তার আশ্বাস, ‘‘অভিযোগ এলেই কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেই মতো থানাগুলিকে নির্দেশ দেওয়া আছে। পুলিশের বিশেষ দলও এই নিয়ে নজরদারি চালাচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

donation Fund Complaints
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE