Advertisement
E-Paper

রিপোর্ট দেরিতে, চিন্তায় ডাক্তাররা

সুকান্ত নগরের বাপ্পা মণ্ডলের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল ২৪ জুলাই। তাঁর যে ডেঙ্গি হয়েছে, তা তিনি জানতে পারলেন ১৭ সেপ্টেম্বর। ২০ অগস্ট সংগ্রহ করা নমুনার রিপোর্ট মানিকতলার জিসান চৌধুরী পেলেন ১৭ সেপ্টেম্বর।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০০:২৬

সুকান্ত নগরের বাপ্পা মণ্ডলের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল ২৪ জুলাই। তাঁর যে ডেঙ্গি হয়েছে, তা তিনি জানতে পারলেন ১৭ সেপ্টেম্বর।

২০ অগস্ট সংগ্রহ করা নমুনার রিপোর্ট মানিকতলার জিসান চৌধুরী পেলেন ১৭ সেপ্টেম্বর। একই দিনে রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে ট্যাংরার সহদেব দাস বা বেলেঘাটার সানি রায়কে। তাঁদের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল যথাক্রমে ৪ অগস্ট ও ৯ সেপ্টেম্বর। প্রতি ক্ষেত্রেই রিপোর্ট পজিটিভ। কিন্তু ডেঙ্গির পরে এই রোগীরা যখন সুস্থ হয়ে গেলেন, তখন জানতে পারলেন তাঁরা ওই রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন!

বাপ্পা মণ্ডল, সানি রায়েরা হয়তো ভাগ্যবান। তাই তাঁদের খারাপ পরিণতি হয়নি। কারণ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মতে, এত দেরিতে রোগ নির্ণয়ের পরিণাম হতে পারে মারাত্মক। আক্রান্ত হওয়ার দু’তিন দিনের মধ্যে প্লেটলেটের পরিমাণ কমে গিয়ে মৃত্যু হতে পারে রোগীর।

এ রাজ্যে সরকারি ভাবে ডেঙ্গির রক্তের নমুনা পরীক্ষার অন্যতম কেন্দ্র ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চের (আইসিএমআর) ভাইরাস ইউনিট। কিন্তু সেখানেই এমন দুরবস্থা। যদিও এই সাবধানবাণীতে থোড়াই কেয়ার স্বাস্থ্য দফতরের। তাঁরা পরিষ্কার জানাচ্ছেন, যা করণীয় সরকার সব করছে। স্বাস্থ্য দফতরের এক শীর্ষ কর্তা শুক্রবারও বলেন, ‘‘কী করা উচিত আমরা জানি।’’

এই মনোভাবকে সিঁদুরে মেঘের মতো ভয় পাচ্ছেন চিকিৎসক মহলের একটি বড় অংশ। তাঁদের মতে, আগের মতো এ বারও ধামাচাপা দিতে গিয়ে ডেঙ্গি পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপের দিকে নিয়ে যাচ্ছে রাজ্য সরকার। এনএস ওয়ান পরীক্ষা বন্ধ করতে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি ল্যাবরেটরিগুলিতে ফরমান জারি হয়ছে। ফলে রোগ ধরা পড়ছে দেরিতে। অন্য দিকে, সরকার স্বীকৃত এলাইজা পদ্ধতি যে কেন্দ্রে হয় সেখান থেকে রিপোর্ট আসছে দেরিতে। তাই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে বলে আশঙ্কা চিকিৎসকদের।

আইসিএমআর-এর ভাইরাস ইউনিটেই আইডি হাসপাতালের সমস্ত নমুনা জড়ো হয়। কারণ এই পরীক্ষার জন্য আইডি-র নিজস্ব পরিকাঠামো নেই। আইডি-র চিকিৎসকদের বক্তব্য, এত দেরিতে রিপোর্ট পেলে তাঁরা চিকিৎসা শুরু করবেন কী ভাবে? তার আগেই তো বড় বিপর্যয় ঘটে যেতে পারে। আইসিএমআর কর্তৃপক্ষ অবশ্য এ নিয়ে মন্তব্য.করতে চাননি। তবে আইসিএমআর-এর বিজ্ঞানীরা জানান, তাঁদের বিভাগে টেকনিশিয়ানের সমস্যা, কিটের সমস্যা রয়েছেই। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট হাসপাতালে কে রিপোর্ট পৌঁছে দেবেন, তা নিয়েও টালবাহানা চলে।

স্বাস্থ্য দফতরের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘‘এক একটি কিটে ৯৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করা যায়। তাই এত দিন ঢিমে তালে কাজ হচ্ছিল। কারণ বিভিন্ন হাসপাতালকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যেন শুধু জ্বর দেখেই যথেচ্ছ নমুনা সংগ্রহ না করা হয়। তাই নমুনা কম আসছিল। আর কিট বাঁচাতে যতক্ষণ না একসঙ্গে প্রচুর নমুনা জমছে, ততক্ষণ কাজ শুরু হচ্ছিল না।’’ পরজীবী বিশেষজ্ঞদের মতে, ডেঙ্গির পরে প্রথম কয়েকটা দিনই খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, সাধারণ ভাবে দু’তিন দিনের মাথায় প্লেটলেট কমতে শুরু করে। ছ’দিনের মাথায় তা ফের বাড়তে থাকে। তাই ক্ষতি হওয়ার হলে গোড়াতেই ভয় বেশি।

dengue doctor kolkata hospital
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy