কৃষিকাজে জল, মাটি অন্যতম আবশ্যিক উপাদান। ওই কাজে এই সব উপাদানের যথেচ্ছ অপচয়ও হয়। প্রাকৃতিক উপাদান বাঁচিয়ে বিকল্প কৃষিকাজের রাস্তা খুঁজতে এ বার সংরক্ষণমূলক কৃষি গবেষণার জন্য বিশেষ গবেষকদল তৈরি করবে বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। এই খাতে কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রক তাদের ২০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, স্নাতকোত্তর ও গবেষণা করবে এমন আগ্রহী পড়ুয়াদের নিয়েই এই বিকল্প ধারার কৃষি গবেষণা শুরু হবে। কয়েক বছর ধরে এই বিষয়ে বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বিক্ষিপ্ত ভাবে গবেষণা করে আসছে। এ বার বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষিবিজ্ঞানীদের তত্ত্বাবধানে সংগঠিত ভাবে এই কাজ শুরু হতে চলেছে। খাতায়-কলমে গবেষণার পাশাপাশি বাস্তবে তা রূপায়ণ করতে প্রকল্পের জন্য ১০০ বিঘে জমিও চিহ্নিত করা হয়েছে। যেখানে গবেষণালব্ধ জ্ঞান সংরক্ষণমূলক কৃষি ব্যবস্থায় ফসল উৎপাদনে প্রয়োগ করা হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষিবিজ্ঞানী বিশ্বপতি মণ্ডল জানান, এখন সারা দেশে যে-পদ্ধতি কৃষিকাজ হচ্ছে, তাতে প্রাকৃতিক সম্পদ নষ্ট হচ্ছে প্রচুর পরিমাণে। জল, মাটি নিজের বৈশিষ্ট্য হারিয়ে ফেলছে। সেই অপচয় রুখতে গেলে সংরক্ষণমূলক কৃষিকাজের প্রসার বাড়াতে হবে। যাতে শুধু এই প্রজন্মই নয়, পরবর্তী প্রজন্মও তার গুরুত্ব বুঝতে পারে এবং উপকৃত হয়। ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে সেই সংরক্ষণমূলক কৃষি-ব্যবস্থার উপরেই গবেষণা শুরু হতে চলেছে বলে জানান তিনি।
ঠিক হয়েছে, এই প্রকল্পের গবেষণার সঙ্গে সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ে সংরক্ষণমূলক কৃষিকাজের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে আগ্রহী চাষিদের। খোলা হবে একটি তথ্যভাণ্ডারও। থাকবে একটি বিশেষ পোর্টাল, যার মাধ্যমে জেলার যে-কেউ এই বিষয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি যে-কোনও প্রশ্নের উত্তরও জানতে পারবেন।
এক শ্রেণির বিজ্ঞানীর মতে, জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে খাদ্যের চাহিদা মেটাতে কৃষিকাজে যথেচ্ছ রাসায়নিক সার ব্যবহার, কীটনাশক ও হরমোন প্রয়োগের হার বেড়েই চলেছে। মাটির উর্বরতা বা আশপাশের জলাশয় ও জীববৈচিত্রে তার বিরূপ প্রভাব পড়ছে। হারিয়ে যাচ্ছে বহু কীটপতঙ্গ, খালবিলের নানা প্রজাতির মাছ। প্রাকৃতিক উপাদান বাঁচাতে ফের পূর্বপুরুষের কৃষি পদ্ধতিকেই আধুনিক মোড়কে বাস্তবায়িত করতে হবে। যাতে মাটি-জলের গুণ অক্ষুণ্ণ থাকে, কীটপতঙ্গ বাঁচিয়ে রাখা যায় আবার শস্যের উৎপাদনও বাড়ে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy