অপেক্ষার প্রহর গোনা শেষ! পাঁচ বছর আগে মোমের শিখায় শাস্তি চেয়েছিল বহরমপুর। তাঁদের সেই আশা পূরণ হওয়ার মাঝে রয়েছে এখন মাত্র কয়েক ঘণ্টার ব্যবধান!
২০১৪ সালের ৪ জানুয়ারি বহরমপুরের আশাবরী আবাসনের ‘ডি’ ব্লকের নীচের তলার একটি ফ্ল্যাটে খুন হন বৃদ্ধা প্রভা দাস, তাঁর ভাইঝি মধ্য চল্লিশের বিজয়া বসু ও বিজয়াদেবীর তরুণী কন্যা আত্রেয়ী বসু। ঘটনার দু’দিন পরে ৬ জানুয়ারি ওই ফ্ল্যাটের দরজার তালা ভেঙে ওই তিন জনের দেহ উদ্ধার করে বহরমপুর থানার পুলিশ। ওই ঘটনায় দোষী ব্যক্তির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে ঘটনার দু’দিনের মধ্যে মোমবাতি মিছিলে শামিল হন বহরমপুরের নাগরিকেরা।
সেই মোম-মিছিলে যোগ দিয়েছিলেন আশাবরী আবাসনের বাসিন্দা ও প্রতিবেশীরা। এমনকি আত্রেয়ী যে স্কুলে পড়ত, সেই প্রভারানি পাবলিক স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা থেকে ছাত্রছাত্রীরাও ওই মিছিলে শামিল হয়েছিলেন। ওই মিছিল সংগঠিত করেছিলেন যাঁরা, সেই সঙ্ঘমিত্রা রায়, চন্দ্রাণী হাজরা বন্দোপ্যাধ্যায়, সুমনা সেন, সুদেষ্ণা চট্টোপাধ্যায়, রত্না দাস ও কৃষ্ণা অধিকারীদের অপেক্ষার দিন শেষ হতে চলেছে আজ, শুক্রবার।
বৃহস্পতিবারে সাজা ঘোষণার কথা জানতে পেরেছেন আত্রেয়ীদের পড়শি চন্দ্রাণী হাজরা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলছেন, ‘‘আত্রেয়ী ও তার মা বিজয়া আমাদের কাছের মানুষ ছিল। ওই তিন জনের মৃত্যু আমরা মন থেকে মেনে নিতে পারিনি। তৎকালীন জেলা পুলিশ সুপারের কাছে আবেদন করে জানিয়েছিলাম, পুলিশের তদন্তের গাফিলতিতে যেন নিত্যানন্দ পার পেয়ে না যায়। শেষ পর্যন্ত তার সাজা ঘোষণার কথা জানতে পেরে আমরা সকলেই খুশি।’’
রত্না দাস বলছেন, ‘‘আইনের প্রতি মানুষ কেন ভরসা রাখেন, এই সাজা ঘোষণায় আরও এক বার প্রমাণিত হল। নিত্যানন্দ যে অন্যায় করেছে, তাতে দৃষ্টান্তমূলক কঠোর শাস্তি চাই।’’
কঠোরতম সাজা দিলে ওই তিন জনকে সভা করে স্মরণ করার কথাও পরিকল্পনা শুরু করেছেন তাঁরা।
এ দিকে আত্রেয়ীর স্কুলের শিক্ষক পল্লব বাগ সান্যাল বলছেন, ‘‘মেয়েটার মুখটা মনে পড়লেই মনটা ভার হয়ে যায়। এত প্রাণবন্ত একটা মেয়ে এ ভাবে চলে গেল! এখন দোষী কঠোর সাজা পেলে সান্ত্বনা পাবে মন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy