প্রতীকী ছবি।
সে বার ছিল কাড়াকাড়ি। এ বার দাবিই নেই অনেক জায়গায়!
এক বছরের ব্যবধানে বাম ও কংগ্রেসের জোট-আলোচনার ছবিটা সম্পূর্ণ আলাদা। কোন আসনে কে লড়বে, সেই টানাটানির ফয়সালা করতে না পারায় গত বছর লোকসভা ভোটে দু’দলের সমঝোতা ভেস্তেই গিয়েছিল। এ বার পুরভোটে নিচু তলায় নামতে দেখা যাচ্ছে, অনেক ওয়ার্ডের দাবিদার নেই! তাই সে টানাটানিও নেই। তুলনায় অনেক মসৃণ ভাবে এগোচ্ছে পুরভোটে জোটের দরাদরি।
লোকসভায় বামেদের আগের বারের জেতা আসনেও প্রার্থী দিতে ছাড়েনি কংগ্রেস। সিপিএমের হাতে থাকা রায়গঞ্জ ও মুর্শিদাবাদ আসন কংগ্রেস ছাড়তে না চাওয়ায় সামগ্রিক সমঝোতায় জল ঢালা হয়ে গিয়েছিল। এক বছরে রাজ্যের নদী-নালা নিয়ে অনেক দল গড়িয়ে গিয়েছে। এ বার উল্টো চিত্র। কলকাতায় যেমন। বামেদের প্রাথমিক পরিকল্পনা ছিল, কলকাতা পুরসভার ১৪৪টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৮০টা তারা রেখে বাকি কংগ্রেসের জন্য ছেড়ে দেওয়া হবে। কিন্তু গত বারের জেতা, দ্বিতীয় স্থানে থাকা এবং এ বারও লড়তে আগ্রহ আছে, এমন সব ওয়ার্ড ধরে কংগ্রেসের হিসেব ৪০-ও পেরোচ্ছে না! প্রাথমিক আলোচনায় সিপিএম নেতৃত্ব বলেছেন, এত কমে কী করে হবে! জোটের ভাগে আরও আসন নিতে হবে কংগ্রেসকে। সে সব নিয়ে কথা এগোবে পরবর্তী রাউন্ডে।
কেন এমন বিপরীত চিত্র? ওয়ার্ড স্তরে নামলে বহু ক্ষেত্রেই এই বিরোধীদের সাংগঠনিক জোর নেই। তার উপরে গত বারের লোকসভা ভোটের ফলের নিরিখে কলকাতা হোক বা জেলায় জেলায়, পুরসভাগুলির বেশির ভাগ ওয়ার্ডেই হয় তৃণমূল, নয় বিজেপি এগিয়ে। তাই বাম-কংগ্রেসের দিক থেকে ওয়ার্ডে প্রার্থী হওয়ার দাবিদার কম।
আবার এই পরিস্থিতির মধ্যেও যে সব জায়গায় বামেরা শক্তিশালী, সেখানে জোটের আলোচনার গতি বেশি মসৃণ। কিন্তু কংগ্রেসের যেখানে শক্তি একটু বেশি, সেখানে বামেদের জায়গা ছাড়তে এখনও তাদের নানা সমস্যা। মুর্শিদাবাদ জেলার সিপিএম নেতৃত্ব যেমন এই সমস্যার কথা জানিয়েছেন আলিমুদ্দিন স্ট্রিটকে। একান্ত আলোচনায় বসে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্য মুর্শিদাবাদের এক কংগ্রেস নেতাকে প্রস্তাব দিয়েছেন, ২০১৯-এর লোকসভা বা ২০১৬-র বিধানসভা ভোটকে মাপকাঠি ধরে লাভ নেই। গত বারের পুরভোটের হিসেব ধরে এগোলেই বরং সুবিধাজনক বাঁটোয়ারা হতে পারে। সেই সঙ্গেই নিজেদের শক্তি থাকা পুর-এলাকায় কংগ্রসকে আরও একটু ‘নমনীয়’ হতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
প্রদেশ কংগ্রেসের এক নেতার বক্তব্য, ‘‘সমস্যা কিছু আছে অবশ্যই। তবে জেলায় জেলায় জোটের আলোচনা ঠিক পথে এগোচ্ছে। কলকাতায় শীঘ্রই কংগ্রেস ও রাজ্য বাম নেতৃত্ব ফের কথা বলবেন।’’ সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের কথায়, ‘‘দু’পক্ষকেই নমনীয় মনোভাব নিয়ে এগোতে হবে, যাতে তৃণমূল ও বিজেপির বিরুদ্ধে সব ভোটকে এক জায়গায় আনা যায়।’’ প্রাথমিক আলোচনায় ঠিক আছে, দলীয় মুখ না থাকলে এলাকার গ্রহণযোগ্য কাউকে বেছে নেওয়া হবে। শাসক দলের বিক্ষুব্ধ অংশকেও কাছে টানার চেষ্টা হবে, প্রয়োজন মতো নাগরিক মঞ্চের ছাতাও থাকবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy