তনুশ্রী পাল
বাসের জানলার বাইরে হাত রেখে কখনও ‘সেলফি’, কখনও মোবাইলে কথাবার্তা। আবার কখনও কিছু না ভেবেই হাত বাইরে রেখেই ঘুমিয়ে পড়া। তার জেরেই কখনও দু’টি বাসের রেষারেষিতে, কখনও বা নিছকই দুর্ঘটনায় খোয়া যাচ্ছে আস্ত হাতটাই। অসময়ে প্রাণও হারাচ্ছেন অনেকে। কলকাতার ক্যাসুরিনা অ্যাভিনিউ, বর্ধমানের রায়না, মুর্শিদাবাদের ইসলামপুর ও কান্দির পরে সেই তালিকায় এ বার নাম লিখিয়ে ফেলল নদিয়ার ধুবুলিয়াও।
শনিবার সকালে নাকাশিপাড়ার যুগপুর থেকে বাসে কৃষ্ণনগর আসছিলেন তনুশ্রী পাল (২০)। যুগপুরের বাসিন্দা তনুশ্রী কৃষ্ণনগর উইমেন্স কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। এ দিন তিনি কলেজে অ্যাডমিট কার্ড নিতে আসছিলেন। বাসের ডান দিকের জানলার পাশে তিনি বসেছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, ওই তরুণী বাসের জানলার বাইরে হাত ও মাথা রেখেছিলেন। ধুবুলিয়ার ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে পিক-আপ ভ্যানের ধাক্কায় তরুণীর কনুই থেকে ডান হাত কাটা পড়ে। গুরুতর আঘাত লাগে মাথাতেও। শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই মারা যান তিনি। ওই ঘটনায় জখম হয়েছেন আরও পাঁচ জন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বাসটি পলাশি থেকে কৃষ্ণনগরের দিকে যাচ্ছিল। উল্টো দিক থেকে
দ্রুত গতিতে আসছিল একটি পিক আপ ভ্যান। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সেটি বাসের গায়ে ধাক্কা মেরে বেরিয়ে যায়। সেই সময়েই এই বিপত্তি। পুলিশ বাসটিকে আটক করলেও চালক পলাতক। পিক আপ ভ্যানটির হদিশ পাওয়া যায়নি।
ওই বাসেই ছিলেন তনুশ্রীর পরিচিত ছাত্র সৌরভ কর্মকার। এ দিন দুর্ঘটনার পরে তনুশ্রীকে তিনিই শক্তিননগর জেলা হাসপাতালে পৌঁছে দেন। সৌরভের দাবি, ‘‘তনুশ্রী বাসের ডান দিকে বসেছিল। হাতের কনুই
জানলায় থাকলেও মাথা ভিতরেই ছিল। বাসটি জোরে ঝাঁকুনি দিতেই ওর হাত এবং মাথা বাইরের দিকে বেরিয়ে যায়। তখনই এমন কাণ্ড ঘটে।”
তনুশ্রীর বাবা তাপস পাল বেথুয়াডহরিতে একটি চায়ের দোকান চালান। দুই মেয়ের মধ্যে তনুশ্রী বড়। ছোট মেয়ে একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। তাপসবাবু বলেন, ‘‘খুব কষ্ট করে মেয়ে দু’টোকে লেখাপড়া শেখাচ্ছিলাম। তনুশ্রী কলেজে অ্যাডমিট কার্ড নিতে যাচ্ছিল। কী ভাবে এ সব ঘটে গেল বুঝতে পারছি না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy