E-Paper

রোবোটিক সার্জারি এ বার সরকারি হাসপাতালেও

রোবোটিক অস্ত্রোপচার সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে হলেও, বেসরকারি হাসপাতালে সেটিকে আরও জনপ্রিয় করে তুলতে দেশীয় সংস্থার তৈরি রোবটের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা।

শান্তনু ঘোষ

শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০২৫ ০৬:৫৬

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

সরকারি হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের জন্য অপেক্ষার তালিকা দীর্ঘ। এই পরিস্থিতিতে উন্নত প্রযুক্তির অস্ত্রোপচারের লক্ষ্যে রাজ্যের সরকারি হাসপাতালে চালু হচ্ছে রোবোটিক সার্জারি। সোমবার স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, ৬ কোটি ৪৪ লক্ষ টাকা দামে এসএসকেএমে রোবট সরবরাহের বরাত পেয়েছে কেমব্রিজ়ের একটি সংস্থা। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, বছর দু’য়েক আগে থেকে রোবোটিক অস্ত্রোপচারের পরিকাঠামো তৈরি শুরু করে এসএসকেএম। রোবট কেনার জন্য দরপত্র ডাকে স্বাস্থ্য দফতরও। সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে এ দিন নির্দেশিকা জারি হয়েছে।

কিন্তু রোবোটিক অস্ত্রোপচার সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে হলেও, বেসরকারি হাসপাতালে সেটিকে আরও জনপ্রিয় করে তুলতে দেশীয় সংস্থার তৈরি রোবটের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা। তাঁরা জানাচ্ছেন, বিদেশি সংস্থার তৈরি রোবটের দাম অনেক বেশি। সেই কারণে চিকিৎসার খরচও বেশি হওয়ায় ইচ্ছা থাকলেও রোবোটিক সার্জারির সুযোগ নিতে পারেন না মধ্যবিত্ত পরিবারের রোগীরা। চিকিৎসকদের কথায়, ‘‘এ দেশের প্রেক্ষিতে রোবোটিক সার্জারিকে আরও কার্যকরী করে তুলতে গেলে নজর রাখতে হবে খরচের দিকে। যেখানে সর্বোচ্চ প্রযুক্তির পাশাপাশি চিকিৎসার খরচও থাকবে নাগালের মধ্যে।’’

ইউরোলজি, শল্য, হৃদরোগ, গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজি, স্ত্রী রোগ, বক্ষ রোগ, কিডনি এবং হেড অ্যান্ড নেক, স্তন, কোলন-ক্যানসারের জটিল অস্ত্রোপচারে রোবোটিক সার্জারির প্রয়োজনীয়তা ক্রমশ বাড়ছে।

চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, ‘দ্য ভিঞ্চি’ রোবটের ক্ষেত্রে এক-একটি যন্ত্র সর্বোচ্চ দশবার ব্যবহৃত হয়। তারপরে আবারও নতুন যন্ত্র কিনতে এবং বার্ষিক রক্ষণাবেক্ষণেও মোটা অঙ্কের টাকা খরচ রয়েছে। সব মিলিয়ে কিন্তু ‘দ্য ভিঞ্চি’ সহ অন্যান্য যে সমস্ত বিদেশি রোবট রয়েছে সেগুলিতে পরিষেবা দিতে গিয়ে চিকিৎসা খরচ কমানো সম্ভব হয়ে ওঠে না। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে কম খরচে কী ভাবে রোবোটিক সার্জারিকে মানুষের আরও কাছে পৌঁছে দেওয়া যায় তার জন্য ২০১৯ সালে প্রথম পরীক্ষামূলক রোবট প্রস্তুত করে গুরুগ্রামের সংস্থা ‘এসএস ইনোভেশন’। তাদের তৈরি প্রথম দেশীয় রোবট ‘এসএসআই মন্ত্র’ ২০২২ থেকে হাসপাতালে ব্যবহার শুরু হয়। আরও উন্নত প্রযুক্তিকে সংযুক্ত করে ওই রোবটের তৃতীয় সংস্করণও চলে এসেছে।

গত প্রায় সাড়ে তিন বছরে দেশের ৭৫টি হাসপাতালে ওই রোবট ব্যবহৃত হচ্ছে। যা বিদেশি রোবটের থেকে দামে অনেকটা কম বলেই দাবি সংস্থার আধিকারিকদের।
সম্প্রতি গুরুগ্রামে রোবোটিক অস্ত্রোপচার সংক্রান্ত একটি সম্মেলনে একটি বাসের সূচনা করা হয়। যার মধ্যেই রয়েছে রোবটিক অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থা। সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান সুধীর শ্রীবাস্তব বলেন, ‘‘প্রয়োজন মতো এই রোবটে পাঁচটি ‘হাত’ এক সঙ্গে কাজ করতে পারে। যার সাহায্যে হৃদরোগের জটিল অস্ত্রোপচারও সহজে করা সম্ভব।’’

এ রাজ্যেরও কয়েকটি সরকারি হাসপাতালের সঙ্গেও ওই সংস্থার কথা চলছে বলে জানা গিয়েছে। পাশাপাশি, দেশীয় এই সংস্থাকে রোবটের মাধ্যমে টেলিসার্জারির অনুমোদন দিয়েছে ‘সেন্ট্রাল ড্রাগ স্ট্যান্টার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন’ (সিডিএসসিও)। আগামী দিনে এমন বাসের সংখ্যা আরও বাড়বে বলেও জানানো হয়েছে। সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন রোবটিক সার্জারির জনক ফ্রেডেরিক মোল, পদার্থবিদ মিশিয়ো কাকু, পরিবেশকর্মী সোনম ওয়াংচুক সহ অন্যান্যরা।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Robotic Surgery Robotic Treatment Modern Technology

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy