Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Mohan Bhagwat

জাতপাত-নির্ভরতা নিয়ে বিতর্ক বঙ্গের বিজেপিতে

দরজায় কড়া নাড়ছে লোকসভা নির্বাচন। সঙ্ঘ প্রকাশ্যে বিজেপির হয়ে রাজনৈতিক প্রচার না করলেও রাজনৈতিক শিবিরের মতে, বিজেপির সুফল তোলার জন্য উর্বর জমি তৈরির দায়িত্বে থাকে সঙ্ঘ-ই।

Mohan Bhagwat.

সঙ্ঘ প্রধান মোহনরাও ভাগবত। —ফাইল চিত্র।

বিপ্রর্ষি চট্টোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৫:৩৭
Share: Save:

পুজোর আগে ফের রাজ্যে আসতে চলেছেন সঙ্ঘ প্রধান মোহনরাও ভাগবত। আগামী ২০২৫ সালে শতবর্ষ পূর্ণ করবে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ। তাকে সামনে রেখে দেশ জুড়ে সামাজিক কর্মসূচি বাড়ানোর লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে সঙ্ঘ। তাদের বিশেষ নজর রয়েছে বাংলায়। সেই কথা মাথায় রেখে গত অগস্ট মাসের পরে ফের অক্টোবরে বঙ্গ সফরে আসতে পারেন ভাগবত।

আগামী ১৪-১৬ সেপ্টেম্বর পুণেয় সঙ্ঘের সর্বভারতীয় সমন্বয় বৈঠক বসতে চলেছে। ওই বৈঠকের নির্যাস নিয়েই বঙ্গ সফরে আসার কথা ভাগবতের। সব ঠিক থাকলে ৪ অক্টোবর কলকাতায় আসতে চলেছেন তিনি। সাংগঠনিক বৈঠক ছাড়াও বেলুড় মঠে ‘স্বস্তিকা’ পত্রিকার ৭৫ বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারেন তিনি।

কিন্তু এই জাতপাতভিত্তিক রাজনীতি, অতিরিক্ত সঙ্ঘ নির্ভরতা বিজেপিকে আদৌ সুফল দিতে পারছে না বলে মনে করছে বিজেপির একাংশ। যার প্রতিফলন দেখা গিয়েছে সম্প্রতি ধূপগুড়ি উপ-নির্বাচনে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে সঙ্ঘ ঘনিষ্ঠ এক বর্ষীয়ান বিজেপি নেতা বলেন, “দলের কৌশলেই ভুল আছে। উত্তরবঙ্গ-দক্ষিণবঙ্গ, জনজাতি-সাঁওতালি, রাজবংশী-কামতাপুরি, গোর্খা উপজাতি-গোর্খা এই সমীকরণ দিয়ে সব সময় নির্বাচন জেতা যায় না। বরং এই সমীকরণের অত্যধিক ব্যবহারের ফলে বিষয়টা বুমেরাং হয়ে দাঁড়াচ্ছে। বিজেপির সাবেক ভোট ব্যাঙ্ক হল, উদ্বাস্তু হিন্দু। কিন্তু তাদের উপেক্ষা করে প্রতিটি পদক্ষেপে যদি জাতপাতের অঙ্ক কষে নেওয়া হয়, তা হলে এই সাবেক ভোট ব্যাঙ্ক বিজেপির থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে। ইতিমধ্যে তারা নিচ্ছেও। তাই ২০১৯-এর সাফল্য ২০২১-এ কিছুটা ফিকে হয়েছিল। এখন তো রং চটে যাচ্ছে।”

পাশাপাশি দলের পুরনো নেতারা প্রতিদিন বলছেন, বাংলার সংস্কৃতির সঙ্গে সম্পৃক্ত কোনও কর্মসূচি নিতে না পারলে এই রাজ্যে বিজেপির হারানো জমি ফিরে পাওয়া শক্ত। বরং যেটুকু জমি ছিল, সেটাও ধীরে ধীরে ক্ষয়ে যাবে। বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে প্রতিটি উপনির্বাচনে সেই ইঙ্গিত মিলেছে বলে ওই অংশের মত। এমনকি রাজ্যসভায় প্রথম বারের জন্য প্রতিনিধি পাঠানোর সুযোগ পেয়ে তারা গ্রেটার কোচবিহারের নেতা অনন্ত মহারাজকে পাঠিয়েছে। রাজ্যসভায় শপথ নেওয়ার পরেই তাঁর কিছু মন্তব্য নিয়েও বিতর্ক হয়েছে। সম্প্রতি সুভাষচন্দ্র বসু পরিবারের চন্দ্র বসুও বাংলার মানুষের কাছে পৌঁছতে তাঁর দেওয়া পরামর্শ দল শোনেনি— এই অভিযোগ তুলে দল ছেড়েছেন।

দরজায় কড়া নাড়ছে লোকসভা নির্বাচন। সঙ্ঘ প্রকাশ্যে বিজেপির হয়ে রাজনৈতিক প্রচার না করলেও রাজনৈতিক শিবিরের মতে, বিজেপির সুফল তোলার জন্য উর্বর জমি তৈরির দায়িত্বে থাকে সঙ্ঘ-ই। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে শাসক দলের একাংশের সন্ত্রাসে বীতশ্রদ্ধ মানুষকে বিজেপির ছাতার তলায় ঐক্যবদ্ধ করার বিষয়ে বিশেষ নজর রয়েছে সঙ্ঘের। তাই প্রশিক্ষণ শিবিরে গ্রামবাংলায় বেশি করে সামাজিক প্রভাব তৈরির পথ বাতলে দেওয়া হয়েছে। সূত্রের খবর, গ্রামের মানুষকে অর্থনৈতিক ভাবে সাবলম্বী করার কৌশল নেওয়া হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mohan Bhagwat RSS BJP West Bengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE