দেশের কয়েকটি রাজ্যে বাংলাভাষীদের বাংলাদেশি বলে চিহ্নিত করার অভিযোগ নিয়ে এ বার পথে নামছে তৃণমূল কংগ্রেস। এই প্রশ্নে লাগাতার প্রতিবাদ কর্মসূচির পাশাপাশি এ রাজ্যের নিগৃহীতদের এলাকায় বিজেপি নেতাদের বাড়ির সামনে ধর্নার সিদ্ধান্ত নিল রাজ্যের শাসক দল। এ ব্যাপারে দলের লিখিত নির্দেশ পাঠানো শুরু হয়েছে দলের সাংগঠনিক জেলা কমিটিগুলির কাছে। এ ছাড়াও, ৯ অগস্ট ‘ইংরেজ ভারত ছাড়ো’ আন্দোলনের স্মরণে এ বার সারা রাজ্যে ‘বিজেপি ভারত ছাড়ো’ নামে কর্মসূচি পালনের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোমবারই ‘আরও এক বার ভাষা আন্দোলন’-এর হুঙ্কার দিয়েছিলেন। ধর্মতলায় ২১শে জুলাইয়ের সভামঞ্চ থেকে ২৭ জুলাই রাজ্যব্যাপী এই কর্মসূচি শুরু করার নির্দেশও দিয়েছিলেন দলের সর্ব স্তরের নেতা-কর্মীদের। দলনেত্রীর সেই ঘোষণা মতোই বিস্তারিত কর্মসূচি জানিয়ে তৃণমূলের জেলা নেতৃত্বের কাছে মঙ্গলবার থেকে নির্দেশিকা পৌঁছতে শুরু করেছে। দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী ওই নির্দেশে বলেছেন, ‘বাংলায় কথা বলার অপরাধে অন্য রাজ্যে কেউ গ্রেফতার হলে বা কাউকে জোর করে বাংলাদেশে পাঠানো হলে সংশ্লিষ্ট (এ রাজ্যের) নেতাদের বাড়ির সামনে ধর্নায় বসতে হবে’।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালে ২১শে জুলাইয়ের সভা থেকেই ১০০ দিনের বকেয়া বা আবাস প্রকল্পের প্রাপ্য আদায়ে এই রকম কর্মসূচির কথা বলেছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বকেয়া প্রাপ্য আদায়ে কেন্দ্রের শাসক বিজেপির স্থানীয় নেতাদের বাড়ির সামনে বিক্ষোভের সেই কর্মসূচি অবশ্য নাকচ করে দিয়েছিলেন মমতাই। এ বার বাংলাভাষা ও দেশের নাগরিক হিসেবে বাঙালির সম্মান ও অধিকার রক্ষার প্রশ্নে প্রায় সেই রকম কর্মসূচির সিদ্ধান্ত নিয়েছে তৃণমূল। দলের রাজ্য সভাপতির পাঠানো নির্দেশে বলা হয়েছে, দলের শাখা সংগঠনগুলিকে নিয়ে পর্যায়ক্রমে ২৭ জুলাইয়ের পর থেকে প্রতি শনি ও রবিবার ধর্মতলায় গাঁধীমূর্তির নীচে ধর্না অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে সমাজের অন্য অংশের প্রতিনিধিরাও থাকবেন।
বাংলা ভাষাকে ঘিরে দলের এই সব কর্মসূচিকে ব্যাপক ভাবে জনসংযোগের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছে তৃণমূল। অন্য দিকে, আগামী অগস্ট মাসে রাজ্য বিধানসভার অধিবেশন হতে পারে। সেখানেও বাংলা ভাষা নিয়ে এই চাপানউতোরের আঁচ পড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। রাজ্যের শাসক দলের এইকর্মসূচির স্লোগান হিসেবে নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে— ‘তৃণমূলের দর্শন/ বাম-বিজেপির বিসর্জন।’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)