সব্যসাচী দত্ত। ফাইল চিত্র
মেয়রের বিরুদ্ধে শাসক দলেরই আনা অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে বৈঠক তো হবেই। তবে তার আগে সৌজন্যের আবহে বুধবার বিধাননগর পুরভবনে বৈঠক হল কাউন্সিলরদের। সকলের সঙ্গে সকলেরই দেখা হল। গত কয়েক দিনের থেকে ছবিটা ছিল আলাদা। আপাতদৃষ্টিতে অন্তত পারস্পরিক সৌজন্য দেখিয়েছেন সকলেই। মূলত পুর পরিষেবা কী অবস্থায় রয়েছে এবং কী ভাবে দ্রুত সেই সব কাজ শেষ করা যায়, তা নিয়েই আলোচনা হয়েছে বলে পুরসভা সূত্রের খবর। সংশ্লিষ্ট মহলের ব্যাখ্যা, সৌজন্যের নেপথ্যে আসলে জল মাপামাপিই হয়েছে।
তবে নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক কাউন্সিলরদের একাংশের কথায়, বৈঠকের এমন ছবি আগে দেখা গেলে এই সঙ্কট দেখা দিত না। কাউন্সিলরদের অন্য অংশ জানান, মেয়র সব্যসাচী দত্তের আগের সেই মেজাজটা এ দিন দেখা যায়নি। বরং ডেপুটি মেয়র তাপস চট্টোপাধ্যায়কে অনেক সক্রিয় হতে দেখা গিয়েছে। যদিও এই বিষয়ে সরকারি ভাবে কেউ কোনও মন্তব্য করতে চাননি। কাউন্সিলরদের একটি অংশের কথায়, মেয়রের আচরণে কোনও পরিবর্তন আসেনি। বরং অনেকটাই ‘রিল্যাক্সড’ বা চাপমুক্ত দেখিয়েছে তাঁকে। তবে এটা ঠিক যে, আগের তুলনায় ডেপুটি মেয়রকে এ দিনের বৈঠকে অনেক বেশি চাঙ্গা দেখিয়েছে।
পুরসভা সূত্রের খবর, এ দিন পরিষেবা নিয়ে আলোচনা করেন সকলে। মেয়র জানান, ৬ নম্বর ওয়ার্ডে কিছু নির্মাণকাজ নিয়ে অভিযোগ উঠেছিল। জলাশয় ভরাটেরও অভিযোগ আসে। নোটিস পাঠিয়েছে পুরসভা। কিন্তু তার পরেও দু’টি ক্ষেত্রে নির্মাণকাজ চলছে। অনাস্থা প্রস্তাবে স্বাক্ষর করা এক মেয়র-পারিষদ তা নিয়ে সরব হন। এই নিয়ে কথার পিঠে কথা চলতে থাকে। অন্য এক কাউন্সিলরও বেআইনি নির্মাণ নিয়ে তাঁর ‘তিক্ত’ অভিজ্ঞতার বলেন। কয়েকটি প্রকল্প নিয়ে এক কাউন্সিলর এবং এক মেয়র-পারিষদ কথার পৃষ্ঠে পাল্টা কথায় জড়িয়ে পড়েন। তবে সেটাকে আবার বাদানুবাদ বলতে রাজি নন কাউন্সিলরদের একাংশ।
এক কাউন্সিলর জানান, অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে বৈঠকের আগে এ দিন যেন দু’পক্ষই পরস্পরের শক্তি বোঝার চেষ্টা করছিল। তবে এ দিন আলোচনা খুব ভাল হয়েছে। মেয়র-বিরোধীদের একটি অংশের বক্তব্য, ৩৫ জন কাউন্সিলর অনাস্থা প্রস্তাবে সই করেছেন। ভোটাভুটি হলেও ফল তাঁদের অনুকূলেই থাকবে। মেয়রের অনুগামীরা অবশ্য বলছেন, শেষ পর্যন্ত কী হবে, সময়ই বলবে।
বৈঠকের পরে ডেপুটি মেয়রকে ফোন করা হলেও তাঁর প্রতিক্রিয়া মেলেনি। চেয়ারপার্সন কৃষ্ণা চক্রবর্তী জানান, রাস্তা, জল-সহ পরিষেবার বিভিন্ন দিক নিয়ে এ দিন আলোচনা হয়েছে। সব্যসাচী জানান, বেআইনি নির্মাণ নিয়ে পুরসভা নোটিস পাঠানোর পরেও কাজ হচ্ছে না। সেই বিষয়ে পদক্ষেপ করতে বলা হয়েছে। অনাস্থা প্রস্তাব প্রসঙ্গে তিনি জানান, মঙ্গলবার তিনি নোটিস পেয়েছেন। ‘‘আইনে যা আছে, তা-ই হবে। পরিস্থিতি যা-ই হোক, তার মুখোমুখি হতে আমি প্রস্তুত,’’ বলেন সব্যসাচী।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy