Advertisement
১৩ অক্টোবর ২০২৪
Sagardighi

তৃণমূলের সমর্থন পেয়েছি! সাগরদিঘির বিজয়ী বাইরন বিধানসভায় এসে খুঁচিয়ে দিয়ে গেলেন শাসকের ক্ষত

শনিবার বিধানসভায় স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে এসেছিলেন কংগ্রেসের এই বিধায়ক। তাঁর জয় ও দলের পরাজয় নিয়ে অনেক অঙ্ক কষছে শাসকদল।

image of Congress MLA Bairon Biswas

বিধানসভায় এসে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করেন বাইরন। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০২৩ ১৮:২৮
Share: Save:

সাগরদিঘি উপনির্বাচনে তাঁর জয় রাজ্য রাজনীতিতে শোরগোল ফেলে দিয়েছে। তাঁর জয়ের ফলে নতুন করে ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে শাসকদল তৃণমূল। তিনি সাগরদিঘির সদ্য জয়ী বিধায়ক কংগ্রেসের বাইরন বিশ্বাস। শনিবার বিধানসভায় স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে এসেছিলেন কংগ্রেসের এই বিধায়ক। তাঁর জয় ও দলের পরাজয় নিয়ে অনেক অঙ্ক কষছে শাসকদল। কিন্তু নিজের জয় প্রসঙ্গে খোলাখুলি মন্তব্য করেছেন বাইরন। তিনি বলেন, “আমি কংগ্রেসের প্রার্থী ছিলাম। বামফ্রন্ট আমাকে সমর্থন করেছিল। তবে তৃণমূল সমর্থন করেছে। জনগণও সমর্থন করেছে।” তিনি আরও বলেন, “বলা হচ্ছে আমরা নাকি বিজেপির সমর্থন পেয়েছি, বিজেপির থেকে বেশি আমরা তৃণমূলের সমর্থন পেয়েছি। তৃণমূল খুব ভালো সাপোর্ট দিয়েছে আমাদের।”

কংগ্রেসের একমাত্র বিধায়ক বিধানসভায় কী করবেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আমি একজন বিধায়ক হতেই পারি। আমর প্রথম কাজ হবে আমার এলাকার মানুষের দাবি নিয়ে সরব হওয়া। আর ১ থেকে ১০০-তে নিয়ে যাওয়ার কাজ করবে আমার দল।” তবে বাইরনের এমন মন্তব্যকে নস্যাৎ করে দিয়েছেন লালগোলার তৃণমূল বিধায়ক মহম্মদ আলি। তিনি বলেন, “বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেসের প্রার্থী বাইরন বিজেপির সমর্থন নিয়ে জিতেছেন। জেতার পর তৃণমূলের সমর্থনে জিতেছেন বলে দাবি করে এক দিকে অনৈতিক এবং নীতিহীন জোটকে যেমন তিনি নিজের গুরুত্ব বোঝাতে চাইছেন, তেমনই জনমানসে বিভ্রান্তি ছড়াতে চাইছেন। সাগরদিঘিতে তৃণমূল নিজেদের সাংগঠনিক জোরে নিজের ভোট ধরে রাখতে সফল হয়েছে। তৃণমূলের ভোট কারও কাছে চলে যায়নি। তা অটুট রয়েছে।”

শনিবার কংগ্রেসের দুই প্রাক্তন বিধায়ক অসিত মিত্র ও নেপাল মাহাতোর সঙ্গে বিধানসভায় আসেন তিনি। সেখানে এসে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করেন বাইরন। নিজের বিধায়ক পদে শপথগ্রহণ প্রসঙ্গে তিনি জানান, স্পিকার তাঁকে জানিয়েছেন রাজভবন থেকে অনুমতি না আসায় এখনও শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান করা যায়নি। তবে রাজভবন থেকে ইতিবাচক বার্তা এলেই শপথগ্রহণের জন্য বাইরনকে তলব করবে বিধানসভার সচিবালয়। বিধানসভার পর প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর সঙ্গে রাজভবন যান বাইরন। সেখানে বাইরনের শপথগ্রহণ নিয়ে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে উদ্যোগী হতে বলেন অধীর। বহরমপুরের সাংসদ পরে দাবি করেন, বাইরনের শপথগ্রহণ নিয়ে তাঁদের আশ্বাস দিয়েছেন রাজ্যপাল।

অন্য দিকে, তৃণমূল প্রার্থী দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরাজয়ের পর থেকেই তৃণমূল শিবির অভিযোগ করে সাগরদিঘি উপনির্বাচনে বিরোধী কংগ্রেস, বামফ্রন্ট এবং বিজেপি একযোগে জোট করে শাসকদলের প্রার্থীকে হারিয়েছেন। একই অভিযোগ শোনা গিয়েছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথাতেও। কিন্তু বিধায়ক বাইরন সেই সংক্রান্ত যাবতীয় অভিযোগ খণ্ডন করে পাল্টা তৃণমূলের সমর্থনে জয়ের কথা বললেন তিনি। সাগরদিঘির হারের কারণ জানতে একটি কমিটি গড়ে রিপোর্ট জমা দিতে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। গত সোমবার বিধানসভায় নিজের ঘরে মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর ঘরে বিপর্যয় মোকাবিলা মন্ত্রী জাভেদ খান, সেচ প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন, বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী আখরুজ্জামান ও সংখ্যালঘু প্রতিমন্ত্রী গোলাম রব্বানীকে ডেকে এই দায়িত্ব দেন। ইতিমধ্যে সেই কমিটি বৃহস্পতি ও শুক্রবার বৈঠক করে হারের কারণ প্রসঙ্গে ২৫টি কারণ খুঁজে বার করেছেন। সিদ্দিকুল্লাকে এই সংক্রান্ত বিষয়ে রিপোর্ট তৈরির দায়িত্ব দিয়েছেন কমিটির বাকি সদস্যেরা। আগামী সপ্তাহে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সেই রিপোর্ট জমা দেবেন সিদ্দিকুল্লা।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE