বর্তমান ও প্রাক্তন মিলিয়ে চার আইপিএস অফিসারকে তো তলব করা হয়েছেই। সারদা মামলার তথ্য গায়েবের ঘটনায় সিবিআইয়ের আতসকাচের নীচে এখন বিধাননগর কমিশনারেটের চার ইনস্পেক্টরও।
২০১৩ সালে সারদা গোষ্ঠীর কর্ণধার সুদীপ্ত সেন এবং অন্যতম ডিরেক্টর দেবযানী মুখোপাধ্যায়কে গ্রেফতারের পরে রাজ্য সরকার যে-সিট (স্পেশ্যাল ইনভেস্টিগেশন টিম) বা বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করে তদন্ত শুরু করেছিল, ওই চার জন ইনস্পেক্টর সেই দলে ছিলেন। সিবিআই সূত্রে খবর, সুদীপ্ত ও দেবযানীকে সারদার সল্টলেক ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুরের অফিসে নিয়ে গিয়ে তল্লাশি অভিযান চালিয়েছিলেন ওই চার অফিসার।
তদন্তকারীদের আরও দাবি, ওই সব অফিস থেকে গুরুত্বপূর্ণ নথি এবং শাসক দলের নেতাদের সঙ্গে সুদীপ্তের ছবি, নগদ টাকার ভাউচার-সহ কিছু পেন ড্রাইভ উদ্ধার করেন ওই ইনস্পেক্টরেরা। সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, জেরায় সুদীপ্ত ও দেবযানী ওই অফিসারদের নামও বলেছেন। সারদার কোন অফিসে, কোথায় গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র রয়েছে, প্রায় প্রতিদিনই আলিপুর সংশোধনাগারে গিয়ে সুদীপ্ত ও দেবযানীর কাছ থেকে তা জেনে আসতেন এক অফিসার।
আরও পড়ুন: নারদ মামলায় জেরা মুকুলকে
সিবিআই-কর্তারা জানাচ্ছেন, সুদীপ্ত-দেবযানীর বয়ান অনুযায়ী সারদা সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ সব তথ্যই ছিল ওই চার অফিসারের কাছে। দেবযানী মুলত সারদার ব্যাঙ্ক ও আর্থিক লেনদেনের বিষয়টি দেখভাল করতেন। সল্টলেকে সারদার মিডল্যান্ড পার্কের অফিসে শুধু শাসক দলের নেতাদের সঙ্গে সুদীপ্তের ছবির আর্কইভ নয়, সেই অফিসের সিসি ক্যামেরার ফুটেজও মজুত ছিল। শাসক দলের নেতাদের মিডল্যান্ড পার্কের অফিসে আনাগোনার ফুটেজও ছিল সেখানে। অভিযোগ, সংশ্লিষ্ট চার ইনস্পেক্টরের কাছে বাজেয়াপ্ত করা ওই ফুটেজ ছিল।
সিবিআই-কর্তাদের দাবি, ওই চার ইনস্পেক্টর ওই সব গুরুত্বপূর্ণ নথি ও ছবি বাজেয়াপ্ত করার পরে সিটের এক ডেপুটি কমিশনারের কাছে জমা দিয়েছিলেন। সেই ডেপুটি কমিশনার পরে গুরুত্বপূর্ণ নথিগুলো আবার ওই চার ইনস্পেক্টরের হেফাজতেই রেখে দিয়েছিলেন। অভিযোগ, পরে ওই সব নথি, ফুটেজ ও ছবির আর্কাইভ সিবিআইয়ের হাতে দেওয়া হয়নি।
আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে জট কাটল স্টুডিওপাড়ায়, শুটিং শুরুর ঘোষণায় স্বস্তি সব মহলেই
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সিবিআই সারদা-কাণ্ডের তদন্তের দায়িত্ব নেওয়ার পরে পরেই ওই চার অফিসারকে কলকাতা থেকে বদলি করে দেওয়া হয়। এক জনকে পাঠানো দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পুলিশে। পরে তাঁকে উত্তরবঙ্গে বদলি করা হয়। অন্য এক ইনস্পেক্টরকে পাঠানো হয় মুর্শিদাবাদ জেলায়। এক ইনস্পেক্টর পরে ডিএসপি-পদে উন্নীত হয়ে এখন উত্তরবঙ্গে রয়েছেন। চতুর্থ ইনস্পেক্টর অবসর নিয়েছেন। ওই চার জনের মধ্যে আপাতত এক জনকে সিবিআইয়ের দফতরে হাজির হওয়ার জন্য নোটিস পাঠানো হয়েছে।
সিবিআইয়ের খবর, প্রাথমিক পর্যায়ে চার আইপিএস অফিসারকে তলব করা হলেও এখনও পর্যন্ত তাঁদের কেউই সিবিআইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। তা হলে সিবিআই এ বার কী করবে? এক সিবিআই-কর্তার কথায়, সুদীপ্ত ও দেবযানীর লিখিত বয়ান ও ভিডিয়ো রেকর্ডিং সুপ্রিম কোর্টে জমা দিয়ে ওই চার আইপিএস অফিসার এবং চার ইনস্পেক্টরের বিষয়ে কড়া আইনি পদক্ষেপের আবেদন জানানো হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy