এনজেপি স্টেশন
পাহাড়ের পর্যটকদের বাড়ি ফেরাতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুরোধে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল শুক্রবার রাতে একটি বিশেষ ট্রেন চালায়। আজ, শনিবারও বিশেষ ট্রেন দেওয়া হতে পারে। এনজেপির স্টেশন ডিরেক্টর পার্থসারথি শীল বলেন, ‘‘অতিরিক্ত কামরা রয়েছে। যখন যেমন প্রয়োজন, ব্যবস্থা করা হবে।’’ রেলের হিসেবে গত সপ্তাহে দার্জিলিং, সিকিম, ডুয়ার্স মিলিয়ে প্রায় ২৫ হাজার যাত্রী গিয়েছেন উত্তরবঙ্গে। কলকাতায় উত্তরবঙ্গের ট্রেনের বেশ কিছু টিকিট দু’দিনই অল্প অল্প করে বাতিল হয়েছে। তবে যাঁরা কলকাতার দিকে ফিরতে চান, তাঁরা শুক্রবার ভোরে পাহাড় থেকে নেমে দিনভর ভোগান্তির মুখে পড়েন। প্ল্যাটফর্মে পলিথিন বিছিয়েই বসে থেকেছেন অনেকে। জল-বিস্কুট-আশ্বাসেই সন্তুষ্ট থাকতে হল তাঁদের।
বাসস্ট্যান্ড
শুক্রবার ভোর ৪টার মধ্যে পর্যটকদের ভিড় উপচে পড়ে তেনজিং নোরগে বাস টার্মিনাসে। সফর কাটছাঁট করে কেউ কলকাতা ফিরতে চান, কেউ বা অন্য গন্তব্যে গাড়ির খোঁজে নামেন। তিলধারণের জায়গা ছিল না বাসস্ট্যান্ডে। ব্যাগ, ট্রলির ছড়াছড়ি চারিদিকে। কাউন্টারের সামনে শিশুদের নিয়ে গরমে নাজেহাল পর্যটকদের একাংশ। এর মধ্যে সিকিম পরিবহণ নিগম বন্ধ থাকায় বাস বন্ধ রাখায় সমস্যা আরও বাড়ে। পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব গিয়ে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক করেন। তার কিছু পরেই কলকাতাগামী, দার্জিলিংগামী বাস ছাড়া শুরু হয়। পরে মন্ত্রী ও পরিবহণ সচিবের উদ্যোগে সিকিমগামী বাসও চালু হয়। এনবিএসটিসি-র অফিসারদের কর্মীদেরও অনেকেরই নাওয়া খাওয়ার সময় মেলেনি এ দিন।
বিমানবন্দর
দার্জিলিঙের পর্যটকদের জন্য আজ, শনিবার বাগডোগরা থেকে এয়ার ইন্ডিয়া ও স্পাইসজেট দু’টি অতিরিক্ত উড়ান চালাবে। এয়ার ইন্ডিয়ার এয়ারবাস ৩১৯ কলকাতা থেকে ২টোয় ছেড়ে ৩টেয় বাগডোগরা পৌঁছবে। ৮টি বিজনেস এবং ১১৪টি ইকনমি আসনের বিমানটি কলকাতায় ফিরবে বিকেল ৪টে ৪০ মিনিট নাগাদ। এ দিন ৩ হাজার ৯০৬ জন যাত্রী বাগডোগরা থেকে অন্য গন্তব্যে উড়ে গিয়েছেন, যাঁদের মধ্যে সিংহভাগই পর্যটক। আর বাগডোগরায় এসেছেন ৩ হাজার ৮০১ জন যাত্রী। যাঁদের অনেকেই বিকেল-সন্ধ্যা পর্যন্ত বিমানবন্দরেই অপেক্ষা করেছেন। টার্মিনাল ভবনের মেঝেতে বসে বাচ্চাদের লুডো খেলতেও দেখা গিয়েছে। বিমানবন্দরের প্রতিটি রেস্তোরাঁয় বেশি করে দুধ, কেক ও বিস্কুট রাখার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবুও চাহিদা কুলোনো যায়নি বলে দাবি।
দিনভর দার্জিলিং
• সকাল ৭টা ১৫: মুখ্যমন্ত্রী দার্জিলিঙে হাঁটতে বেরোলেন। সিংমারিতে মোর্চার পার্টি অফিসের সামনে দিয়েও গেলেন। ম্যালে পর্যটকদের আশ্বাস।
• ৮টা ৪৫: রিচমন্ড হিলে ঢুকলেন। হেল্পলাইন, শিলিগুড়ি থেকে আসা বাসের খোঁজ নিলেন।
• ১০টা: মুখ্যসচিব, ডিজি, স্বরাষ্ট্রসচিবকে নিয়ে বৈঠক। বৈঠক শেষে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা, পাহাড়ে সমঝোতার লাইন আর নয়। এ বার আইনের পথে চলবে রাজ্য।
• ১০টা ৪৫: বেরোলেন দার্জিলিং হাসপাতালে আহত পুলিশদের দেখতে।
• ১১টা ২০: ভানু ভবনের সামনে পর্যটকদের দেখে নেমে পড়লেন। হ্যান্ডমাইক হাতে অভয় দিলেন, সব পর্যটকের নিরাপত্তা সুরক্ষিত না করে পাহাড় ছাড়ব না।
• বেলা ১২টা: মুখ্যমন্ত্রীর শুক্রবার কলকাতা ফেরার সিদ্ধান্ত বাতিল।
• ১টা ৩০: পাতলেবাসের বাড়ি থেকে গুরুঙ্গের অভিযোগ, তৃণমূল হামলা চালিয়েছে। রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন দরকার।
• বিকেল ৪টে: জাভেদ শামিম, অজয় নন্দ, সিদ্ধিনাথ গুপ্ত পৌঁছতে ফের বৈঠক। হামলায় অভিযুক্তদের ধরতে জোরদার তল্লাশি শুরু।
• ৫টা: কিছু দোকান খুলল।
• ৬টা: মুখ্যমন্ত্রী আরও বেশি বাস পাঠানো, হেল্পলাইন ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখার নির্দেশ দিলেন।