প্রতীকী ছবি।
তিনি মাদ্রাসায় বাংলা পড়ান। এলাকার অনুষ্ঠানে সঙ্গীতশিল্পীর তালিকায় তাঁর নাম থাকে এক নম্বরে। তিনি দাপটের সঙ্গেই জেলা পরিষদ সদস্যের দায়িত্বও সামলান।
অভিযোগ, বুধবার দুপুরে সেই মাদ্রাসার অনুষ্ঠানেই তাঁর উদ্বোধনী সঙ্গীত পরিবেশনের কথা ছিল। কিন্তু তিনি একটার পর একটা গান গেয়েই চলেন। তিন নম্বর গান চলাকালীন মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের তরফে তাঁকে অনুরোধ করা হয়, ‘‘অনুষ্ঠানের দেরি হয়ে যাচ্ছে। আপনি না হয়ে পরে আরও গান গাইবেন!’’ এমন ‘অপমান’ সহ্য হয়নি দিদিমণির। মাইক্রোফোন, চেয়ার তিনি ছুড়ে ফেলেন। মঞ্চে রাখা পড়ুয়াদের পুরস্কারও ফেলে দেন। পরে তাঁর অনুগামীরা এসে মাদ্রাসায় তাণ্ডব চালায় বলেও অভিযোগ।
আচমকা এমন ঘটনায় পড়ুয়া, অভিভাবক ও স্কুল কর্তৃপক্ষ রীতিমতো বিড়ম্বনায় পড়েন। অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিতদের অনেকেই এ দিন বলেছেন, ‘‘শুনেছিলাম, দিদিমণি বেশ কড়া মেজাজের। ঠিক মতো লেখাপড়া না করলে পড়ুয়াদের ধমক দেন। কিন্তু তিনি যে এমনটা করতে পারেন তা ভাবতেই পারছি না!’’
মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক মানিক বিশ্বাস বলেন, ‘‘ওই শিক্ষিকা যা করলেন তা অত্যন্ত লজ্জাজনক। গোটা অনুষ্ঠানটাই পণ্ড হয়ে গিয়েছে। পড়ুয়াদের পুরস্কারও দিতে পারিনি। জেলা স্কুল পরিদর্শকের কাছে লিখিত অভিযোগ জানাব।’’ জেলার স্কুল পরিদর্শক পূরবী দে বিশ্বাস বলেন, ‘‘এর আগেও ওই শিক্ষিকা এমনই আচরণ করেছিলেন। সে বারে তিনি ক্ষমা চেয়ে নেন। স্কুলের তরফে লিখিত অভিযোগ আসেনি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
মাদ্রাসার ওই শিক্ষিকা, জেলা পরিষদের তৃণমূলের সদস্য রাফিনা ইয়াসমিনের দাবি, ‘‘অনুষ্ঠান শুরু হয় দেরিতে। আমি পড়ুয়াদের সঙ্গেই গান গাইছিলাম। কিন্তু মাদ্রাসা পরিচালন সমিতির সভাপতি মঞ্চে উঠে অত্যন্ত অপমানজনক ভাবে গান গাইতে নিষেধ করেন। মাইকের তারও খুলে দেন। তখনই আমি রেগে গিয়ে মাইক্রোফোনটা ছুড়ে দিই। কিন্তু কারও লাগেনি। ’’ যা শুনে পরিচালন সমিতির সভাপতি তৃণমূলের তাজমল হকের অভিযোগ, ‘‘ওই শিক্ষিকা যে ভাবে মাইক্রোফোন ছুড়েছিলেন, সরে না গেলে তো আমার মাথাটাই ফেটে যেত। আর উনি যা করেছেন তা আমি একা নই, সকলেই দেখেছেন। এর আগেও তিনি স্কুলের এক প্রধানশিক্ষক ও দু’জন পার্শ্ব শিক্ষিকাকে মারধর করেন। ’’
এ দিন মুর্শিদাবাদের লালগোলা মানিকচক হাই মাদ্রাসায় ছিল দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের বিদায় সংবর্ধনা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান। সেখানে আমন্ত্রিতও ছিলেন বহু লোকজন। শুরুতেই এমন কাণ্ডের পরে অনুষ্ঠান আর এগোয়নি। পরে লালগোলা থানার পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy