Advertisement
০২ মে ২০২৪
School Uniforms

বছর গড়িয়েও ঘোর জট স্কুল পোশাকে

কলকাতার বালিগঞ্জের জগবন্ধু ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষক অভিজিৎ ভট্টাচার্য জানাচ্ছেন, তাঁদের পড়ুয়াদের পোশাক এখনও আসেনি।

school uniforms

—প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৫:৫১
Share: Save:

বছর শেষ হতে চলল। চলতি বছরের স্কুল পোশাক এখনও এল না বহু স্কুলে। স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের অভিযোগ, অনেক পড়ুয়ারই গত বারের পোশাক ছিঁড়েখুঁড়ে একসা। এ বছর যে সামান্য সংখ্যক স্কুল পোশাক পেয়েছে সেই সব স্কুলের প্রধান শিক্ষকেরা জানাচ্ছেন, অনেকেরই পোশাক মাপে হচ্ছে না।

কলকাতার বালিগঞ্জের জগবন্ধু ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষক অভিজিৎ ভট্টাচার্য জানাচ্ছেন, তাঁদের পড়ুয়াদের পোশাক এখনও আসেনি। গত বার যে পোশাক এসেছিল তার মান এতটাই খারাপ ছিল যে, অনেকেরই জামা প্যান্টের সেলাই ছিঁড়ে গেছে। অভিভাবকেরা অভিযোগ করছেন, ওই পোশাক পরিয়ে বাচ্চাদের কী ভাবে স্কুলে পাঠাবেন? অভিজিৎ বলেন, ‘‘গতবার পোশাকের মাপ নিয়েও খুব সমস্যা হয়। সেল্ফহেল্প গ্রুপ সবার মাপ নেয়নি। কিছু নির্দিষ্ট মাপের পোশাক দিয়ে গেছে। ফলে অনেকেরই গায়ে আঁটছে না।’’

বাগবাজারের হরনাথ হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক কাজী মাসুম আখতারের অভিযোগ, তাঁদের স্কুলের বেশিরভাগ পড়ুয়ার পোশাকের মাপে ভয়ঙ্কর ভুল হয়েছে। তিনি জানান, বছরের গোড়ায় যে পোশাক আসার কথা ছিল, সেটা অগস্টে এল। তাও মাপে ভুল। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের বেশির ভাগ পড়ুয়া গরিব ঘরের। ওরা স্কুল পোশাকগুলোর জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিল। বেশিরভাগের পোশাক মাপে হয়নি। বড় হওয়া ড্রেস ফেরতও নিচ্ছে না। সেল্ফহেল্প গ্রুপ মাপ নিয়ে গিয়েও এত বড় ভুল! যার কোমরের মাপ ৩০ ইঞ্চি, তার ৩৮ ইঞ্চি ম্যাপের প্যান্ট এসেছে।’’

হুগলির বেরাবারি সূর্যনারায়ণ মেমোরিয়াল হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক দীপঙ্কর দত্ত বলেন, ‘‘এই বছর এখনও পোশাক পেলাম না। গতবারের মান নিয়ে প্রচুর অভিযোগ ছিল। মেয়েদের বেশির ভাগের পোশাকের সঙ্গে ওড়না দেওয়া হয়নি। অষ্টম শ্রেণির বেশির ভাগ ছেলে পড়ুয়া হাফ প্যান্ট দিচ্ছে। অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়ারা হাফপ্যান্ট পরতে চায় না। বেশির ভাগ ছেলেদের প্যান্টের সেলাই ছিঁড়ে যাচ্ছে।’’ আরামবাগ পুড়শুড়া হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সৌম্যজিৎ মাইতি জানান, তাঁদের স্কুলে পোশাক এলেও বেশির ভাগ পড়ুয়ার মাপে হচ্ছে না।

‘অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টারস অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসেস’-এর রাজ্য সম্পাদক চন্দন মাইতির অভিযোগ, ‘‘পোশাক বানানোর জন্য যে সেল্ফহেল্প গ্রুপ তৈরি হয়েছে তাদের অনেকেরই পোশাক তৈরির অভিজ্ঞতা নেই। ফলে অনেকেই মাপ নিয়েও টেলরিং দোকানে বরাত দিচ্ছে। কয়েক হাত ঘুরে পোশাক তৈরি হচ্ছে। পোশাক তৈরির বাজেটের থেকে খরচ বেশি হওয়ার ভয়েও পোশাকের মানের সঙ্গে আপস করা হচ্ছে। পোশাকের মাপও ঠিক হচ্ছে না।’’

এই বিষয়ে শিক্ষা দফতরের কর্তারা মন্তব্য করতে রাজি হননি। শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, আগে যে ভাবে পোশাক পড়ুয়াদের দেওয়া হত, এখন সে ভাবে হচ্ছে না। এখন কর্পোরেশন, মিউনিসাপিলিটি অথবা পঞ্চায়েতের মাধ্যমে পোশাক তৈরির হওয়ার কথা। অথচ কর্পোরেশন, মিউনিসিপালিটি, পঞ্চায়েত আবার সেল্ফহেল্প গ্রুপের মাধ্যমে পোশাক তৈরি করছে। সেল্ফহেল্প গ্রুপের মধ্যে দক্ষতার অভাব থাকতে পারে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

West Bengal Schools
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE