Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
‘নীল তিমি’র দাপট রুখতে পরামর্শ

স্মার্ট ফোন ব্যবহারে সাবধান

স্থান, বর্ধমান মিউনিসিপ্যাল হাইস্কুল। অভিভাবকদের মুখোমুখি প্রধান শিক্ষিকা শ্রাবণী মণ্ডল। অভিভাবকদের লক্ষ করে তিনি বলেন, ‘‘অপ্রয়োজনে ছেলেমেয়েদের হাতে স্মার্ট ফোন দিয়ে বিপদ বাড়াবেন না। আপনারাও সতর্ক থাকুন। খুব দরকার পড়লে, সাধারণ মোবাইল দিন।’’

আলোচনা: স্কুলে শিক্ষিকা ও অভিভাবকেরা। নিজস্ব চিত্র

আলোচনা: স্কুলে শিক্ষিকা ও অভিভাবকেরা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০১:১৪
Share: Save:

কিশোরী বহুতলের ছাদের পাঁচিলে দাঁড়িয়ে। চারিদিকে চিৎকার। কিন্তু মেয়েটি অনড়। তার সামনে যে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার হাতছানি! গেমের শেষ ধাপ আত্মহত্যা।— শনিবার পূর্ব বর্ধমানের নানা স্কুলে অভিভাবকদের সঙ্গে বৈঠকে ছেলেমেয়েরা যাতে নীল তিমির (ব্লু হোয়েল) খপ্পরে না পড়ে, সে জন্য এমনই গল্প শোনালেন শিক্ষকেরা। স্মার্ট ফোন তুলে দেওয়া, তার ব্যবহার প্রভৃতি বিষয়ে সচেতন হওয়ারও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

স্থান, বর্ধমান মিউনিসিপ্যাল হাইস্কুল। অভিভাবকদের মুখোমুখি প্রধান শিক্ষিকা শ্রাবণী মণ্ডল। অভিভাবকদের লক্ষ করে তিনি বলেন, ‘‘অপ্রয়োজনে ছেলেমেয়েদের হাতে স্মার্ট ফোন দিয়ে বিপদ বাড়াবেন না। আপনারাও সতর্ক থাকুন। খুব দরকার পড়লে, সাধারণ মোবাইল দিন।’’ জেলারই অন্য এক স্কুলে ঢুঁ মেরে দেখা গেল, সেখানেও নীল তিমি নিয়ে আলোচনা চলছে। এই খেলায় আসক্তি এড়াতে ছেলেমেয়েদের সঙ্গে বন্ধুর মতো আচরণ করুন অভিভাবকেরা, পরামর্শ শিক্ষকদের।

সম্প্রতি ‘ব্লু হোয়েল’ খেলা নিয়ে এ রাজ্যে তোলপাড় শুরু হয়েছে। দিনকয়েক আগে পশ্চিম মেদিনীপুরের এক ছাত্রকে ‘ব্লু হোয়েল’ খেলার মাঝপথে উদ্ধার করা হয়। হাওড়া, বাঁকুড়া, ময়ূরেশ্বরেও এই মারণ-খেলার কথা সামনে এসেছে। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সাধারণত, মোবাইলে অজানা নম্বর থেকে একটি ‘লিঙ্ক’ আসে। তাতে চাপ দিতেই খেলাটি ‘ইনস্টল’ হয়ে যায়। খেলা চলে ‘অ্যাডমিনিস্ট্রেটরের’ নির্দেশমতো। রয়েছে ৫০টা ‘চ্যালেঞ্জ’ বা ধাপ। প্রথমে মাঝরাতে ভয়ের সিনেমা দেখা দিয়ে শুরু। মাঝপথে নিজের হাত চিরে তিমি আঁকতে হয়। শেষ ধাপে রয়েছে, আত্মহত্যা।

পড়ুয়াদের মধ্যে এমন কোনও বিপজ্জনক খেলার প্রতি আসক্তি রয়েছে কি না, তা জানতে গল্পের ছলে পড়ুয়াদের সঙ্গে মেশা হচ্ছে বলে জানান বর্ধমান মিউনিসিপ্যাল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শম্ভুনাথ চক্রবর্তী। তবে শম্ভুনাথবাবু, কেতুগ্রামের একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক তরুণ সাধু কিংবা বড়শুলের সিডিপি স্কুলের পরিচালন সমিতির সভাপতি লবকুমার দাস, সকলেই এক কথায় এ দিন দাবি করেছেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে অভিভাবকদের সবার আগে সচেতন হওয়া দরকার। এ দিন তাই বলা হয়েছে।’’

সভায় নানা স্কুলে ছাত্রীরা যাতে শাড়ির বদলে চুড়িদার পরতে পারে, সে বিষয়ে দাবি করেন অভিভাবিকারা। এ ছাড়া ক্লাসঘর ও শিক্ষকের সংখ্যা বাড়ানো, মিড-ডে মিলের ছাউনি তৈরি, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ক্লাসে আরও নজর দেওয়া-সহ নানা দাবি উঠেছে জেলার স্কুলগুলিতে। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, দাবিগুলি নিয়ে জেলাস্তরে ‘মনিটরিং কমিটি’তে আলোচনা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE