একের পর এক বাড়ি হেলে পড়া, চর্মনগরীতে তিন ঠিকা-শ্রমিকের মৃত্যু-সহ বিভিন্ন ঘটনায় দুর্নীতির অভিযোগে বুধবার প্রদেশ কংগ্রেসের ‘কলকাতা পুরসভা ঘেরাও’ অভিযানে ধুন্ধুমার বাধল। বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশের বিরুদ্ধে বাধা দেওয়া, লাঠি চালানোর অভিযোগ তুললেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। তাঁদের দাবি, দলের দু’জন জখম হয়েছেন। শেষমেশ পুরসভার ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষের সঙ্গে দেখা করে দাবিপত্র দিয়েছে কংগ্রেসের প্রতিনিধিদল। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার জানিয়েছেন, আগামী দিনে পুরসভার ১৬টি বরোয় দুর্নীতির বিরুদ্ধে এই আন্দোলন পৌঁছে দেওয়া হবে।
দলের রাজ্য দফতর বিধান ভবন থেকে প্রদেশ সভাপতির নেতৃত্বে কংগ্রেস নেতা-কর্মীরা পুরসভার উদ্দেশে মিছিল করেন। মেয়র ফিরহাদ হাকিমের পদত্যাগের দাবিতে স্লোগান তুলে এবং ‘দুর্নীতির আখড়া কেএমসি’, এই মর্মে প্ল্যাকার্ড নিয়ে সরব হন আন্দোলনকারীরা। নিউ মার্কেট থানার কাছে ব্যারিকেড করে পুলিশ মিছিল আটকায় এবং তাদের প্রতিনিধিদলকে পুরসভায় দাবিপত্র দিতে বাধা দেয় বলে অভিযোগ। পুলিশের পাল্টা বক্তব্য, মেয়রের সঙ্গে সাক্ষাৎ বা দাবিপত্র দেওয়ার বিষয়ে আগাম কিছু জানানো হয়নি কংগ্রেসের তরফে। আন্দোলনকারীরা ব্যারিকেড পেরিয়ে পুরসভায় ঢুকতে গেলে পুলিশের সঙ্গে তাঁদের ধস্তাধস্তি বাধে। কংগ্রেসের অভিযোগ, পুলিশ লাঠিও চালিয়েছে। ঘটনার সময়ে পুলিশের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তোলেন কংগ্রেস নেতারা। পুলিশের আচরণের প্রতিবাদে রাস্তায় বসে অবস্থান শুরু করেন কংগ্রেস নেতা-কর্মীরা। শুভঙ্করের বক্তব্য, “এত ভয় কেন? আমরা গোলমাল করতে নয়, সরকার যাতে হেলে না পড়ে, তার ব্যবস্থা করতে এসেছি! মেয়র পালিয়ে গিয়েছেন। আমাদের দু’জন জখম হয়েছেন।” মেয়র ফিরহাদের পাল্টা কটাক্ষ, ‘‘বাড়ি হেলে পড়ার ঘটনায় পুরসভা ব্যবস্থা নিয়েছে। আর মেয়রকে পদত্যাগ করতে হলে ওঁরা (কংগ্রেস) কি বোর্ড চালাতে আসবেন? নির্বাচনে জেতার ক্ষমতা আছে? একটা শূন্য দলের নানা
‘ঘেরাও’ অভিযানে কংগ্রেস নেতা ও কর্মীরা। —নিজস্ব চিত্র।
পাশাপাশি, পর পর হেলে পড়া বাড়ি প্রসঙ্গে শুভঙ্করের দাবি, “অবৈধ নির্মাণগুলি যাঁরা করেছেন এবং এই ধরনের বাড়িগুলি যে আধিকারিকেরা ছাড়পত্র দিয়েছেন, তাঁদের সবাইকে গ্রেফতার করতে হবে।” নিকাশি-ব্যবস্থা, দরপত্র, বাণিজ্যিক ছাড়পত্র, টোল সংগ্রহ, হোর্ডিং-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে কলকাতা পুরসভার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগও তুলেছে কংগ্রেস। প্রদেশ ও কয়েকটি জেলা কংগ্রেস নেতৃত্বের পাশাপাশি পুরসভা অভিযানে ছিলেন কংগ্রেসে যোগ দেওয়া পুর-প্রতিনিধি পূর্বাশা নস্করও। কলকাতায় ছিলেন না আর এক পুর-প্রতিনিধি সন্তোষ পাঠক।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)