Advertisement
E-Paper

পরীক্ষার খোলনলচে বদলে সিমেস্টারের প্রস্তাব স্কুলেও

শুক্রবার স্কুলশিক্ষা দফতরের যে-নির্দেশিকা প্রকাশ্যে এসেছে, তাতে জানানো হয়েছে, কবে কখন ফরমেটিভ ও সামেটিভ পরীক্ষা হচ্ছে, তার রিপোর্ট তৈরি করবেন জেলা স্কুল পরিদর্শক (ডিআই)। নির্দিষ্ট তারিখে সেই রিপোর্ট পাঠাতে হবে দফতরে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০১৮ ০৪:২৪

পড়ুয়াদের সার্বিক উন্নতির জন্য ২০১৪ সালে সরকারি, সরকার পোষিত ও সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলে নতুন ধাঁচে পরীক্ষা নেওয়া শুরু হয়েছে। কিন্তু ওইটুকুই! বাস্তবে তার যথার্থ প্রয়োগ হয় না বলেই অভিযোগ শিক্ষা শিবিরের। তাই গোটা পরীক্ষা ব্যবস্থা বদলে ফেলে সিমেস্টার পদ্ধতি চালু করার দাবি তুলছে বেশ কয়েকটি শিক্ষক সংগঠন। অন্যদের অবশ্য দাবি, ব্যবস্থা পরিবর্তন না-করে বরঞ্চ তার যথার্থ প্রয়োগে মন দিক সরকার।

এই বিতর্কের মধ্যেই গত শুক্রবার পরীক্ষা ব্যবস্থার উপরে নজরদারি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্কুলশিক্ষা দফতর। সেখানকার এক কর্তা জানান, এখন প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত তিনটি ফরমেটিভ (প্রস্তুতিকালীন মূল্যায়ন) এবং তিনটি সামেটিভ (পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়ন) হয়। তিন মাস অন্তর সামেটিভ পরীক্ষার আগে নেওয়া হয় ফরমেটিভ পরীক্ষা। এই পরীক্ষা মূলত মৌখিক। অর্থাৎ কোনও পড়ুয়া প্রশ্ন করতে পারছে কি না, কোনও বিষয়ে সে আদৌ নিজে থেকে সে যোগ দিচ্ছে কি না, তা যাচাই করা হয়। কনটিনিউয়াস কমপ্রিহেনসিভ ইভ্যালুয়েশন (সিসিই) বা নিরবচ্ছিন্ন সার্বিক মূল্যায়নের জন্যই ২০১৪ সালে এই পদ্ধতি শুরু হয়। এই মডেলের নাম ‘পিকক মডেল’। এটি সম্পূর্ণ বিজ্ঞানসম্মত বলে ওই কর্তার দাবি। কিন্তু এর প্রয়োগে সমস্যা যে থেকেই যাচ্ছে, অনেকে সেটা মেনে নিচ্ছেন।

শুক্রবার স্কুলশিক্ষা দফতরের যে-নির্দেশিকা প্রকাশ্যে এসেছে, তাতে জানানো হয়েছে, কবে কখন ফরমেটিভ ও সামেটিভ পরীক্ষা হচ্ছে, তার রিপোর্ট তৈরি করবেন জেলা স্কুল পরিদর্শক (ডিআই)। নির্দিষ্ট তারিখে সেই রিপোর্ট পাঠাতে হবে দফতরে।

কিন্তু শিক্ষকদের একাংশের বক্তব্য, এ ভাবে ফরমেটিভ পরীক্ষা নেওয়া যায় না। প্রতিদিন ক্লাসে পড়ুয়াদের অংশগ্রহণ, প্রশ্ন করার ক্ষমতা যাচাই করে নম্বর দিতে হয়। সে-ক্ষেত্রে অনেক শিক্ষক গড়পড়তা নম্বর দিয়ে দেন। ফলে যথার্থ মূল্যায়ন হচ্ছে না। নজরদারি বাড়িয়েও সেটা করা সম্ভব নয়। বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সহ-সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, ‘‘এর থেকে সিমেস্টার পদ্ধতিতে পরীক্ষা ব্যবস্থা চালু হলে যথাযথ মূল্যায়ন হবে। ফরমেটিভ পরীক্ষায় তো মুখ দেখে নম্বর দেওয়া যায়।’’ নিখিল বঙ্গ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণপ্রসন্ন ভট্টাচার্য জানাচ্ছেন, চালু পদ্ধতিতে ভুল নেই। ভুল হচ্ছে তার প্রয়োগে। ‘‘এতে আসলে পড়ুয়াদের জ্ঞান, বুদ্ধি, প্রয়োগক্ষমতা ও দক্ষতা যাচাই করার কথা। কিন্তু সব ক্ষেত্রে তা হচ্ছে না। সরকারের সে-দিকে লক্ষ রাখা উচিত,’’ বলেন কৃষ্ণবাবু।

স্কুলশিক্ষা দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘এ ক্ষেত্রে শিক্ষকদের দায়িত্ব নিতে হবে। প্রতিটি শিক্ষক ক্লাসে সিসিই করছেন কি না, সেটা যাচাই করার জন্য বাইরে থেকে শ্রেণিকক্ষে নজরদারি চালানো সম্ভব নয়। এবং শিক্ষকদের পক্ষেও সেটা সম্মানজনক নয়। তাই পড়ুয়াদের কথা ভেবে শিক্ষকদের সচেতনতা প্রয়োজন।’’

অন্য এক শিক্ষাকর্তা জানান, কলকাতার একটি সিবিএসই স্কুলে শিক্ষক-শিক্ষিকারা সিসিই ঠিক করে করছেন কি না, তা দেখার জন্য এক শিক্ষককে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সরকারের পক্ষে ১২ হাজার স্কুলে সেটা করা সম্ভব নয়। ‘‘বর্তমান পদ্ধতি জনপ্রিয় ও বিজ্ঞানসম্মত। তাই এখন বদলের কোনও সম্ভাবনা নেই,’’ বলছেন ওই শিক্ষাকর্তা।

Exam Semester WBSE
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy