Advertisement
০৭ ডিসেম্বর ২০২৪
State News

সাতটি সূচ বের করা হল সাড়ে তিন বছরের সেই মেয়ের শরীর থেকে

মঙ্গলবার এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসকেরা লিভার, যোনি, অন্ত্র ও অগ্ন্যাশয় থেকে ওই সূচগুলি বের করেন। যদিও বিপদমুক্ত হতে আরও ৭২ ঘণ্টা সময় দরকার। আপাতত শিশুটিকে ‘পেডিয়াট্রিক ইনটেন্সিভ কেয়ার ইউনিট’ (পিকু)-এই বিশেষ পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে বলে এসএসকেএম হাসপাতাল সূত্রে খবর।

শিশুটির দেহের ভিতরে ছিল এই সাতটি সূচ।

শিশুটির দেহের ভিতরে ছিল এই সাতটি সূচ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০১৭ ১৬:৫২
Share: Save:

পুরুলিয়ার নির্যাতিতা শিশুকন্যার দেহ থেকে অস্ত্রোপচার করে বের করা হল সাত-সাতটি সূচ। মঙ্গলবার এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসকেরা লিভার, যোনি, অন্ত্র ও অগ্ন্যাশয় থেকে ওই সূচগুলি বের করেন। যদিও বিপদমুক্ত হতে আরও ৭২ ঘণ্টা সময় দরকার। আপাতত শিশুটিকে ‘পেডিয়াট্রিক ইনটেন্সিভ কেয়ার ইউনিট’ (পিকু)-এই বিশেষ পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে বলে এসএসকেএম হাসপাতাল সূত্রে খবর।

হাসপাতাল সূত্রের খবর, এ দিন সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ ওই শিশুটিকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়। বিশেষ মেডিক্যাল দলের পর্যবেক্ষণে শুরু হয় তার অস্ত্রোপচার। বেলা দেড়টা নাগাদ চিকিৎসকেরা জানান, সফল ভাবেই তাঁরা শিশুটির দেহ থেকে সাতটি সূচ বের করতে পেরেছেন। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, সূচগুলির মধ্যে তিনটি লিভারে, দু’টি অন্ত্রে, একটি যোনিতে এবং একটি অগ্ন্যাশয়ে আটকে ছিল।

বুকের তলা থেকে উল্লম্ব ভাবে পেট কেটে সূচগুলি কোথায় রয়েছে তা দেখে দেখে বের করেছেন চিকিৎসকেরা। হাসপাতাল সূত্রে খবর, সাধারণ কাপড় সেলাইয়ের মতো সূক্ষ্ম নয় সূচগুলি। বরং বস্তা সেলাইয়ের সূচের মতো মোটা ও লম্বা। সূচগুলিতে মরচেও ধরে গিয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। তবে সূচ বিঁধে থাকার কারণে শিশুটির শরীরের ভিতরে কোনও রকম গুরুতর ক্ষত তৈরি হয়নি বলেই জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।

আরও পড়ুন: ফের মেয়ে হওয়ায় জঙ্গলে ফেললেন মা, বরাত জোরে বাঁচল সাত মাসের শিশু

এমনই বহু ক্ষতচিহ্ন ছিল শিশুকন্যাটির দেহে

চিকিৎসকদের আশা, দু’-তিন দিনের মধ্যেই হয়তো জেনারেল বেডে দেওয়া হবে শিশুটিকে। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে সপ্তাহখানেকের মধ্যে ছেড়েও দেওয়া হতে পারে তাকে।

গত মঙ্গলবার বিকেলে পুরুলিয়া মফস্সল থানা এলাকা থেকে এক মহিলা এসে পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে তাঁর শিশুকন্যাকে জ্বর, সর্দি-কাশির উপসর্গ সমেত ভর্তি করেন। চিকিৎসকেরা শিশুটিকে পরীক্ষা করতে গিয়ে আঁতকে ওঠেন। শিশুটির দু’চোখের চারপাশে কালশিটের দাগ। শরীরের নানা জায়গাতেও আঁচড়ের দাগ রয়েছে। শিশুটির মায়ের কাছে এ নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেও সদুত্তর মেলেনি। তাতে সন্দেহ আরও বাড়ে।

সূচ কী ভাবে বের করা হবে তা নিয়ে আলোচনা করতে এসএসকেএম হাসপাতালের সব ক’টি বিভাগের প্রধানরা একটি বৈঠক করেন। সেখানেই অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।

অস্ত্রোপচারের আগে দেহে বিঁধে থাকা সুচ।

পুরুলিয়া নদিয়াড়া গ্রামের বছর বাষট্টির সনাতন গোস্বামীর (ঠাকুর) বাড়িতে মেয়েকে নিয়েই মাসখানেক ধরে পরিচারিকার কাজ করছিলেন ওই মহিলা। স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই বৃদ্ধ নাম সংকীর্তন করত। এলাকায় দাবি করত, সে ‘ঝাড়ফুঁক, বশীকরণ’ জানে। সে-ই ওই শিশুর উপরে অত্যাচার করেছে বলে চাইল্ডলাইনের কর্মীদের কাছে মেয়েটির মা অভিযোগ করেন।

সনাতন এখনও অধরা। তার বাড়ির লোক, পড়শি ও পরিচিতদের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ মনে করছে, সনাতন ঝাড়খণ্ডেই গা ঢাকা দিয়ে থাকতে পারে। সেই সূত্রে ঝাড়খণ্ডের বিভিন্ন থানা এলাকায় তল্লাশি চালানো হচ্ছে।

(নিজস্ব চিত্র)

অন্য বিষয়গুলি:

SSKM Hospital Surgery Purulia পুরুলিয়া Needle
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy