—ফাইল চিত্র।
গ্রুপ ডি বা চতুর্থ শ্রেণির কর্মী কত প্রকারের হতে পারেন? এমন প্রশ্নের জবাব দিতে কালঘাম ছুটে যাচ্ছে বাঘা বাঘা প্রশাসনিক কর্তার। এ রাজ্যে যে ৯০ ধরনের গ্রুপ ডি কর্মী আছেন, তা জেনে বিস্ময়ের শেষ নেই নবান্নের শীর্ষ কর্তাদেরও। ব্রিটিশ জমানায় তৈরি হওয়া সেই সব গ্রুপ ডি কর্মীর অনেক কাজই এখন অবলুপ্ত। কিন্তু পদগুলো থেকে গিয়েছে।
এই সমস্যার সমাধানে গ্রুপ ডি কর্মীদের জন্য কমন ক্যাডার উইং তৈরির প্রস্তাব পেশ করেছে কর্মিবর্গ বিষয়ক দফতর। তাতে অধিকাংশ গ্রুপ ডি পদ তুলে দিয়ে মাত্র সাত ধরনের পদ তৈরির সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেই সঙ্গে তিনটি স্তরে পদোন্নতিরও ব্যবস্থা থাকছে। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে কিছু দিনের মধ্যেই এই নীতি গৃহীত হবে বলে নবান্ন সূত্রের খবর।
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্রিটিশ শাসকেরা গ্রুপ ডি পদেই ৯০টি প্রকারভেদ রেখেছিলেন। কিন্তু এখনকার প্রশাসনে সেই সব পদের আর কোনও প্রাসঙ্গিকতা নেই। ডাক-পিয়ন, পলিশার, পাঙ্খাপুলার, ফরাস, ডুপ্লিকেটিং মেশিং অপারেটর, ক্যাম্প লস্কর, লস্কর, মালি, কুক, অ্যাসিস্ট্যান্ট কুক, মশালচি, কনফেকশনার, ছুতোর ইত্যাদি পদে লোক নেওয়া হত ব্রিটিশ আমলে। কিন্তু এই ধরনের পদের এখন আর কোনও প্রয়োজন নেই। ব্রিটিশ শাসকেরা জমি জরিপের কাজে গেলে ফাইফরমাশ খাটার জন্য ক্যাম্প-লস্কর নেওয়া হত। কিন্তু এখন আমলারা আর জরিপের কাজে যান না, পরিদর্শনে গেলে এমন ফরমাশ খাটার লোকও নেন না। একই ভাবে সাহেবদের ঘরে মশলা বাটার জন্য মশালচির পদ রয়েছে সরকারি খাতায়। কিন্তু এই পদে নিয়োগ হয় না। সাহেবদের ঘরে কেক বানানোর জন্য নেওয়া হত কনফেকশনার। এখনও তার কোনও গুরুত্ব নেই। প্রশাসনিক কর্তাদের অনেকের মতে, এখন আর কাজের বিচার করে লোক নেওয়ার সংস্কৃতিও নেই। সেই জন্যই সারা রাজ্যে প্রোমোশনের সুযোগ-সহ সাত ধরনের গ্রুপ ডি পদে লোক নেওয়ার কথা ভাবা হয়েছে।
সেই প্রকারভেদ কেমন?
কর্মিবর্গ দফতরের এক কর্তা জানান, এখন শুধু গ্রুপ ডি এবং মোহরার, এই দুই পদে নিয়োগ হবে। দু’টি পদ থেকেই প্রোমোশন হবে বেসিক, গ্রুপ-১ এবং গ্রুপ-২ পদে। এ ভাবে চতুর্থ শ্রেণি ও মোহরার পদ থেকে ছ’টি শ্রেণি তৈরি করার পাশাপাশি সর্বোচ্চ স্তরে সাব-অর্ডিনেট অ্যাসিস্ট্যান্ট নামে আরও একটি পদ তৈরি হবে। কাজের বিচারে কোনও শ্রেণি বিভাগ থাকবে না।
তা হলে মশলা বাটা বা লস্করের কাজও কি তুলে দেওয়া হবে?
নবান্নের কর্তারা জানাচ্ছেন, শুধু রাজভবনে এই ধরনের কয়েকটি পদের প্রাসঙ্গিকতা রয়েছে। ফলে সেখানে থাকতে পারে। কিন্তু রাজ্য প্রশাসনে এখন বাটনা বাটা, পাঙ্খাপুলার রাখার কোনও প্রয়োজন নেই। ফলে সেই সব পদ বিলুপ্ত করার কথাই ভাবা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy