Advertisement
E-Paper

যাদবপুরের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত সাতটি এফআইআর! গ্রেফতার এক প্রাক্তনী, কোন কোন ধারায় মামলা?

রবিবার বিকেলে কলকাতার সিপি মনোজ বর্মা বলেন, ‘‘যাদবপুরের ঘটনায় মোট সাতটি এফআইআর রুজু হয়েছে। তার মধ্যে দু’টি স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে পুলিশ করেছে।’’ সাতটি এফআইআরের মধ্যে তিনটিই ওয়েবকুপার তরফে।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০২৫ ২১:০১
(উপরে) শনিবার মন্ত্রী ব্রাত্য বসুর গাড়িতে ভাঙচুর। (নীচে) যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে বামপন্থী পড়ুয়াদের বিক্ষোভ।

(উপরে) শনিবার মন্ত্রী ব্রাত্য বসুর গাড়িতে ভাঙচুর। (নীচে) যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে বামপন্থী পড়ুয়াদের বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনায় শনিবার রাতেই এক প্রাক্তনীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁকে ১০ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এখনও পর্যন্ত যাদবপুর থানায় শনিবারের অশান্তি সংক্রান্ত মোট সাতটি এফআইআর দায়ের হয়েছে। মামলা হয়েছে একাধিক জামিনযোগ্য ও জামিন-অযোগ্য ধারায়। ওয়েবকুপা এবং পডুয়া— লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছে দু’পক্ষই।

রবিবার বিকেলে কলকাতার সিপি মনোজ বর্মা বলেন, ‘‘যাদবপুরের ঘটনায় মোট সাতটি এফআইআর রুজু হয়েছে। তার মধ্যে দু’টি স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে পুলিশ করেছে।’’ সাতটি এফআইআরের মধ্যে তিনটিই ওয়েবকুপার তরফে। তাদের অভিযোগে সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর প্রতিরোধ আইনের ৩ এবং ৪ নম্বর ধারা, পশ্চিমবঙ্গ জনশৃঙ্খলা রক্ষা আইনের ৯ নম্বর ধারার পাশাপাশি ভারতীয় ন্যায় সংহিতার একাধিক ধারাও রয়েছে। ন্যায় সংহিতার ১২৬ (২) (অন্যায় ভাবে বাধা দেওয়া), ১১৮(১) (বিপজ্জনক অস্ত্র নিয়ে ইচ্ছাকৃত ভাবে আঘাত করা), ৭৪ (মহিলাদের নিগ্রহ), ৫৪ (অপরাধের সময় উপস্থিত থাকা), ৩০৪ (ছিনতাই), ৩(৫) (জোটবদ্ধ ভাবে হামলা) নম্বর ধারা-সহ বিভিন্ন অভিযোগে এফআইআর দায়ের করেছে ওয়েবকুপা। রয়েছে ন্যায় সংহিতার ১০৯ নম্বর (খুনের চেষ্টা) ধারাও! অন্য দিকে, ক্যাম্পাসে বেপরোয়া গাড়ি চালানোর অভিযোগে পড়ুয়াদের তরফেও পাল্টা এফআইআর দায়ের হয়েছে। এ ছাড়াও, স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে দু’টি এফআইআর দায়ের করেছে পুলিশ। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। যে বা যাঁরা শনিবারের অশান্তির সঙ্গে জড়িত ছিলেন, তাঁদের চিহ্নিতকরণের কাজ চলছে।

তৃণমূলপন্থী অধ্যাপকদের সংগঠন ওয়েবকুপার বার্ষিক সম্মেলন ঘিরে শনিবার গোটা দিন উত্তপ্ত ছিল যাদবপুর ক্যাম্পাস। ওয়েবকুপার সম্মেলনে যোগ দিতে গিয়ে বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলির বিক্ষোভের মুখে পড়েন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তাঁকে ঘিরে ‘গো ব্যাক’ স্লোগান দেন এসএফআই, আইসা, ডিএসএফের সদস্যেরা। তা থেকেই অশান্তির সূত্রপাত। এর পর দফায় দফায় উত্তেজনা তৈরি হয় বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে। অভিযোগ, ব্রাত্যের গাড়ির চাকার হাওয়া খুলে দেন বিক্ষোভকারী পড়ুয়ারা। শিক্ষামন্ত্রীর গাড়ির পাশাপাশি তাঁর পাইলট কারে ভাঙচুর চালানোরও অভিযোগ ওঠে। আহত হন ব্রাত্যও। বিক্ষোভকারী পড়ুয়াদের পাল্টা অভিযোগ, মন্ত্রীর গাড়ি এক ছাত্রকে চাপা দিয়েছে। তিনি আহত হয়েছেন। ইন্দ্রানুজ রায় নামে প্রথম বর্ষের ওই ছাত্র যাদবপুরের কেপিসি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি। শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল হলেও, তাঁর বাঁ চোখ নষ্ট হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সহপাঠীরা। অভিনব বসু নামে আর এক ছাত্রের পায়ের উপর দিয়ে তৃণমূল সমর্থিত অধ্যাপক ওমপ্রকাশ মিশ্রের গাড়ির চাকা চলে গিয়েছে বলে অভিযোগ।

রাতেও উত্তেজনা ছড়ায় ক্যাম্পাসে। শনিবার রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ আচমকা আগুন লেগে যায় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের তৃণমূল সমর্থিত কর্মী সংগঠন ‘শিক্ষাবন্ধু’র অফিসে। তবে কী ভাবে আগুন লাগল, তা নিয়ে এখনও ধন্দে পুলিশ। সেই ঘটনায় ইতিমধ্যেই এক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কলকাতার সিপি মনোজ বর্মা। ধৃত তরুণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রাক্তনী। তাঁকে আগামী ১২ মার্চ পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। অন্য দিকে, শনিবার রাতে আহতদের দেখতে কেপিসি হাসপাতালে গিয়ে আক্রান্ত হন উপাচার্য ভাস্কর গুপ্ত। অভিযোগ, সেখানে কয়েক জন তাঁকে হেনস্থা করেন। তাঁর পাঞ্জাবিও টানাটানিতে ছিঁড়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।

যাদবপুরের ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার সন্ধ্যায় বিক্ষোভ দেখিয়েছে তৃণমূল। পাশাপাশি পথে নামে বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলিও। আগামী সোমবার এসএফআই রাজ্যের সব কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। সোমবার বিকেলে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠ থেকে প্রতিবাদ মিছিলের ডাক দিয়েছে বাম ছাত্র সংগঠনগুলিও।

Jadavpur University Agitation Jadavpur University Bratya Basu FIR arrested
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy