শেখ শাহজাহান। —ফাইল চিত্র।
সাম্প্রতিক অতীতে যাঁর ‘দৌলতে’ খবরের শিরোনামে উঠে এসেছে সন্দেশখালি, সেখানকার এক সময়ের সেই অবিসংবাদিত নেতা শেখ শাহজাহান সম্পর্কে নিত্যনতুন তথ্য তুলে আনছে সিবিআই। এখন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটি সূত্রের দাবি, মাছের ভেড়ি বা রেশন বণ্টন দুর্নীতির বেআইনি টাকার পাশাপাশি শাহজাহান বেআইনি অস্ত্র ও গুলির কারবারও ফেঁদে বসেছিলেন।
বেশ কিছু দিন আগে সন্দেশখালির সরবেড়িয়া মল্লিকপুর পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দা শাহজাহান ঘনিষ্ঠ আবু তালেব মোল্লার বাড়ি থেকে বিদেশি পিস্তল ও রিভলভার উদ্ধার হয়। পাওয়া যায় কার্তুজও। তা সামনে রেখে তদন্ত শুরু করে সিবিআই। এখন তদন্তকারী সংস্থাটি সূত্রের দাবি, ভুয়ো নথি দিয়ে ভিন্ রাজ্য থেকে কমপক্ষে ৫০০টি বন্দুকের লাইসেন্স তৈরি করেছিলেন শাহজাহান ও তাঁর বাহিনী। তার মধ্যে অন্তত ৬০টির হদিস পাওয়া গিয়েছে।
তদন্তকারীদের দাবি, শাহজাহান ঘনিষ্ঠদের কাছে এখনও কয়েকশো নানা ধরনের দেশি-বিদেশি পিস্তল এবং কয়েক হাজার কার্তুজ মজুত রয়েছে বলে খবর পাওয়া গিয়েছে। এক তদন্তকারী অফিসারের কথায়, শাহজাহানের অস্ত্র ভান্ডারের খোঁজ চলছে। অন্যান্য কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার অফিসারদের সঙ্গেও বৈঠক করা হয়েছে। পরিস্থিতি অনুযায়ী আদালতে রিপোর্ট জমা দিয়ে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ করা হবে।
সিবিআইয়ের এক কর্তার কথায়, “আমরা শুধু অনুমানের উপরে ভিত্তি করে এ সব বলছি না। তালেব মোল্লার বাড়ি থেকেই শাহজাহান ও তাঁর ভাই আলমগীরের নামে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স উদ্ধার হয়েছিল। তখনই আমাদের সন্দেহ হয়। তারপর খোঁজ শুরু হয়েছে।” সূত্রের দাবি, ভিন্ রাজ্য থেকে ভুয়ো নথি দিয়ে নেওয়া লাইসেন্সের ভিত্তিতে বিভিন্ন সরকারি দোকান থেকে কার্তুজ কিনতেন শাহজাহান ও তাঁর ঘনিষ্ঠরা। আর তা চড়া দামে বিকিয়ে যেত দুষ্কৃতী মহলে। সিবিআই কর্তার দাবি, তালেব মোল্লার বাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণ কার্তুজও উদ্ধার হয়েছিল। পরে খতিয়ে দেখা যায়, সেই সব কার্তুজ কেনা হয়েছিল সরকারি দোকান থেকেই। কারণ তালেব মোল্লার বাড়ি থেকে এমন কিছু কার্তুজ কেনার রসিদ উদ্ধার হয়েছিল, যেগুলি কলকাতার বেশ
কয়েকটি দোকানের।
সিবিআই কর্তাদের দাবি অনুযায়ী, ইতিমধ্যেই সন্দেশখালির সরবেড়িয়া-সহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকার ঠিকানায় ভিন্ রাজ্যের প্রায় ৬০টির বেশি লাইসেন্সের হদিস পাওয়া গিয়েছে। শাহজাহান ঘনিষ্ঠদের নামেই ভুয়ো নথির মাধ্যমে ভিন্ রাজ্য থেকে ওই সব লাইসেন্স তৈরি করা হয়েছে বলে দাবি করছেন তদন্তকারীরা। সেই লাইসেন্স দেখিয়ে প্রথমে কেনা হত আগ্নেয়াস্ত্র। তার পরে কার্তুজ। তদন্তকারীদের দাবি অনুযায়ী, এ ভাবে হাজার হাজার কার্তুজ সরকারি ভাবে কিনে তা দ্বিগুণ দামে বাজারে বিক্রি করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy