E-Paper

বেনামে শঙ্করেরও হোটেল দিঘায়!

ধৃত মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের ঘনিষ্ঠদের সঙ্গে দিঘার যোগাযোগ নিয়ে নতুন করে জল্পনা শুরু হয়েছে। এই যোগসূত্র কত দূর, তা নিয়েও চর্চা শুরু হয়েছে।

কেশব মান্না

শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০২৪ ০৬:৩০
নিউ দিঘার এই দু’টি হোটেল শঙ্করের বলে গুঞ্জন।

নিউ দিঘার এই দু’টি হোটেল শঙ্করের বলে গুঞ্জন। —নিজস্ব চিত্র।

রেশন দুর্নীতিতে এর আগে দিঘায় বাকিবুর রহমানের বেনামে হোটেলের কথা শোনা গিয়েছিল। এ বারে প্রশ্ন উঠল শঙ্কর আঢ্যের ক্ষেত্রেও। অভিযোগ, তাঁরও বেনামে হোটেল রয়েছে পূর্ব মেদিনীপুরের সৈকত শহরে। ফলে ধৃত মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের ঘনিষ্ঠদের সঙ্গে দিঘার যোগাযোগ নিয়ে নতুন করে জল্পনা শুরু হয়েছে। এই যোগসূত্র কত দূর, তা নিয়েও চর্চা শুরু হয়েছে।

রেশন দুর্নীতিতে সম্প্রতি গ্রেফতার হয়েছেন জ্যোতিপ্রিয় ঘনিষ্ঠ বনগাঁ পুরসভার প্রাক্তন পুরপ্রধান শঙ্কর। দিঘায় একটি হোটেলের ছবি দেখিয়ে বাকিবুরের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। শঙ্করের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের অভিযোগ, ওঁরও হোটেল আছে দিঘায়। তবে সেই হোটেল দু’টি সরাসরি শঙ্করের নামে নয় বলেই জানা যাচ্ছে। যদিও নিউ দিঘা হোটেল মালিক সংগঠনের সম্পাদক অশোক চন্দ বলেন, ‘‘নিউ দিঘায় শনি মন্দিরের কাছে হোটেল সিলভার ল্যান্ড এবং সমুদ্রের ধারে সি-ভিউ নামে দু’টি হোটেল রয়েছে শঙ্কর আঢ্যের।’’ দিঘা-শঙ্করপুর হোটেল মালিক সংগঠনের সভাপতি তথা তৃণমূল পরিচালিত স্থানীয় পদিমা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সুশান্ত পাত্রের বক্তব্য, ‘‘শুনেছি, শঙ্কর আঢ্যের দু'টো হোটেল রয়েছে।’’

খাতায়-কলমে দু’টি হোটেলের মালিকই অন্য জন। সিলভার ল্যান্ডের মালিক অমিত ঘোষ। অমিতের মোবাইল বন্ধ ছিল বুধবার। মাস ছয়েক আগে সলিল সাহা নামে একজনের থেকে সমুদ্রের ধার ঘেঁষে আর একটি হোটেল কেনা হয় বলে স্থানীয় হোটেল মালিক সংগঠন সূত্রের খবর। তার মালিক হিসেবে নাম নথিভুক্ত রয়েছেন দিগেন বড়ুয়ার। যদিও দিগেন দাবি করলেন, ‘‘ওল্ড দিঘায় একটি হোটেলে ম্যানেজারের কাজ করি। আমার নামে কোনও হোটেল নেই।’’

‌এ দিন দুপুরে নিউ দিঘার সিলভার ল্যান্ড হোটেলে গিয়ে ম্যানেজারের দেখা মিলল না। হোটেলের অন্য দুই কর্মচারীও কিছু বলতে চাইলেন না। ওড়িশার বাসিন্দা এক নিরাপত্তারক্ষী শুধু জানালেন, ‘‘দিন দশেক আগে এজেন্সির মাধ্যমে কাজে এসেছি। কে মালিক কিছুই জানি না।’’

ঢিল ছোড়া দূরত্বে হোটেল সি-ভিউ। এখানে ৩৫টি ঘর রয়েছে। ম্যানেজার বেলেঘাটার বাসিন্দা বিশ্বজিৎ সরকার। তিনি বললেন, ‘‘যে দিন শঙ্কর গ্রেফতার হন, হোটেলের কর্মীরা সব টিভির পর্দায় চোখ রেখেছিল। নানা রকম কথাও শোনা যাচ্ছিল।’’ তবে কি শঙ্কর আঢ্যই এই হোটেলের মালিক? এ বার বিশ্বজিতের সাবধানী জবাব, ‘‘অল্প কিছু দিন হল কাজে এসেছি। শুধু জানি সি-ভিউ এবং সিলভার ল্যান্ড দু’টো হোটেল একই সংস্থার। প্রধান অফিস কলকাতায়।’’ ওই ম্যানেজার আরও জানালেন, ‘প্রাইম লাইন ইন’ নামে একটি সংস্থার কিউআর কোডে পর্যটকেরা টাকা মেটান। রোজ রাতে হোটেলের আয়-ব্যয়ের হিসেব বিনোদ কুমার নামে একজনকে পাঠাতে হয়।

সত্যিই কি বেনামে দিঘায় হোটেল করেছিলেন শঙ্কর? পূর্ব মেদিনীপুর জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত রাজ্য তৃণমূলের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলছেন, ‘‘এ রকম কোনও বিষয় আমাদের জানা নেই।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Shankar Adhya TMC West Bengal Ration Distribution Case

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy