Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
রেলে সঙ্কট/২

ঝাঁ চকচকে প্ল্যাটফর্মেও খামতি বহু

উত্তরবঙ্গের সঙ্গে রেলপথে যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম হতে চলেছে কাটোয়া। কিছু নতুন পরিকাঠামো হলেও শহরের রেলগেট বা প্ল্যাটফর্মের হাল না বদলালে পরিস্থিতি বদলাবে না বলেই মনে করছেন শহরবাসী। পরিস্থিতি সত্যিই কতটা ভোগান্তির, সুরাহাই বা কি— খোঁজ নিল আনন্দবাজার।যাত্রীদের অভিযোগ, এর জেরে চরম ভোগান্তি হচ্ছে। বিশেষত কাটোয়া-বর্ধমান রোডের ছোট লাইন পাড় থেকে যাঁরা স্টেশনে ঢুকছেন তাঁদের আবার ওভারব্রিজ পেরিয়ে স্টেশনের মূল কাউন্টারে টিকিট কাটতে হচ্ছে।

প্ল্যাটফর্মে সবর্ত্র শেড নেই, ওভারব্রিজের সিঁড়িতেই অপেক্ষা। নিজস্ব চিত্র

প্ল্যাটফর্মে সবর্ত্র শেড নেই, ওভারব্রিজের সিঁড়িতেই অপেক্ষা। নিজস্ব চিত্র

সুচন্দ্রা দে
কাটোয়া শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০১৮ ০১:৫৮
Share: Save:

উড়ালপুল কবে হবে, সে প্রশ্নের জবাব মেলেনি। ততদিন কাটোয়া স্টেশনে ঢুকতে যানজটই ভবিতব্য বলে মেনে নিয়েছেন শহরবাসী। কিন্তু স্টেশনে ঢোকার পরেও ভোগান্তির শেষ নেই।

উত্তরবঙ্গ তো বটেই, সারা রাজ্যের সঙ্গে যেখানে রেলপথে যোগাযোগের জরুরি মাধ্যম হয়ে উঠতে চলেছে কাটোয়া সেই স্টেশনেরই বেশির ভাগ প্ল্যাটফর্মের পরিকাঠামো বেহাল। আধুনিক ব্যবস্থা তো দূরঅস্ত শেড, বসার জায়গার মতো ন্যূনতম পরিকাঠামোও নেই বলে অভিযোগ নিত্যযাত্রীদের। তার সঙ্গে টিকিট কাউন্টার চালু না হওয়া, পানীয় জলের ব্যবস্থা না থাকা— এ সব রয়েইছে।

কটোয়া স্টেশনে আগে ৪টি প্ল্যাটফর্ম ছিল। এখন আরও তিনটি নতুন হয়েছে। ৭ নম্বর প্ল্যাটফর্মে তৈরি হয়েছে টিকিট কাউন্টারও। কিন্তু বছরখানেক হতে চললেও চার জানলা বিশিষ্ট সেই কাউন্টারটি চালু করেনি পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষ। যাত্রীদের অভিযোগ, এর জেরে চরম ভোগান্তি হচ্ছে। বিশেষত কাটোয়া-বর্ধমান রোডের ছোট লাইন পাড় থেকে যাঁরা স্টেশনে ঢুকছেন তাঁদের আবার ওভারব্রিজ পেরিয়ে স্টেশনের মূল কাউন্টারে টিকিট কাটতে হচ্ছে। নিত্যযাত্রী পরেশ পাল, রঘুবীর দাসেরা বলেন, ‘‘৬ ও ৭ নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে বর্ধমান ও শিয়ালদা যাওয়ার ট্রেন ছাড়ে। কাটোয়ার আশপাশের গ্রাম থেকে অনেকেই ছোটলাইন পাড়ে বাস থেকে নেমে ওই প্ল্যাটফর্মে ট্রেন ধরেন। এখন তাঁদের হাতে বাড়তি আধঘন্টা সময় নিয়ে ওভারব্রিজ পেরিয়ে মূল কাউন্টারে গিয়ে টিকিট কাটতে হচ্ছে।’’ ব্যাগপত্তর নিয়ে শিশু কোলে মহিলাদের চরম সমস্যা হচ্ছে বলেও তাঁদের দাবি। তাঁদের আরও ক্ষোভ, বর্ধমান যাওয়ার ট্রেন দিনে একটাই, শিয়ালদা যাওয়ার ট্রেন বেশ কম। একেই ট্রেন কম, তার উপর লাইন পেরিয়ে টিকিট কাটতে গিয়ে অনেকেই ট্রেন ধরতে পারছেন না।

ওই প্ল্যাটফর্ম লাগোয়া সাইকেল ও মোটরবাইক স্ট্যান্ডের দরপত্র কেউ না নেওয়ায় সেই ছাউনি ভেঙে দিয়েছে স্টেশন কর্তৃপক্ষ। ফলে রোদ, বৃষ্টিতে সাইকেল, মোটরবাইক রাখতে বা নিতেও মুশকিলে পড়ছেন যাত্রীরা। প্যাসেঞ্জার অ্যাসোসিয়েশনের তরফে দেবাশিস বসু জানান, নতুন তিনটি প্ল্যাটফর্মেই কোনও শৌচাগার নেই। পানীয় জলের ব্যবস্থা থাকলেও তা পর্যাপ্ত নয়। এমনকি, পর্যাপ্ত বিশ্রামের জায়গা না থাকায় ওভারব্রিজের সিঁড়িতে ব্যাগপত্তর নিয়ে লাইন দিয়ে বসে থাকেন যাত্রীরা। এতে ব্যস্ত সময়ে যাতায়াতের সমস্যাও বাড়ে বলে যাত্রীদের অভিযোগ।

কাটোয়া স্টেশন কর্তৃপক্ষের যদিও দাবি, স্টেশনের চারটি প্লাটফর্মে পুরুষ ও মহিলা মিলিয়ে মোট ১৬টি শৌচাগার রয়েছে। বিশ্রামাগার রয়েছে দুটো। এ ছাড়াও প্রতি প্ল্যাটফর্মে কিছু বসার বেদি রয়েছে। তবে সেগুলির উপর ছাউনি না থাকায় রোদ, বৃষ্টি থেকে বাঁচতে অনেকেই ওভারব্রিজের সিঁড়িতে বসেন। স্টেশন ম্যানেজার দিলীপকুমার মণ্ডল বলেন, ‘‘প্রয়োজনীয় কর্মী না থাকায় সমস্যা বাড়ছে। নতুন টিকিট কাউন্টার চালুর বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আনা হয়েছে।’’ (‌শেষ)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Fly over Traffic
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE