Advertisement
E-Paper

মাছ, ডিম আমদানি বন্ধের ইঙ্গিত সিকিমের

আনাজ বন্ধের ঘোষণায় তেমন হইচই এখনও হয়নি। কিন্তু, ডিম-মাছ-মাংস বন্ধের মৌখিক বার্তায় হোটেল মালিকরা উদ্বিগ্ন। কারণ, সিকিমের উৎপাদকদের পক্ষে পর্যাপ্ত ডিম-মাছ-মাংসের জোগান দেওয়া এখন অসম্ভব।

কিশোর সাহা

শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০১৮ ০৩:০৩
—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

আনাজ, ফল আমদানি বন্ধের কথা আগেই ঘোষণা করেছিল সিকিম সরকার। এ বার তারা ডিম, মাছ, মাংস আমদানিও কমিয়ে দেওয়ার পথে হাঁটছে। সিকিম হোটেল মালিকদের একাংশ জানিয়েছেন, চলতি মাসের গোড়া থেকেই তাঁদের সরকারি তরফে মৌখিক ভাবে জানানো হয়েছে, এপ্রিল থেকে সিকিমের বাজার থেকেই কিনতে হবে এগুলি। ফলে হোটেল মালিকদের মধ্যে তো বটেই, আশঙ্কা তৈরি হয়েছে শিলিগুড়ির পাইকারি ব্যবসায়ীদের মধ্যেও।

যদিও সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী পবন চামলিঙের রাজনৈতিক উপদেষ্টা কে টি গ্যালসেন বলেছেন, ‘‘কারও উদ্বেগের কারণ নেই। সিকিম জৈব রাজ্য হিসেবে ঘোষিত হয়েছে বলে বাইরের আনাজ-ফল ঢোকা ৩১ মার্চের পরে বন্ধ করার কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। ডিম-মাছ-মাংসের জোগানও স্থানীয় ভাবে বাড়ানোর চেষ্টা শুরু হয়েছে। কারও কোনও অসুবিধে না করে সবই পর্যায়ক্রমে হবে।’’

গত নভেম্বরে সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন, ২০১৮ সালের এপ্রিল থেকে সিকিমের হোটেলগুলিকে আনাজ ও ফল স্থানীয় বাজার থেকেই কিনতে হবে। সিকিমে সাড়ে ৫ লক্ষ বাসিন্দার চাহিদার তুলনায় অনেকটাই বেশি আনাজ আনাজ উৎপাদিত হয় রাজ্যে। সিকিম সরকার মনে করছে, বাসিন্দাদের পাশাপাশি পর্যটকদের চাহিদাও এই উৎপাদনে মিটে যাবে। সিকিমের সরকারি সূত্রের খবর, সব দিক খতিয়ে দেখে হয়তো কিছু আনাজ ও ফলে (পটল, তরমুজ, বেগুন, পেয়ারা ইত্যাদি, যার উৎপাদন তুলনায় সিকিমে কম) ছাড় দেওয়া হতে পারে।

আনাজ বন্ধের ঘোষণায় তেমন হইচই এখনও হয়নি। কিন্তু, ডিম-মাছ-মাংস বন্ধের মৌখিক বার্তায় হোটেল মালিকরা উদ্বিগ্ন। কারণ, সিকিমের উৎপাদকদের পক্ষে পর্যাপ্ত ডিম-মাছ-মাংসের জোগান দেওয়া এখন অসম্ভব। রুই-কাতলার মতো মাছ সিকিমে খুব বেশি হয় না। দিশি মুরগি, পাঁঠার খামারও কম। তাই মূল্যবৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে। তাতে পর্যটকদের বাড়তি টাকা গুনতে হবে। তবে হোটেল মালিক সংগঠনের তরফে রোশন শ্রেষ্ঠ জানান, আমিষ-পণ্য নিয়ে সরকারি তরফে কোনও ঘোষণা না হওয়া অবধি আশঙ্কার কিছু নেই।

এর ধাক্কা পড়তে পারে সমতলেও। শিলিগুড়ির ডিম-মাছ পাইকাররা এর মধ্যেই বেশ কয়েক কোটি টাকা ক্ষতির আশঙ্কা করছেন। এখানকার বাজার থেকে রোজ লক্ষাধিক ডিম, কয়েকশো কেজি মাছ-মাংস যায় সিকিমে। শিলিগুড়ির ডিম-মাছের পাইকারি ব্যবসায়ী সুমিত আনেজা বলেন, ‘‘আমাদের মোট লেনদেনের ২০ শতাংশ সিকিমের বাজারের সঙ্গে। সেটা হঠাৎ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেলে সমস্যা তো হবেই। উপরন্তু, সিকিমের ব্যবসায়ীদের কাছে আমাদের বিপুল অঙ্কের টাকা পাওনা রয়েছে। সেই টাকাই বা ফেরত পাব কী ভাবে?’’

এমনিতেই গত জুন থেকে লাগাতার পাহাড় বন্‌ধে বিপুল ক্ষতি হয়েছে পাইকারদের। তার উপরে তখন সমতলের গাড়ি সিকিমে আটকে দেওয়া ও সিকিমের গাড়ি দেখলে আনাজ নিয়ে যেতে না দেওয়ার অভিযোগও কম ওঠেনি। কিন্তু, সেই দূরত্ব কমিয়ে সিকিম-পশ্চিমবঙ্গের ব্যবসায়ীরা ফের কাছাকাছি হয়েছেন। এ ধরনের সিদ্ধান্তে ফের দূরত্ব বাড়ার আশঙ্কা করছে ব্যবসায়ী মহল।

শিলিগুড়ির পাইকাররা গোটা বিষয়টি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপ চাইবেন বলে জানিয়েছেন। শিলিগুড়ির ট্যুর অপারেটর সম্রাট সান্যাল বলেন, ‘‘সিকিমের অর্থনীতি পর্যটন নির্ভর। তাই আশা করি, হোটেল মালিক, ট্যুর অপারেটরদের মতও নেওয়া হবে।’’

Sikkim Import Pawan Kumar Chamling পবন চামলিঙ সিকিম
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy