আগামী ১১ ডিসেম্বর ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) প্রক্রিয়ার প্রাথমিক ধাপ শেষ হবে। খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশিত হবে ১৬ ডিসেম্বর। কিন্তু সেই দিন পর্যন্ত অপেক্ষা না-করে তার আগেই বাদ পড়তে চলা ভোটারদের জন্য নথি তৈরিতে ব্লকে ব্লকে শিবির করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। বুধবার মালদহের গাজোলের জনসভা থেকে সেই ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
দলীয় সমাবেশের মঞ্চ থেকে মমতা বলেন, ‘‘১২ ডিসেম্বর থেকে ব্লকে ব্লকে ‘মে আই হেল্প ইউ’ ক্যাম্প তৈরি হবে। সেখানে আপনারা যাবেন। যাঁর যা শংসাপত্র দরকার, সেখান থেকে নিয়ে নেবেন।’’ এই কাজে দলের কর্মীদের সর্বাত্মক ভাবে মাঠে থাকার বার্তা দিয়েছেন তৃণমূলনেত্রী। কর্মীদের বলেছেন, নাওয়াখাওয়া ভুলে সেই কাজ করতে হবে।
শাসকদল সূত্রের খবর, পরামর্শদাতা সংস্থার সমীক্ষার ভিত্তিতে সংগঠনের হাতে তথ্য রয়েছে, কাদের নাম খসড়া তালিকায় কেন বাদ পড়তে পারে। তার পরে নতুন করে নাম তোলার জন্য কী কী করতে হবে, সেই প্রস্তুতিও তৃণমূল সাংগঠনিক ভাবে করে রেখেছে। তবে এখানে সমান্তরাল ভাবে প্রশাসনের সহযোগিতাও প্রয়োজন। সেই কাজই ১২ ডিসেম্বর থেকে শুরু করার ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা।
আরও পড়ুন:
মালদহ সংখ্যালঘু অধ্যুষিত জেলা। এসআইআর পর্বে সেই জেলায় দাঁড়িয়ে মমতা সাধারণ মানুষকে অভয় দিতে চেয়েছেন। বুধবার ফের তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গে কোনও ‘ডিটেনশন ক্যাম্প’ তিনি করতে দেবেন না। বৃহস্পতিবার মমতার কর্মসূচি রয়েছে সংখ্যালঘু অধ্যুষিত অন্য জেলা মুর্শিদাবাদে। এসআইআর প্রক্রিয়ায় মানুষের হয়রানির প্রসঙ্গ তুলে মমতা অভিযোগ করেন, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের নির্দেশেই এ সব হচ্ছে। তবে তিনি এ-ও দাবি করেছেন, কোনও কৌশল করেই তিনি এবং তাঁর দল বিজেপি-কে বাংলা দখল করতে দেবেন না। বিজেপি-কে ‘ছারপোকা’ বলেও কটাক্ষ করেন মমতা। তাঁর কথায়, ‘‘এই ছারপোকাদের গণতান্ত্রিক ভাবে মারতে হবে।’’
গাজোলের সভা থেকে বুধবার মমতা ইঙ্গিত দিয়েছেন, ভোটের আগে তিনি নতুন কোনও জনকল্যাণমূলক প্রকল্প ঘোষণা করতে পারেন। সভামঞ্চে তিনি তথ্য দিয়ে জানাচ্ছিলেন, কোন সামজিক প্রকল্পে কত মানুষ সুবিধা পান। সেই সূত্রেই ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’-এর কথা বলেন তিনি। তার পরেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আগামী দিন হয়তো আরও কিছু করতে পারি। তবে এখন যেটা আছে, সেটাই বলছি!’’ মমতা জানিয়েছেন, ২০২১ সাল থেকে আগামী ভোট পর্যন্ত সময় ধরলে দেখা যাবে ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ প্রকল্পে রাজ্যের সাধারণ শ্রেণিভুক্ত মহিলারা ৬০ হাজার টাকা পেয়েছেন। তফসিলি জাতি ও উপজাতিভুক্তেরা পেয়েছেন ৭৫ হাজার টাকা। বিহারে ভোটের আগে ১০ হাজার টাকা দেওয়াকে কটাক্ষ করে মমতা বলেন, ‘‘আমিও অঙ্ক জানি। এখানে আমরা দিই। আর ওখানে ভোটের আগে ১০ হাজার, ভোটের পরে বুলডোজ়ার!’’