Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
Congress

রাজ্যে শূন্য হয়েও কংগ্রেস গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের রাজনীতি থেকে বেরোয়নি, তোপ সোমেনপুত্রের

রাজ্যপাল ধনখড় এবং প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা মান্নানের ঘনিষ্ঠতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। এ কারণেই সংখ্যালঘু ভোটকংগ্রেসের হাতছাড়া হয়েছে বলেই মন্তব্য করেছেন রোহন।

রোহন মিত্র।

রোহন মিত্র। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০২১ ১৭:০৩
Share: Save:

বিধানসভা নির্বাচনে ভরাডুবির পরেও প্রদেশ কংগ্রেসনেতৃত্ব গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের বৃত্ত থেকে বেরোতে পারছেন না। প্রদেশ কংগ্রেসেরপ্রয়াত প্রাক্তনসভাপতি সোমেন মিত্রের ছেলে রোহন বৃহস্পতিবার এমন অভিযোগই তুলেছেন রাজ্য নেতৃত্বের বিরুদ্ধে। বিষয়টি নিয়ে নেটমাধ্যমে সরব হওয়ার পাশাপাশি তিনি এআইসিসি নেতৃত্বকেও নিজের বক্তব্য জানিয়েছেন। প্রদেশ সভাপতি অধীর চৌধুরীর সঙ্গে তাঁর কোনও সমস্যা নেই বলে জানালেও রোহন টুইটারে তাঁর অভিযোগের ছত্রে ছত্রে নাম না করে রাজ্যের প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানকে নিশানা করেছেন। আনন্দবাজার ডিজিটালের কাছে যদিও তিনি মান্নানের নাম করেই অভিযোগ করেছেন।

বৃহস্পতিবার সকালে পর পর চারটি টুইট করেন রোহন। প্রথমে তিনি লিখেছেন, ‘প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির সঙ্গে আমার কোনও সমস্যা নেই। যদিওসেপ্টেম্বর মাস থেকে তিনি আমার সঙ্গে কোনওরকম কথাবার্তা বলেননি। তা সত্ত্বেও তাঁর সভাপতির আসনকে আমি সম্মান করি। কিন্তু প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা যা করছেন তা অত্যন্ত নক্ক্যারজনক’। পরের টুইটে রোহন তাঁর প্রয়াত বাবার কথা উল্লেখ করে লিখেছেন, ‘আমার বাবা তাঁর এই পছন্দটির জন্য ঘনিষ্ঠমহলে আফসোস করতেন’। রাজনৈতিক মহলের একাংশের ব্যাখা, গত বিধানসভা নির্বাচনের পর বিরোধী দলনেতা মনোনয়নের সময় মান্নান এবং মানস ভুঁইয়ার মধ্যে সোমেনের ‘ভোট’ গিয়েছিল চাঁপদানির বিধায়কের পক্ষে। সেই ‘পছন্দে’র জন্যই সোমেন ‘আফসোস’ করতেন বলে বোঝাতে চেয়েছেন রোহন।পরেরটুইটে প্রদেশ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক রোহন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় এবং প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা মান্নানের ঘনিষ্ঠতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। এ কারণেই সংখ্যালঘু ভোটকংগ্রেসের হাতছাড়া হয়েছে বলেই মন্তব্য করেছেন রোহন।

রোহন তাঁর মতামত এআইসিসি নেতৃত্বকেও জানিয়েছেন বলে দাবি করেছেন। গত সোমবার এক ভার্চূয়াল বৈঠকে সলমন খুরশিদ, মণীশ তিওয়ারি এবং তামিলনাড়ুর এক বিধায়ক-সহ এআইসিসি-র অন্য এক প্রতিনিধি কথা বলেন রোহনের সঙ্গে। সেখানেই মান্নানের রাজনীতির ধরন নিয়ে অভিযোগ করেন তিনি। টুইটারে মান্নানের নাম না নিলেও রোহন আনন্দবাজার ডিজিটালকে বলেন, ‘‘দল আমার কাছে হারের কারণ জানতে চেয়েছিল। আমি বলেছি, আমরা সকলেই এই বিপর্যয়ের জন্য দায়ী। আমার সঙ্গে প্রদেশ সভাপতি গত সেপ্টেম্বরের পর আর কথা বলেননি। তাঁর ভূমিকা বিচার করা আমার কাজ নয়। কিন্তু আব্দুল মান্নানের অবস্থান নিয়ে আমার প্রশ্ন রয়েছে। ২০১৯-এর নভেম্বরে উপনির্বাচনে তিনি এআইসিসি-কে চিঠি দিয়ে বলেন তৃণমূল ও বামেদের সঙ্গে জোট করতে হবে। আবার ২০২০-তে সেই তিনিই আবার তৃণমূলবিরোধী হয়ে গেলেন। ওঁর অবস্থান কী? সেটাই স্পষ্ট নয়।’’

রোহনের আরও অভিযোগ, ‘‘যুব কংগ্রেস যখন রাজভবনের বাইরে আন্দোলন করছে, তখন মান্নানসাহেব রাজভবনে গিয়ে চা পান করছেন। রাজ্যপালের ভুমিকা রাজ্যের মানুষ বুঝে গিয়েছেন। রাজভবনের সঙ্গে রাজ্য কংগ্রেসের নেতার এমন আচরণের কারণেই মালদহ, মুর্শিদাবাদ ও উত্তর দিনাজপুর জেলার মানুষ আমাদের পাশ থেকে সরে গিয়েছেন।’’ তাঁর কথায়, ‘‘রাজ্যে শূন্য হয়ে যাওয়ার পরেও প্রদেশ কংগ্রেস গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসতে পারছে না। শূন্য থেকে আর কত নীচে নামব আমরা?’’

ঘটনাচক্রে বুধবার বিকেলেও মান্নানরাজ্যপালের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে রাজভবনে গিয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার রোহনের এই অভিযোগ প্রসঙ্গে তাঁর সঙ্গে যোগাযগ করা হয়। তিনি বলেন, ‘‘এ প্রসঙ্গে আমি কোনও মন্তব্য করব না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Congress Abdul Mannan Rohan Mitra
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE