বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়
বরযাত্রী নয়। ঠিক কনেযাত্রীও নয়। তবে সহযাত্রী তো বটেই! সতীর্থের বিয়েতে তাই যাতায়াতের সুবিধার্থে দরাজ হচ্ছেন বিধানসভার স্পিকার।
মুর্শিদাবাদের বড়ঞার কংগ্রেস বিধায়ক প্রতিমা রজকের বিয়ে আগামী ২২ মে। বিধানসভার মধ্যে অল্প দিন আগে শাসক-বিরোধী ধুন্ধুমারে অপমানিত হয়েছিলেন প্রতিমা। তাঁর অভিযোগ স্পিকার তো বটেই, রাজ্য মহিলা কমিশনেও জমা হয়ে আছে। কিন্তু শুভ অনুষ্ঠানের সময়ে সে সব বাছবিচার করেননি কংগ্রেস বিধায়ক। সব দলের সব বিধায়ককেই আমন্ত্রণ জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট দলনেতাদের কাছে কার্ড দিয়ে। দল বেঁধে বিধায়কেরা যাতে বিবাহ বাসরে যাত্রা করতে পারেন, তার জন্যই এ বার মুশকিল আসান হচ্ছেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়।
কংগ্রেস পরিষদীয় দলের উপ-দলনেতা নেপাল মাহাতো-সহ কিছু বিধায়ক দ্বারস্থ হয়েছিলেন স্পিকারের। তাঁদের আর্জি, দূরের জেলায় বিধায়কদের একসঙ্গে যাওয়ার জন্য কোনও ব্যবস্থা বিধানসভার তরফে করা যায় না? স্পিকার তাঁদের আশ্বস্ত করেছেন, লিখিত ভাবে একটা আবেদন চাই। ব্যবস্থা হয়ে যাবে। বিধানসভার জন্য কয়েক বছর আগে একটি বাস উপহার দেওয়া হয়েছিল প্রয়াত প্রাক্তন বিধায়ক আনন্দীলাল পোদ্দারের পরিবারের তরফে। বিধানসভা সূত্রের খবর, সেই বাসকেই ‘রেডি’ করা হচ্ছে প্রতিমার বিয়ের আসরে বিধায়কদের নিয়ে
যাওয়ার জন্য।
বিধায়কের বিয়ের আসর খুব একটা মেলে না। এমন অনুষ্ঠান পেয়ে স্পিকার তাই কোনও কার্পণ্য করছেন না। তাঁর কথায়, ‘‘বিধায়কেরা এসেছিলেন আমার কাছে। আমি বলেছি, আবেদন করলে বিবেচনা করা হবে। বিধানসভায় নতুন বাস তো একটা আছে। ওটাই না হয় যেতে পারে।’’ তিনি নিজে কি যাবেন? স্পিকার বিমানবাবুর সহাস্য জবাব, ‘‘ইচ্ছে তো ছিল! বিধানসভার অধিবেশন বসে যাবে ১৯ তারিখ থেকে। তার মাঝখানে কী করে যাই বলুন?’’ প্রতিমা যে দিন ছাদনাতলায় যাবেন, বামেরা সে দিন অভিযান করে যাবেন নবান্ন। ফলে, বাম বিধায়কদের মুর্শিদাবাদমুখী হওয়ার সুযোগ নেই। কংগ্রেস, তৃণমূল এবং অন্যান্য দলের বিধায়কেরা যাঁরা আগ্রহী, তাঁরাই যাবেন।
বিধানসভার কর্মী মহলে একটা উদ্বেগ অবশ্য আছে। সেই বাসের ‘মাইলেজ’ নেহাতই কম! প্রতি লিটার তেলে বড় জোর তিন কিলোমিটার! এমন হাতির খিদে নিয়ে মুর্শিদাবাদ যাওয়া-আসা রেস্তসাপেক্ষ বৈকি! তা ছাড়া, বাসটি এখনও মোটর ভেহিকেল্স-এর রেজিস্ট্রেশন পায়নি। টেম্পোরারি নম্বরই তার পরিচয়। কর্মী মহলে কেউ কেউ জানাচ্ছেন, কিছু দিন আগেই বিধানসভার অন্য একটি বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছিল প্রাক্তন সচিবের মেয়ের বিয়েতে যাওয়ার জন্য। কলকাতা থেকে আন্দুল রোড যেতেই সেই বাস হাঁফ ছুটিয়ে দিয়েছিল! এ বার তাই বিপুল তেলের বন্দোবস্ত রেখেই বিবাহ অভিযান করতে হবে বলে মনে হচ্ছে তাঁদের!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy