একাধিক কমিটি গড়ে বা পুনর্গঠন করে উত্তরবঙ্গের প্রায় সব নেতানেত্রীকে জায়গা দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু দার্জিলিং জেলা তৃণমূলের সভাপতি কে হবেন, সেই প্রশ্নের এখনও কোনও জবাব মেলেনি। তবে মনে করা হচ্ছে, বৃহস্পতিবার তৃণমূল নেত্রী শিলিগুড়ি ছাড়ার আগে বা অব্যবহিত পরে জেলা তৃণমূল সভাপতির নাম ঘোষণা করা হতে পারে।
গত নভেম্বরেও মমতার উত্তরবঙ্গ সফরের শেষ দিনে এই জেলা সভাপতি পদ থেকে গৌতম দেবকে সরানোর কথা ঘোষণা করা হয়। বদলে আনা হয় শিলিগুড়ি পুরসভার কাউন্সিলর রঞ্জন সরকারকে। কিন্তু রঞ্জনবাবুও দায়িত্ব নিয়ে বদলাতে পারেননি দলের ভাগ্য। যেখানে তৃণমূল এ বার কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়িতে ভাল ফল করেছে, সেখানে দার্জিলিং জেলায় তাদের ঝুলি শূন্য। বস্তুত, ২০১১ সালে বিধানসভা ভোটে শিলিগুড়ি আসনটি অশোক ভট্টাচার্যের কাছ থেকে কেড়ে নেওয়ার পর থেকে আর এখানে কোনও সাফল্য নেই শাসকদলের। গত পাঁচ বছরে শিলিগুড়িতে পুরভোটে হার হয়েছে তৃণমূলের। হার হয়েছে মহকুমা পরিষদের ভোটেও। শেষ পর্যন্ত হাতছাড়া হয়েছে শিলিগুড়ি বিধানসভা কেন্দ্রও। তৃণমূল সূত্রের খবর, এই অবস্থায় জেলা তথা শিলিগুড়িতে সংগঠন চাঙ্গা করতে নতুন জেলা কমিটি গঠিত হচ্ছে।
কিন্তু কে হবেন দার্জিলিং জেলা সভাপতি? কোনও নতুন মুখ, নাকি পুরনো কেউ? একপক্ষের মুখে শোনা যাচ্ছে ভাইচুং ভুটিয়ার নাম। ভাইচুংকে ইতিমধ্যেই দলের রাজ্য নেতৃত্ব শিলিগুড়িতে বেশি সময় দিতে বলেছেন। বর্তমান সভাপতি রঞ্জনবাবুকে রেখে দিয়ে জেলায় বিধানসভা ভিত্তিক কমিটি গড়ার কথাও দলনেত্রী ভাবনাচিন্তা করছেন বলে দাবি একটি সূত্রের। সভাপতি হিসেবে নাম শোনা যাচ্ছে প্রতুল চক্রবর্তী-সহ বেশ কয়েক জনের। আবার এক পক্ষের দাবি, রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী গৌতমবাবুকে ফের দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে।
তৃণমূলের ওই সূত্রটির বক্তব্য, সভাপতির দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন গৌতমবাবুই। তবে মাত্র সাত মাস আগে যাকে পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল, তাঁকে ফিরিয়ে আনা হবে কি না, সে প্রশ্ন উঠেছে। তবে এর পাল্টা হিসেবে বলা হচ্ছে, দীর্ঘদিন ধরে জেলা সভাপতি থাকা গৌতমবাবুর সংগঠন সামলানোর অভিজ্ঞতার ধারে কাছে কেউ নেই। গৌতমবাবু অবশ্য এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
দলীয় সূত্রের খবর, এ বারের বিধানসভা ভোটে লড়ে হারা কয়েক জন প্রার্থী অন্তর্ঘাতের অভিযোগ তুলেছিলেন। দলের বিভিন্ন সংগঠন, পঞ্চায়েত সদস্য, কাউন্সিলরদের বিরুদ্ধে ভোটের সময় ‘কাজ’ না করা বা ভোট ‘কমিয়ে’ দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। সে অভিযোগ পৌঁছেছে দলের রাজ্য কমিটির কাছেও। নতুন সভাপতি নিয়োগ হলে, নয়া জেলা কমিটিও গঠিত হবে। অন্তর্ঘাতের অভিযোগে ক্ষুব্ধ দলনেত্রী কয়েক জন নেতার নাম করে তাঁদের কমিটিতে না রাখার নির্দেশও দিয়েছেন বলে খবর।
দার্জিলিং জেলা কমিটি গঠনের পরে, পাহাড়ের তিন মহকুমার জন্য কাউকে সহ-সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে বলে জানা গিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy