কুড়ি দিন পার। দু’দেশের মধ্যে সংঘর্ষবিরতিও হয়েছে। তবে পাকিস্তান রেঞ্জার্সের হাতে বন্দি সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) জওয়ান, হুগলির রিষড়ার বাসিন্দা পূর্ণমকুমার সাউয়ের মুক্তি মেলেনি সোমবারেও। জট কবে কাটবে, বুঝতে পারছে না তাঁর পরিবার। সোমবার সকালে সমাজমাধ্যমে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উদ্দেশে একই প্রশ্ন করেন কংগ্রেস নেতা তথা এআইসিসি সদস্য পবন খেরা। দু’দেশের মধ্যে সংঘর্ষবিরতিতে ট্রাম্প মধ্যস্থতা করেছেন বলে দাবি।
পূর্ণমের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী রজনী বলেন, ‘‘স্বামীর কোনও খবর পাইনি। শুনেছি, এ দিন দু’দেশের মধ্যে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। কী হয়েছে, জানি না! সেখানে পূর্ণমকে নিয়ে কথা হয়েছে কি না, তা-ও বুঝতে পারছি না।’’ পূর্ণমকে অবিলম্বে দেশে ফেরানোর দাবিতে এ দিন সন্ধ্যায় কোন্নগরের ডিওয়াল্ডি এবং ধাড়সায় জিটি রোডে বিক্ষোভ দেখান এলাকাবাসী। তাঁরা জানান, ওই জওয়ান অবিলম্বে মুক্তি না পেলে তাঁরা কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে দরবার করবেন। বিক্ষোভে শামিল হন কোন্নগরের দুই তৃণমূল পুরসদস্য। পূর্ণমের মুক্তির ব্যাপারে হস্তক্ষেপের আর্জি জানিয়ে গত শুক্রবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে ই-মেল করেছিল ‘অল বেঙ্গল সিটিজেনস ফোরাম’ নামে একটি সংগঠন। রবিবার সরাসরি রজনীকে দু’বার ফোন করে পরিবারের খোঁজখবর নেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশে থাকার বার্তা
দেন তিনি।
পহেলগামে জঙ্গি হানার পর দিন পঠানকোটে ভুল করে পাকিস্তানে ঢুকে গাছের তলায় বিশ্রাম নিচ্ছিলেন পূর্ণম। তখনই পাক রেঞ্জার্স তাঁকে ধরে। সীমান্তে এমন কিছু হলে দু’দেশের সীমান্ত রক্ষীদের মধ্যে ‘ফ্ল্যাগ মিটিং’-এর পরে সংশ্লিষ্ট জওয়ানকে মুক্ত করে দেওয়াই দস্তুর। কিন্তু পূর্ণমকে ছাড়েনি পাকিস্তান। যুদ্ধের আবহে পরিস্থিতি জটিল হয়। তবে সংঘর্ষ বিরতিতে সেই পরিস্থিতি কিছুটা সহজ হয়েছে বলে পূর্ণমের পরিবার মনে করছে। নয়াদিল্লিতে বিএসএফের শীর্ষ কর্তারা জানান, যুদ্ধের আবহে ‘ফ্ল্যাগ মিটিং’ হয়নি। তবে বিএসএফের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক চেষ্টা হচ্ছে, দ্রুত পাক রেঞ্জার্স কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকে বসার। আশা, সমাধান সূত্র মিলবে। পূর্ণমকে নিরাপদে ফেরাতে চেষ্টা করা হবে বলে আশ্বাস দেন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বও।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)