Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Cyclone Yaas

ক্ষতিপূরণের দাবি যাচাই অ্যাপ-অস্ত্রে

সরকার আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ‘দুয়ারে ত্রাণ’ কর্মসূচি পরিচালিত হবে পুরোপুরি সরকারি তত্ত্বাবধানে। পুরসভা বা গ্রাম পঞ্চায়েত ভবনে শিবির হবে না।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০২১ ০৬:১৮
Share: Save:

ক্ষতিপূরণের টাকা যাতে জলে না-যায়, সেই জন্য প্রযুক্তি-নির্ভর যাচাই পদ্ধতির প্রয়োগ নিশ্চিত করতে চাইছে রাজ্য সরকার। মঙ্গলবার রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী এই নিয়ে বৈঠক করেন বিভিন্ন জেলা প্রশাসনের সঙ্গে। সেই বৈঠকেই ত্রাণ থেকে শুরু করে বন্যা মোকাবিলার প্রস্তুতি নিশ্চিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সরকার আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ‘দুয়ারে ত্রাণ’ কর্মসূচি পরিচালিত হবে পুরোপুরি সরকারি তত্ত্বাবধানে। পুরসভা বা গ্রাম পঞ্চায়েত ভবনে শিবির হবে না। বরং স্কুল-কলেজের মতো ভবনগুলিকে এ কাজে ব্যবহার করবে প্রশাসন। এ দিন জেলা প্রশাসনগুলিকে সে-কথা ফের মনে করিয়ে দেন মুখ্যসচিব। স্থির হয়েছে, ক্ষয়ক্ষতির নিখুঁত যাচাইয়ের জন্য অ্যাপ-নির্ভর একটি পদ্ধতি অনুসরণ করা হবে। কেউ তাঁর বাড়ির ক্ষতি বাবদ ক্ষতিপূরণ চেয়ে দুয়ারে ত্রাণের শিবিরে আবেদন করলে বিডিও-র একটি যাচাই দল সেই প্রযুক্তি নিয়ে তাঁর বাড়িতে গিয়ে বাস্তব পরিস্থিতি খতিয়ে দেখবে। বাড়ির ক্ষয়ক্ষতির ছবি এবং ‘জিও ট্যাগ’ করে তা আপলোড করা হবে নির্দিষ্ট অ্যাপে।

আমপানের পরে ক্ষতিপূরণ বিলি নিয়ে বিস্তর অনিয়মের অভিযোগ উঠেছিল। বিশেষত ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির প্রকৃত দাবিদার অনেক ক্ষেত্রে সরকারি ক্ষতিপূরণ থেকে বঞ্চিত হয়েছিলেন। অভিযোগ, ‘ভুয়ো’ আবেদনকারীরা নিজেদের প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত
দাবি করে অর্থ হাতিয়ে নিয়েছিল। পরে মুখ্যমন্ত্রী নিজে হস্তক্ষেপ করে পরিস্থিতি আয়ত্তে আনেন। এ বার তাই শুরু থেকেই বিশেষ ভাবে সতর্ক প্রশাসন। সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, প্রধানত সেই কারণেই এ বার ক্ষতিপূরণ বিলির পুরো প্রক্রিয়া রাখা হচ্ছে সরকারি অফিসারদের হাতে। এ বার আবেদন করতে হবে ক্ষতিগ্রস্তকেই। কারও সুপারিশ গ্রাহ্য হবে না। প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, “প্রকৃত জিও-ট্যাগ ও ছবি থাকলে আবেদনপত্র যাচাইয়ে সুবিধা হয়। ফলে কেউ ছোট ক্ষতিকে বড় করে দেখাতে পারবে না অথবা ক্ষতি না-হয়েও নিজেকে ক্ষতিগ্রস্ত বলে দাবি তোলা যাবে না।”

দক্ষিণ ও উত্তর ২৪ পরগনা, দুই মেদিনীপুর এবং হাওড়ার একাংশে শিবির হবে। অন্য যে-সব এলাকায় টর্নেডোর দাপটে বাড়িঘরের ক্ষতি হয়েছে, সেখানকার ক্ষতিগ্রস্তদের কী ভাবে আবেদন করতে হবে, শীঘ্রই তা জানিয়ে দেবে প্রশাসন।

সরকারের সিদ্ধান্ত, নির্দিষ্ট কোনও এলাকায় কৃষির ৩৩% বা তার বেশি ক্ষতি হলে সংশ্লিষ্ট এলাকাকে ‘নোটিফায়েড’ বা বিজ্ঞাপিত বলে চিহ্নিত করতে পারেন জেলাশাসক। তেমন ‘নোটিফায়েড’ এলাকার কোনও কৃষক যদি কৃষকবন্ধু প্রকল্পের আওতায় থাকেন, তাঁকে আলাদা ভাবে ক্ষতিপূরণের আবেদন করতে হবে না। সরাসরি ক্ষতিপূরণ পাবেন তিনি। ওই সব এলাকার কেউ কৃষকবন্ধুর আওতায় না-থাকলে আবেদনপত্র গ্রহণ করে তাঁকে ওই প্রকল্পের আওতায় আনা হবে। ‘নোটিফায়েড’ এলাকার বাইরের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের অবশ্য ক্ষতিপূরণের জন্য নির্দিষ্ট পদ্ধতি মেনেই আবেদন করতে হবে।

মুখ্যসচিব এ দিন সম্ভাব্য বন্যা পরিস্থিতি নিয়েও সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন জেলাশাসকদের। তিনি জানান, বিভিন্ন নদীবাঁধের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে তা সামাল দেওয়ার জন্য নির্দিষ্ট দল প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

compensation Cyclone Yaas
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE