স্কুলের সহপাঠিনীকে কটূক্তি করেছিল এক কিশোর। এই অপরাধে ওই কিশোরকে খুঁটিতে বেঁধে মারধর করে, বিদ্যুতের শক দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ওই ছাত্রীর পরিবারের বিরুদ্ধে। ওই ছাত্রের যৌনাঙ্গে আঘাত করে, হাতুড়ি দিয়ে হাতের আঙুলে আঘাত করা হয়। সংজ্ঞাহীন অবস্থায় ওই ছাত্রকে উদ্ধার করে মাদারিহাট থানার পুলিশ। সে এখন শিলিগুড়ির নার্সিং হোমে ভর্তি।
বৃহস্পতিবার ফালাকাটা থানায় ওই ছাত্রের পরিবারের তরফে ১০ জনের নামে অভিযোগ করা হয়। ছেলেকে উদ্ধার করতে গেলে তাঁর মাকে মারধর করে শ্লীলতাহানি করা হয়েছে বলেও অভিযোগ হয়েছে। তার দু’দিন পরেও অভিযুক্তেরা গ্রামে ঘুরে বেড়াচ্ছে, দাবি আক্রান্তের পরিজনদের।
পুলিশের দাবি, অভিযুক্তেরা পলাতক। যদিও শনিবার নিজেদের বাড়িতেই খুঁজে পাওয়া গেল মূল অভিযুক্ত, ওই ছাত্রীর মেসোমশাইকে। পুলিশ কেন খুনের চেষ্টার অভিযোগ দায়ের না করে কেবল মারধর
ও শ্লীলতাহানির মামলা দায়ের করেছে, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
গত মঙ্গলবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটে ফালাকাটা থানার উমাচরণপুর গ্রামে। স্থানীয় এক স্কুলের দশম শ্রেণির ওই ছাত্রী তার মেসোমশাইকে অভিযোগ করে, তার সহপাঠী তার উদ্দেশে কটূক্তি করেছে। তার পরেই ওই কিশোরকে ধরে একটি বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে প্রায় আধঘণ্টা মারধর করেন ছাত্রীর মেসোমশাই। তারপর ছাত্রটিকে একটি মোটরবাইকে চাপিয়ে মাদারিহাট থানা এলাকায় ওই ছাত্রীর বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। অভিযোগ, সেখানে একটি ঘরে ওই ছাত্রকে ঢুকিয়ে তার হাতের আঙুল হাতুড়ি দিয়ে ভেঙে দেওয়া হয়। তার যৌনাঙ্গে আঘাত করা হয়, শরীরের নানা অংশে বিদ্যুতের শক দেওয়া হয়। ওই ছাত্রের মা ওই বাড়িতে গেলে তাঁকেও মারধর করা হয়।
ঘটনার কথা স্বীকার করেছেন ফালাকাটার শালকুমার গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য সিপিএম নেতা ওহেদুল ইসলাম। তাঁর বাড়ি লাগোয়া বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধেই ওই কিশোরকে পেটানো হয়। পঞ্চায়েত সদস্য কেন সে সময় বাধা দিলেন না? ওহেদুল বলছেন, ‘‘ওই সময় বাড়ি ছিলাম না।’’
পেশায় মুরগি ব্যবসায়ী ওই কিশোরের বাবা বলেন, ‘‘ছেলের মুখ থেকে গলগলিয়ে রক্ত পড়ছিল। চিকিৎসকেরা বলেছেন বিদ্যুতের শক দেওয়াতে ওর অনেক ক্ষতি হয়েছে। ফুসফুসে রক্ত জমাট বেঁধেছে। অপারেশন করতে হবে।’’ গ্রামের লোকজনের কাছ থেকে টাকা তোলার চেষ্টা করছেন তিনি। নার্সিং হোম সূত্রে খবর, ছেলেটির দেহে প্রচণ্ড আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। আঙুলে চোট থাকলেও হাড় ভাঙেনি।
এরই মধ্যে অভিযুক্তেরা গ্রামে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে এবং অভিযোগ তুলতে চাপ দিচ্ছে বলেও অভিযোগ ওই কিশোরের পরিজনের। শনিবার মূল অভিযুক্ত, ওই ছাত্রীর মেসোমশাইকে তাঁর নিজের বাড়িতেই পাওয়া গেল। তাঁর দাবি, তিনি ওই ছাত্রকে ধরলেও, মারধর বা বিদ্যুতের শক দেবার অভিযোগ মিথ্যা।
পুলিশের অবশ্য দাবি, মূল অভিযুক্তকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। ফালাকাটা ধানার আইসি ধ্রুব প্রধান বলেছেন, ‘‘পুলিশ গ্রামে গেলে অভিযুক্তেরা পালিয়ে যাচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy