Advertisement
E-Paper

মুখে ওড়না গুঁজে ক্লাসে ছাত্রীর শ্লীলতাহানি

স্কুল যাওয়া-আসার পথে মেয়ের শ্লীলতাহানির ভয়ে কাঁটা হয়ে থাকেন বাবা-মা। এ বার স্কুলের ভিতরে ফাঁকা ক্লাসরুমে এক ছাত্রীর শ্লীলতাহানি ঘটল। দশম এবং একাদশ শ্রেণির আট ছাত্র ওই ছাত্রীর মুখে ওড়না গুঁজে, তার পোশাক ছিঁড়ে নির্যাতন চালায়। সঙ্গে হুমকি দেয়, পুলিশের সঙ্গে জানাশোনা রয়েছে, অভিযোগ করে লাভ নেই।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০১৫ ০৪:১৪

স্কুল যাওয়া-আসার পথে মেয়ের শ্লীলতাহানির ভয়ে কাঁটা হয়ে থাকেন বাবা-মা। এ বার স্কুলের ভিতরে ফাঁকা ক্লাসরুমে এক ছাত্রীর শ্লীলতাহানি ঘটল। দশম এবং একাদশ শ্রেণির আট ছাত্র ওই ছাত্রীর মুখে ওড়না গুঁজে, তার পোশাক ছিঁড়ে নির্যাতন চালায়। সঙ্গে হুমকি দেয়, পুলিশের সঙ্গে জানাশোনা রয়েছে, অভিযোগ করে লাভ নেই।

বুধবার বীরভূমের নলহাটির একটি স্কুলে ওই ঘটনার কথা শিক্ষকদের জানালে তাঁরা ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া ছাড়া আর কিছুই করেননি। বৃহস্পতিবার কয়েকশো অভিভাবক জড়ো হয়ে অভিযুক্ত ছাত্রদের স্কুল থেকে বহিষ্কার দাবি করতে থাকেন। গোলমালের জেরে স্কুল বন্ধ হয়ে যায়। নির্যাতিত কিশোরী-সহ তিন ছাত্রী পুলিশের কাছে চার ছাত্রের নামে অভিযোগ দায়ের করে। স্কুল অবশ্য এখনও ওই ছাত্রদের বহিষ্কার করেনি। পরিচালন সমিতি এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানিয়েছে। পুলিশ রাত পর্যন্ত ওই ছাত্রদের গ্রেফতার করতে পারেনি।

বীরভূমের নলহাটির ভদ্রপুর মহারাজা নন্দকুমার হাইস্কুলে একাদশ শ্রেণির ওই তিন ছাত্রীর অভিযোগ, একাদশ ও দশম শ্রেণির কিছু ছাত্র বুধবার ইংরেজি ক্লাস চলার সময় উত্ত্যক্ত করছিল। শিক্ষককে জানালে তিনি ছাত্রদের ক্লাস থেকে শিক্ষক বের করে দেন। ওই তিন ছাত্রীর একজন জানায়, ‘‘অভিযোগ করায় ওরা খেপে ওঠে। আমি ক্লাসের বাইরে যেতেই একাদশ ও দশম শ্রেণির কয়েক জন ছেলে আমাকে জোরে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয়। আমি সামনে থাকা দশম শ্রেণির এক ছাত্রের গালে চড় কষাই।’’ কিছু পরে ওই তিনজন ছাত্রীর অন্য একজন দোতলা থেকে একতলায় গেলে, ওই ছাত্রদের মধ্যে জনা আটেক তাকে ঘিরে ধরে।

ওই ছাত্রীর অভিযোগ, ‘‘ওরা আমাকে ঘিরে ধরে টানতে টানতে পাশের একটি ফাঁকা ক্লাসঘরে নিয়ে যায়। চিৎকার করতে গেলে আমার মুখে ওড়না গুঁজে দেয়। তারপর শ্লীলতাহানি করে, পোশাক ছিঁড়ে দেয়। পালানোর সময় হুমকি দেয়, পুলিশে জানাশোনা আছে, অভিযোগ করে জব্দ করা যাবে না।’’ বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়ে ছাত্রীটি।

ঘটনার পরে ওই ছাত্রী বন্ধুদের নিয়ে এক শিক্ষককে ঘটনাটি জানালে, তিনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেন। বৃহস্পতিবার সকালে কয়েকশো অভিভাবক স্কুলের সামনে জড়ো হন। তাঁরা ওই ছাত্রদের অবিলম্বে স্কুল থেকে বহিষ্কার করার দাবিতে মাইকে স্লোগান দিতে শুরু করেন। পুলিশ আসে। গোলমালের জেরে স্কুলে পড়াশোনা বন্ধ থাকে। প্রধান শিক্ষক বামাপদ দাস সবাইকে নিয়ে আলোচনায় বসেন।

প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘‘ওই ছাত্রীরা অভিযুক্তদের মধ্যে একাদশ শ্রেণির দু’জন ও দশম শ্রেণির দু’জন ছাত্রকে শনাক্ত করতে পেরেছে। পুলিশের কাছে তাদের নামে অভিযোগ দায়ের করেছে। আমরাও তাদের স্কুল থেকে বহিষ্কারের কথা ভাবছি।’’ স্কুলের পরিচালন কমিটির সম্পাদক কাশীনাথ মণ্ডল জানান, শীঘ্রই পরিচালন সমিতি বৈঠক করে বহিষ্কারের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে।

ওই তিন ছাত্রীর অবশ্য অভিযোগ, ওই ছাত্রদের বিরুদ্ধে স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করেও ফল হয়নি। ওই ছাত্ররা বেশ কয়েক দিন ধরেই প্রার্থনার লাইনে, টিফিন খাওয়ার সময়ে, এমনকী ক্লাস চলাকালীন হয়রান করছে। এ বিষয়ে জানালে প্রধান শিক্ষক আর সহকারী প্রধান শিক্ষক একে অপরের কাছে পাঠিয়ে দিচ্ছেন ছাত্রীদের।

অভিভাবকদের অভিযোগ, প্রধান শিক্ষক-সহ শিক্ষকদের একাংশ সময়মতো স্কুলে আসেন না। তাই শৃঙ্খলা নেই। বহিরাগতরা ঢুকে স্কুলের ছাত্রদের মারধর করছে, টোকাটুকি চলছে। জেলায় ‘গণ্ডগোল-প্রবণ’ স্কুলের তালিকায় শীর্ষে ভদ্রপুর মহারাজা নন্দকুমার হাইস্কুল। জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) মহাদেব সোরেন বলেন, ‘‘ঘটনাটি স্কুল কর্তৃপক্ষের আমাকে জানানো উচিত ছিল। স্কুলে এ ধরনের ঘটনা বরদাস্ত করা যাবে না। খোঁজ নিচ্ছি।’’

Classmate Student molested school MostReadStories
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy