শিলিগুড়িতে আহত গহর আলি। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক
তৃণমূলের বিজয় মিছিল চলাকালীন সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রের গুলিবিদ্ধ হওয়ার পরে ২৪ ঘণ্টা কেটে গেলেও ওই দিন কার আগ্নেয়াস্ত্র থেকে গুলি ছিটকে ওই বালক জখম হল, তা এখনও পুলিশ জানতে পারেনি। উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরের বাসিন্দা গহর আলি নামে ওই বালকের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে রবিবার গভীর রাতে খালেক হোসেন নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রাধারগছ গ্রাম লাগোয়া মোহনখাঁ এলাকার বাসিন্দা খালেক সিপিএমের সমর্থক বলে পুলিশের দাবি। তবে ধৃতের কাছ থেকে কোনও আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়নি। বিরোধীদের অভিযোগ, তৃণমূলের চাপে পড়েই পুলিশ তদন্তকে অন্য পথে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে।
তবে গহরের অবস্থার উন্নতি হয়েছে। শিলিগুড়ির একটি নার্সিংহোমে তাকে ভর্তি করানো হয়েছিল। সেখানকার চিকিৎসক জানিয়েছেন, গুলি গহরের বুক ছুঁয়ে বেরিয়ে গিয়েছে।
চোপড়া বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী হামিদুল রহমানের জয় উদযাপন করতে রবিবার দুপুরে সুজালি গ্রাম পঞ্চায়েতের রাধারগছ এলাকায় বিজয় মিছিলের আয়োজন করেন স্থানীয় তৃণমূল নেতারা। তৃণমূলের নেতা কর্মীরা পটকা ফাটাতে ফাটাতে রাধারগছ গ্রাম দিয়ে বিজয় মিছিল করছিলেন। গহর বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে মিছিল দেখছিল। তার সামনে দিয়ে মিছিল চলে যেতেই সে রাস্তার ধারে লুটিয়ে পড়ে। দেখা যায় তার গায়ে গুলি লেগেছে। তাকে শিলিগুড়িতে একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়। কিন্তু সেখানে খরচ কুলোতে পারছিল না গহরের পরিবার। তাই সোমবার তাকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
বিধায়ক হামিদুল রহমানই গহরের পরিবারকে যে ২০ হাজার টাকা দিয়েছেন, তাই তাদের সম্বল। সেই টাকায় নার্সিংহোমে রেখে তার চিকিৎসা করানো সম্ভব নয় বলে গহরের দাদা রাজু আলি, চান্দু আলি, কাকা রহমান আলিরা জানান। চান্দু আলি বলেন, ‘‘বিধায়ক যে টাকা দিয়েছেন সেটাই ভরসা। বাধ্য হয়ে গহরকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়েছে।’’
পরিবারের লোকেদের দাবি, রাজনীতির কিছুই বোঝার বয়স পর্যন্ত হয়নি গহরের। বাবা একিম আলি তৃণমূলের সমর্থক। দাদারা শ্রমিকের কাজ করেন। গহরের মা রসিদা বেগম বলেন, ‘‘আমাদের আর্থিক অবস্থা এতটাই খারাপ যে, শিলিগুড়ির ওই নার্সিংহোমে রেখে চিকিৎসা করানো সম্ভব নয়।’’ গহর আলির কাকা পজির মহম্মদ জানান, নেতাদের সঙ্গে তাঁরা কথা বলেছেন। তাঁরা যদি সহযোগিতা করেন, তা হলেই গহরের ঠিকঠাক চিকিৎসা সম্ভব। তৃণমূল সূত্রে খবর, গহরের চিকিৎসার জন্য আরও অর্থ সাহায্যের কথা তাঁরা ভাবছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy