Advertisement
E-Paper

ভর্তি-তোলাবাজি, অবরোধ হাওড়ায়

ভর্তি হতে না-পারা শ’তিনেক পড়ুয়া মঙ্গলবার রাত ১০টায় ওই কলেজের সামনের জিটি রোড কিছু ক্ষণ অবরোধ করেন। বুধবার বেলা ১টা থেকে আবার প্রায় তিন ঘণ্টা ওই রাস্তা অবরোধ করে রেখে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০১৮ ০৪:৩৭
বিক্ষোভ: শিবপুরের দীনবন্ধু কলেজের ছাত্রছাত্রীদের পথ অবরোধ। বুধবার। নিজস্ব চিত্র

বিক্ষোভ: শিবপুরের দীনবন্ধু কলেজের ছাত্রছাত্রীদের পথ অবরোধ। বুধবার। নিজস্ব চিত্র

কলেজে ভর্তিতে টাকার খেলা নিয়ে কলকাতায় হইচই একটু স্তিমিত। কিন্তু গোলমাল পাকাচ্ছে গঙ্গার পশ্চিম পারে, হাওড়ায়। শিবপুরের দীনবন্ধু কলেজে ভর্তি হতে আসা পড়ুয়াদের একাংশের অভিযোগ, ওখানে টাকা নিয়ে ভর্তি প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করছেন বাইরের কিছু যুবক, যাঁরা এলাকায় তৃণমূল নেতা হিসেবে পরিচিত। যাঁরা টাকা দিচ্ছেন, তাঁরা ভর্তি হতে পারছেন। যাঁরা তা দিতে পারছেন না, তাঁরা ঘুরে বেড়াচ্ছেন।

ভর্তি হতে না-পারা শ’তিনেক পড়ুয়া মঙ্গলবার রাত ১০টায় ওই কলেজের সামনের জিটি রোড কিছু ক্ষণ অবরোধ করেন। বুধবার বেলা ১টা থেকে আবার প্রায় তিন ঘণ্টা ওই রাস্তা অবরোধ করে রেখে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, কয়েক দিন ধরে তাঁরা ভর্তির জন্য ঘুরছেন। অথচ কলেজ-কর্তৃপক্ষ তাঁদের সঙ্গে কথা বলা দূরের কথা, কলেজে আসাই প্রায় বন্ধ করে দিয়েছেন। মেধা-তালিকায় নাম উঠেছে, কাউন্সেলিং হয়ে গিয়েছে। দেখা যাচ্ছে, ওয়েবসাইটে বেশ কিছু নম্বর পর্যন্ত পড়ুয়াদের
ভর্তি নিয়ে সমস্যা হচ্ছে না।
কিন্তু তার পরেই ভর্তি নেওয়া বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। পরে ওয়েবসাইট খুললে দেখা যাচ্ছে, প্রায় ২০টি নম্বর বাদ গিয়ে পরের তার নম্বর থেকে প্রার্থীদের নাম আছে।

প্রিয়াঙ্কা মিত্র নামে এক প্রার্থী জানান, বি কম পাশ কোর্সে ভর্তি হওয়ার জন্য ২ জুলাই তাঁকে কাউন্সেলিংয়ে ডাকা হয়। ১২৫ থেকে ৩২৫ পর্যন্ত প্রার্থীর নাম তালিকাভুক্ত হয়। কিন্তু ভর্তির সময় ২৩০ নম্বর পর্যন্ত ডেকে সব থেমে যায়।

মেয়েকে ভর্তি করতে না-পেরে দিশাহারার মতো কলেজের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন মহম্মদ নাসিন। তিনি বলেন, ‘‘কলেজের ঠিক উল্টো দিকেই থাকি। কোনও দিন ভর্তি নিয়ে এত নোংরামি দেখিনি। ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা নিয়ে ভর্তি করা হচ্ছে।’’ সুজিত অধিকারী নামে এক অভিভাবকের অভিযোগ, ‘‘কলেজের ওয়েবসাইট হ্যাক করে কইপুকুরের একটি সাইবার ক্যাফে থেকে ১২ হাজার টাকার বিনিময়ে প্রার্থীদের ভর্তি করা হচ্ছে। আমার কাছেও টাকা চাওয়া হয়েছিল। আমি দিইনি।’’

উইলিয়াম সাহু নামে এক প্রার্থীর অভিযোগ, ‘‘আমাদের থেকে কম নম্বর পেয়েও অনেকে ভর্তি হয়ে গিয়েছে। এ-সব নিয়ন্ত্রণ করছে ওই কলেজের প্রাক্তন ছাত্র ও টিএমসিপি নেতা শামিম আহমেদ বা গুড্ডু।’’

বহিরাগত হয়েও গুড্ডু যে ভর্তি প্রক্রিয়ায় যুক্ত, তা তাঁর কথাতেই স্পষ্ট। গুড্ডু বলেন, ‘‘ওই কলেজ মাত্র ১৫৫০ সিট। ৬-৭ হাজার আবেদন পড়েছে। কী করে সকলকে ভর্তি করা যায় বলুন? তবু আমরা মেধা-তালিকা ধরে ভর্তি করতে বলেছি। টাকা নিয়ে ভর্তির প্রশ্নই নেই।’’

দুপুরে কলেজে গিয়ে ছাত্র সংসদের কারও দেখা মেলেনি। দেখা মেলেনি কলেজের টিচার ইনচার্জ কার্তিকচন্দ্র খাটুয়ারও। তাঁকে বারবার ফোন করে, মেসেজ পাঠিয়েও উত্তর মেলেনি। শিবদাস কর্মকার নামে কলেজের অর্থ দফতরের এক অফিসার বলেন, ‘‘ভর্তি নিয়ে একটা সমস্যা হচ্ছে ঠিকই। বহিরাগতেরা কলেজে ঢুকছে, এই অভিযোগও সত্য। তবে টাকা নিয়ে ভর্তির খবর ঠিক নয়।’’

পুলিশ জানায়, বিকেল প্রায় সাড়ে ৪টে পর্যন্ত বিক্ষোভ চলার পরে কলেজের পক্ষ থেকে ভর্তি হতে না-পারা পড়ুয়াদের একটি তালিকা জমা দিতে বলা হয়। পড়ুয়ারা তা জমা দেওয়ার পরে অবরোধ উঠে যায়।

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy