Advertisement
E-Paper

২ লক্ষ বর্গফুটের মন্দির, নকশা করা খিলানে হাজার আট স্তম্ভ! দুর্গা অঙ্গনের নির্মাণ কেমন হতে চলেছে, রূপবর্ণনা মুখ্যমন্ত্রীর

বছর তিনেক আগে ইউনেস্কো রাজ্যের দুর্গাপুজোকে আবহমান ঐতিহ্যের স্বীকৃতি দিয়েছিল। সোমবার মমতা জানান, ইউনোস্কোর সেই স্বীকৃতিকে সংরক্ষিত রাখতেই দুর্গা অঙ্গন তৈরির কথা ভেবেছেন তিনি।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ২০:৫৯
CM Mamata Banerjee explains What will be the structure of Durga Angan

সোমবার নিউ টাউনে দুর্গা অঙ্গনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: ফেসবুক।

গত ২১ জুলাইয়ের বার্ষিক সভার মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতায় দুর্গা অঙ্গন তৈরির ঘোষণা করেছিলেন। সোমবার নিউটাউনে তার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দিলেন, কেমন ভাবে করা হয়েছে মন্দিরের পরিকল্পনা, কী কী থাকবে সেখানে।

দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের মতো এই দুর্গা অঙ্গন নির্মাণেরও দায়িত্বে রয়েছে হিডকো। ইতিমধ্যে দরপত্র ডেকে তা চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়াও সম্পন্ন হয়ে গিয়েছে। প্রাথমিক ভাবে চিহ্নিত জমি কেন বদল করা হল, সোমবার সেই ব্যাখাও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বলেন, ‘‘প্রথমে যে জমিটি দেখা হয়েছিল, সেটা ছিল ১২ একরের। আমি তখন বললাম, হচ্ছে যখন বড় করেই হোক। তার পর এই জমিটি আমরা চূড়ান্ত করি, যা ১৭.২৮ একর।’’

মমতা জানিয়েছেন, বিশ্বের বৃহত্তম দুর্গামন্দির হিসাবে মাথা তুলবে এই দুর্গা অঙ্গন। মূল মন্দির হবে ২ লক্ষ বর্গফুট এলাকা জুড়ে। চারিদিকে খোলা চত্বর রাখা হবে। প্রচুর পরিমাণে গাছ থাকবে চারিদিকে। যাতে সবুজের সমাহার রাখা যায়। দৈনিক যাতে এক লক্ষ মানুষ এই দুর্গাঙ্গনে আসতে পারেন, সেই ঊর্ধ্বসীমা মাথায় রেখেই পরিকাঠামো গড়ে তোলা হবে। মন্দির চত্বরে নকশা করা খিলান দিয়ে তৈরি হবে এক হাজার আটটি স্তম্ভ। গর্ভগৃহের উচ্চতা হবে ৫৪ মিটার। থাকবে ১০৮ দেবদবীর মূর্তি এবং ৬৪টি সিংহমূর্তি। সিংহদুয়ারের পাশাপাশি থাকবে পবিত্র কুণ্ড। পৃথক ভাবে নির্মিত হবে শিব, লক্ষ্মী, গণেশ, সরস্বতী এবং কার্তিকের মন্দির।

৩৬৫ দিনই দুর্গার পুজো হবে এই মন্দিরে। গর্ভগৃহের বাইরের অংশে যাতে এক সঙ্গে এক হাজার মানুষ বসতে পারেন, তার পরিসর রাখা হচ্ছে। তৈরি হচ্ছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য পৃথক জায়গাও। থাকবে প্রসাদ ঘর। মন্দিরের কাছেই তৈরি করা হবে গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গা।

রাজ্যের মুখ্যসচিবকে শীর্ষে রেখে একটি ট্রাস্ট তৈরি করা হয়েছে। সেই ট্রাস্টই মন্দিরের নির্মাণ-সহ পরবর্তী কাজ পরিচালনা করবে। দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের জন্যও ট্রাস্ট গঠন করে দিয়েছিল রাজ্য সরকার। মমতা জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই দুর্গা অঙ্গনের তবহিলে যে পরিমাণ অর্থ জমা পড়েছে, তামে দুর্গামূর্তির খরচ উঠে গিয়েছে। সোমবারের অনুষ্ঠানে দক্ষিণেশ্বর মন্দির, ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘ, রামকৃষ্ণ মিশন কামারপুকুরের প্রতিনিধিরা হাজির ছিলেন। ছিলেন চার্চ, বৌদ্ধমঠ, গুরুদ্বার এবং মুসলিম ধর্মের প্রতিনিধিরাও। মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল এবং মহামেডান ক্লাবের প্রতিনিধিরাও হাজির ছিলেন অনুষ্ঠানে। দুর্গা অঙ্গনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের মঞ্চ থেকেও সর্বধর্ম সমন্বয়ের বার্তা দিয়েছেন মমতা।

CM Mamata Banerjee explains What will be the structure of Durga Angan

অনুষ্ঠানের শুরুতে নৃত্য পরিবেশন করেন ডোনা গঙ্গোপাধ্যায়। তার পর একে একে সঙ্গীত পরিবেশন করেন শ্রীরাধা বন্দ্যোপাধ্যায়, বাবুল সুপ্রিয়, ইমন চক্রবর্তী এবং ইন্দ্রনীল সেন। সোমবার বিকাল ৩টে ৫৬ মিনিটে রিমোটের বোতাম টিপে দুর্গা অঙ্গনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন মমতা। তার পর দেখা যায় সেই ফলকের সামনে তিনি একটি লালের উপর সোনালি সুতোর কাজ করা শাড়ি অর্পণ করছেন। হিডকোর উদ্দেশে দ্রুত কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

বছর তিনেক আগে ইউনেস্কো রাজ্যের দুর্গাপুজোকে আবহমান ঐতিহ্যের স্বীকৃতি দিয়েছিল। সোমবার মমতা জানান, ইউনোস্কোর সেই স্বীকৃতিকে সংরক্ষিত রাখতেই দুর্গা অঙ্গন তৈরির কথা ভেবেছেন তিনি। দুর্গা অঙ্গনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের মঞ্চ থেকেই মমতা জানিয়ে দিলেন, জানুয়ারি মাসেই শিলিগুড়িতে মহাকাল মন্দিরেরও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের অনুষ্ঠান হবে।

CM Mamata Banerjee Durga Angan Mahakal Temple
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy