Advertisement
E-Paper

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যাম্পাসে সভা, মিছিল বন্ধের সিদ্ধান্তে ক্ষোভ

গত বৃহস্পতিবার তারকেশ্বরে হুগলির জেলার প্রশাসনিক বৈঠকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সক্রিয় নেতা ইলিয়াস আখতার মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আর্জি জানান, কলেজ স্কোয়ারে মিছিল, মিটিং বন্ধ করা হোক।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০১৭ ০৩:৫৬
—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

মুখ্যমন্ত্রীর দেখানো পথে হেঁটে এ বার ক্যাম্পাসের ভিতরে মিছিল, সভা বন্ধ করে দিতে চান কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আশুতোষ ঘোষ। তাতে বেঁকে বসেছে সেখানকার তৃণমূল পরিচালিত ছাত্র সংসদ! এই ঘটনায় শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের বিরুদ্ধে দু’মুখো নীতি নেওয়ার অভিযোগ তুলে বিরোধীরা বলছে, ক্যাম্পাসের বাইরে ও ভিতরে মিছিল, মিটিং নিয়ে দু’রকম কথা বলছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ।

গত বৃহস্পতিবার তারকেশ্বরে হুগলির জেলার প্রশাসনিক বৈঠকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সক্রিয় নেতা ইলিয়াস আখতার মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আর্জি জানান, কলেজ স্কোয়ারে মিছিল, মিটিং বন্ধ করা হোক। কারণ মাইক আর স্লোগানে পড়াশোনার সমস্যা হয়। দলের ছাত্রনেতার আর্জিতে একবাক্যে সাড়া দেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই রাতেই কলকাতা পুলিশ কলেজ স্কোয়ারে মিটিং, মিছিল করা যাবে না বলে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। সে দিন মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগকে সমর্থন জানান ছাত্র সংসদের নেতা-নেত্রীরা।

সরকারের এই ঘোষণা নিয়ে যখন বিতর্ক তুঙ্গে, তার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে মিছিল, মাইক বাজিয়ে সভা, স্লোগান দেওয়া বন্ধ করার কথা জানান উপাচার্য। ঘটনাচক্রে হুগলির সেই বৈঠকে হাজির থেকে নানা কারণে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ধমক খান উপাচার্য। ক্যাম্পাসে মিছিল, সভা বন্ধের প্রসঙ্গে তাঁর যুক্তি, ‘‘ক্লাস চলাকালীন পড়ুয়া ও শিক্ষকদের অসুবিধা হয়, এমন কিছুই আর করতে দেওয়া হবে না।’’ উপাচার্যের এই ঘোষণার সরাসরি বিরোধিতা করে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ পরিচালিত ছাত্র সংসদ। তাদের সাফ কথা, প্রতিবাদ হবেই। সেটা মিছিল হতে পারে, মিটিং হতে পারে। শনিবার এক ধাপ এগিয়ে টিএমসিপি রাজ্য সভানেত্রী জয়া দত্ত জানান, প্রয়োজনে প্রতিবাদ হবেই। উপাচার্যকে বলব, তার জন্য জায়গা নির্দিষ্ট করে দিন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের একাংশ মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণাকে যেমন স্বাগত জানিয়েছেন, তেমন উপাচার্যের উদ্যোগকেও তাঁরা ইতিবাচক বলে মনে করেন। তাঁদের কথায়, ‘‘সমস্যা যেখানে চিৎকার-চেঁচামেচি, মাইকের তাণ্ডব, গণ্ডগোল — সেখানে কলেজ স্কোয়ারের সঙ্গে ক্যাম্পাসের চরিত্রকে আলাদা করে দেখা উচিত নয়। তাই মুখ্যমন্ত্রীর মতো উপাচার্যও সঠিক পদক্ষেপ করেছেন।’’

বিরোধী ছাত্র সংগঠনের নেতানেত্রীরা সরকার বা উপাচার্যের পদক্ষেপের সমালোচনা করেছে। একই সঙ্গে তাঁরা বিস্মিত শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের ভূমিকায়। এসএফআইয়ের রাজ্য সভানেত্রী মধুজা সেনরায় একে ‘দ্বিচারিতা’ মনে করেন। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘কলেজ স্কোয়ারে মিটিং-মিছিল বন্ধ করতে চায় ওরা। আর ক্যাম্পাসের ভেতরে তা নিয়ে আপত্তি! এ আবার কেমন নীতি! আসলে ওরা ক্যম্পাসে গঠনমূলক কিছু করে না। নিজেদের মধ্যে মারামারি করে!’’ রাজ্য ছাত্র পরিষদ সভাপতি আশুতোষ চট্টোপাধ্যায়, ডিএসও নেতা সৌরভ ঘোষদের বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রীর সিদ্ধান্তকে অনুসরণ করেই বিশ্ববিদ্যালয়েও তা করতে চাইছেন উপাচার্য। কিন্তু এ বার টিএমসিপি-র স্বার্থে ঘা লাগছে। ওরাই বিশ্ববিদ্যালয়ের মিছিল, মিটিং করে। তাই এখন বিরোধিতা করছে।

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় এমন উদ্যোগ নিলেও পাশের প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অনুরাধা লোহিয়া এ দিন বলেন, ‘‘আমার ক্যাম্পাস শান্ত। তাই এমন সিদ্ধান্তের পরিকল্পনা নেই।’’ তবে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে মিছিল, মিটিংয়ের কারণে প্রেসিডেন্সির পড়ুয়াদের অসুবিধা হয় বলে তাঁর অভিযোগ। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ক্যাম্পাসের মধ্যে যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষই নেবেন। এ বিষয়ে কোনও রকম হস্তক্ষেপ করবে না সরকার।

University of Calcutta কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় Students Union TMC Protest আশুতোষ ঘোষ
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy