Advertisement
E-Paper

উর্দুতে পড়ার সমস্যা নিয়ে সরব সুলতান

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যতই রাজ্যের সংখ্যালঘু উন্নয়নের ঢাক পেটান, তাঁরই দলের সাংসদ তথা সংখ্যালঘু উন্নয়ন ও বিত্ত নিগমের চেয়ারম্যান সুলতান আহমেদ অভিযোগ করছেন, সংখ্যালঘু পড়ুয়াদের কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে উর্দু মাধ্যমে পড়াশোনা করার পর্যাপ্ত সুযোগ মিলছে না। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বিষয়টি নিয়ে খোঁজ নেবেন বলে জানিয়েছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ মে ২০১৫ ০৩:৩৬

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যতই রাজ্যের সংখ্যালঘু উন্নয়নের ঢাক পেটান, তাঁরই দলের সাংসদ তথা সংখ্যালঘু উন্নয়ন ও বিত্ত নিগমের চেয়ারম্যান সুলতান আহমেদ অভিযোগ করছেন, সংখ্যালঘু পড়ুয়াদের কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে উর্দু মাধ্যমে পড়াশোনা করার পর্যাপ্ত সুযোগ মিলছে না। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বিষয়টি নিয়ে খোঁজ নেবেন বলে জানিয়েছেন।

হাওড়া জেলা এসএসকে, এমএসকে কো-অর্ডিনেশন কাউন্সিলের সম্মেলনে রবিবার সুলতান বলেন, ‘‘রাজ্যে প্রায় ১৫০টির বেশি উর্দু মাধ্যম বিদ্যালয় রয়েছে। কিন্তু এই সমস্ত বিদ্যালয়ে পঠনপাঠন শেষ করার পর পড়ুয়ারা বিভিন্ন কলেজে ভর্তি হলেও স্নাতক স্তরে উর্দু মাধ্যমে পড়াশোনার সুবিধা পাচ্ছেন না। এমনকী, গত দু’বছর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উর্দু বিভাগে কোনও শিক্ষক নেই। ফলে উর্দুভাষী পড়ুয়াদের সমস্যা দিনে দিনে বেড়ে চলেছে।’’ বঙ্গীয় টি বি অ্যাসোসিয়েশন হলে ভিড়ে ঠাসা সভায় সাংসদ এ দিন জানান, অবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয়ে উর্দু শিক্ষক নিয়োগের ব্যবস্থা-সহ উর্দুভাষী অধ্যুষিত এলাকার কলেজগুলিতে এবং আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে উর্দু বিভাগ চালু করার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানানো হবে। সুলতানের অভিযোগ, এমএসকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ার ব্যবস্থা রয়েছে। সেখান থেকে উত্তীর্ণ হয়ে পর্ষদ অনুমোদিত স্কুলে নবম শ্রেণিতে ভর্তি হতে গেলে সংখ্যালঘু ছাত্রছাত্রীদের সমস্যায় পড়তে হয়। এই পরিপ্রেক্ষিতে তিনি দাবি তোলেন, ওই পড়ুয়াদের পর্ষদ অনুমোদিত বিদ্যালয়ে ভর্তির ব্যবস্থা সরকারকে করতে হবে।

সুলতান আহমেদের অভিযোগ নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী পার্থবাবুর প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘‘সুলতান কী সমস্যার কথা বলেছেন, খোঁজ নেব। তার আগে মন্তব্য করতে চাই না।’’

সারা বাংলা সংখ্যালঘু যুব ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মহম্মদ কামরুজ্জামানও এ দিন অভিযোগ করেন, ‘‘এসএসকে ও তার মতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে পর্ষদের আওতায় আনার জন্য রাজ্য সরকার আইন তৈরি করেছে। কিন্তু সেই আইন এখনও পর্যন্ত কার্যকর হয়নি। ফলে ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলিকে দু’বছর অন্তর নতুন করে অনুমোদন নিতে হচ্ছে। এই সব স্কুল নিয়মিত পরিচালনার ক্ষেত্রে অসুবিধা হচ্ছে।’’ এ দিন সম্মেলনের আয়োজক সংস্থা জানায়, প্রতি দু’বছর অন্তর নতুন করে অনুমোদন নিতে গিয়ে পরিদর্শন রিপোর্ট জমা না পড়ায় গত জানুয়ারি মাস থেকে বেতন পাচ্ছেন না এসএসকে, এমএসকে-র শিক্ষকরা। অননুমোদিত মাদ্রাসার অনুমোদনের ক্ষেত্রে সরকারকে আরও বেশি উদ্যোগী হতে হবে বলেও দাবি করেছে ওই সংস্থা। এ দিকে বেতন-সহ একাধিক দাবিপূরণে বুধবার নবান্নে সংখ্যালঘু দফতরের সচিবের কাছে শিক্ষকরা দাবিপত্র দেবেন বলে জানিয়েছেন ওয়েস্টবেঙ্গল তৃণমূল আনএডেড মাদ্রাসা টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াহাব মোল্লা। ওয়াহাব বলেন, ‘‘৩৭২টি মাদ্রাসার ভবিষ্যৎ নবান্নে ফাইলবন্দি হয়ে পড়ে রয়েছে। ২৩৪টি মাদ্রাসা অনুমোদন পেলেও শিক্ষকরা বেতন পাচ্ছেন না। স্কুলে মিড ডে মিলও চালু হয়নি।’’

সংখ্যালঘু সমাজের ভিতর থেকে শাসক বিরোধী স্বর উঠে আসা অবশ্য এই প্রথম নয়। গত রবিবার মৌলালি যুবকেন্দ্রে তৃণমূলেরই অনুমোদনপ্রাপ্ত মাদ্রাসা শিক্ষক সংগঠনের রাজ্য সম্মেলনে দর্শকাসন থেকে এক শিক্ষক রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েন। হাততালি দিয়ে তাঁকে সমর্থনও জানান অনেকে। তাঁদের অভিযোগ ছিল বেতন না পাওয়া সংক্রান্ত। রাজ্যের মাদ্রাসা শিক্ষা ও সংখ্যালঘু উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী স্বয়ং মমতাই। বিরোধীরা বলছেন, সরকারের কথা ও কাজের ফারক নিয়ে এ ভাবে সরব হওয়াতেই স্পষ্ট সংখ্যালঘু মন আর তৃণমূলের একচেটিয়া অধিকারে নেই।

Sultan Ahmed urdu partha chattopadhyay mamata bandopadhyay trinamool tmc student
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy