Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

টাকার সমস্যায় হিমসিম খাচ্ছে সুন্দরবনের পর্যটন

নোটের সমস্যায় ভরা মরসুমে ক্ষতির মুখে পড়েছেন সুন্দরবনের পর্যটন ব্যবসায়ীরা। প্রতি বছর শীত পড়তেই দেশি-বিদেশি পর্যটকেরা ভিড় জমাতে থাকেন সুন্দরবনে।

সুন্দরবনের এমন গহীন জঙ্গলের টানেই আসেন পর্যটকেরা। নিজস্ব চিত্র।

সুন্দরবনের এমন গহীন জঙ্গলের টানেই আসেন পর্যটকেরা। নিজস্ব চিত্র।

সামসুল হুদা
ক্যানিং শেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০১৬ ০১:০০
Share: Save:

নোটের সমস্যায় ভরা মরসুমে ক্ষতির মুখে পড়েছেন সুন্দরবনের পর্যটন ব্যবসায়ীরা।

প্রতি বছর শীত পড়তেই দেশি-বিদেশি পর্যটকেরা ভিড় জমাতে থাকেন সুন্দরবনে। এ বছর পুজোর সময়ে থেকে সুন্দরবনে বেড়াতে আসবেন বলে অনেকে অগ্রিম বুকিং করেছিলেন। কিন্তু ৮ নভেম্বর কেন্দ্রীয় সরকার হঠাৎ ৫০০-১০০০ টাকার নোট বাতিল করায় সমস্যায় পড়েছেন সুন্দরবনের পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ীরা। কারণ, টাকার সমস্যায় পর্যটকেরা অনেকে ট্যুর বাতিল করছেন বলে জানালেন তাঁরা। যাঁরা এসে পড়ছেন, তাঁদের অনেকে আবার পুরনো ৫০০-১০০০ টাকার নোটে দাম মেটাতে চাইছেন। তাতেও সমস্যায় পড়ছেন ব্যবসায়ীরা। বন দফতরও পর্যটন কর বাবদ যে টাকা পর্যটকদের থেকে নেয়, সে ক্ষেত্রেও তাঁরা পুরনো নোট নিতে চাইছেন না।

সব মিলিয়ে তৈরি হয়েছে গভীর সঙ্কট।

এই পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ীরা তো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেনই, সরকারি রাজস্বও মিলছে কম।

ক্যানিঙের ঝড়খালি।

ভাঙড়ের বাসিন্দা শুভঙ্কর বিশ্বাস ৪৫ জনের দল নিয়ে সুন্দরবনে বেড়াতে যাবেন বলে কালীপুজোর পরে বুকিং করেছিলেন। কিন্তু নোট নিয়ে দেশ জুড়ে ঘোঁট পাকানোয় ট্যুর বাতিল করতে বাধ্য হয়েছেন। শুভঙ্করবাবু বলেন, ‘‘আমরা বন্ধুরা মিলে সপরিবার সুন্দরবনে যাব বলে ঠিক করেছিলাম। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে ট্যুর অপারেটররা ৫০০-১০০০ টাকার নোট নিতে চাইছেন না। আমরাই বা এত খুচরো টাকা জোগাড় করব কোথা থেকে। তাই বেড়ানো আপাতত স্থগিত রাখতেই হচ্ছে।’’

ক্যানিঙের পর্যটন ব্যবসায়ী শশধর মান্না বলেন, ‘‘এ সময়ে অনেক পর্যটক সুন্দরবনে বেড়াতে যাবেন বলে অগ্রিম বুকিং করেছিলেন। কিন্তু সকলকেই জানিয়ে দিচ্ছেন, ৫০০-১০০০ টাকার পুরনো নোট দেবেন। যা আমাদের চালাতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। আবার অনেকে আমাদের অ্যাকাউন্টে টাকা জমা করতে ব্যাঙ্কে গিয়ে সমস্যায় পড়ছেন বলেও জানাচ্ছেন। বাধ্য হয়েই ট্যুর বাতিল করছেন অনেকে।’’ গত কয়েক দিনে ৭টি ট্যুর বাতিল হয়েছে তাঁর, জানালেন শশধরবাবু।

ক্যানিঙের আর এক পর্যটক ব্যবসায়ী শম্ভু মান্না বললেন, ‘‘এমনিতেই টাকার সমস্যার জন্য অনেকে ট্যুর বাতিল করেছেন। এই পরিস্থিতিতে আমাদের যা ক্ষতি হওয়ার তো হলই। উপরন্তু, লঞ্চের কর্মীদের বসিয়ে মাইনে দিতে হচ্ছে। কী করে লোকসান সামলাব, বুঝতে পারছি না।’’

সুন্দরবন ওয়াটার পিউপিল সোসাইটির সম্পাদক দীপক দাস (দীপু) ব্যবসায়ীদের সমস্যা ছাড়াও পর্যটকদের বন দফতরকে দেওয়া ভ্রমণ করের কথা উল্লেখ করলেন। জানালেন, বন দফতরও পুরনো নোট নিতে চাইছে না। সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের এফডি নীলাঞ্জন মল্লিক বলেন, ‘‘আমাদের কাছে ৫০০-১০০০ টাকার নোট নেওয়ার কোনও সরকারি নির্দেশিকা নেই। ফলে ওই টাকা আমরা নিতে পারছি না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Jungle Sundarban Tiger Tourism
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE