Advertisement
১৬ জুন ২০২৪

ভাবমূর্তি ফেরাতে বাড়ি বাড়ি চিঠি নিয়ে গৌতমের সহকর্মীরা

এক কালে ছিল দাপটের জেলা। তৃণমূলের ধাক্কায় এখন সেখানে সংগঠন ম্রিয়মান। বিধানসভা ভোটের পরে বাকি রাজ্যের মতো উত্তর ২৪ পরগনাতেও আন্দোলন শিকেয়। এই পরিস্থিতিতে সংগঠন পুনরুদ্ধারে এক দিকে বাড়ি বাড়ি চিঠি হাতে যাওয়া এবং অন্য দিকে একগুচ্ছ সমাবেশের পরিকল্পনা হাতে নিলেন জেলা সম্পাদক গৌতম দেব।

গৌতম দেব। বুধবার জ্যোতি বসু ভবনে। ছবি: শৌভিক দে।

গৌতম দেব। বুধবার জ্যোতি বসু ভবনে। ছবি: শৌভিক দে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০১৬ ০৩:২৯
Share: Save:

এক কালে ছিল দাপটের জেলা। তৃণমূলের ধাক্কায় এখন সেখানে সংগঠন ম্রিয়মান। বিধানসভা ভোটের পরে বাকি রাজ্যের মতো উত্তর ২৪ পরগনাতেও আন্দোলন শিকেয়। এই পরিস্থিতিতে সংগঠন পুনরুদ্ধারে এক দিকে বাড়ি বাড়ি চিঠি হাতে যাওয়া এবং অন্য দিকে একগুচ্ছ সমাবেশের পরিকল্পনা হাতে নিলেন জেলা সম্পাদক গৌতম দেব।

দলের জেলা সম্পাদকমণ্ডলী ও জেলা কমিটির দু’দিনের বৈঠকের পরে রাজারহাটে বুধবার গৌতমবাবু জানিয়েছেন, জনসংযোগ বাড়াতে নাগরিকদের জন্য প্রচারপত্র ছাপিয়ে তাঁদের বাড়িতে পৌঁছতে চান তাঁরা। কঠিন পরিস্থিতিতে জমি ফিরে পেতে তাঁরা যে তৃণমূল স্তরে মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ ফিরে পেতে মরিয়া, তারই আভাস মিলেছে জেলা সম্পাদকের কথায়। জনমানসে হারানো ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যেই গৌতমবাবু প্রকাশ্যেই সরাসরি বলেছেন, জমি-বাড়ির দালালি করলে দলে থাকা যাবে না। দুর্নীতির অভিযোগ আছে, এমন নেতৃত্বকেও দরজা দেখিয়ে দেওয়া হবে! গৌতমবাবুর কথায়, ‘‘নেতাদের একাংশ অহংকারী হয়ে মানুষের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিলেন। বামফ্রন্টের ৩৪ বছরের সাফল্য নিয়ে আলোচনা করলে তার ভেঙে পড়াটাও তো আলোচনা করতেই হবে!’’

আম জনতার সঙ্গে বিচ্ছিন্নতা কাটাতে শুকনো সভা-সমাবেশেই থেমে না থেকে প্রতি এলাকার নাগরিকদের জনে জনে প্রচারপত্র দিতে চাইছেন গৌতমবাবুরা। জেলা সম্পাদকের বক্তব্য, ‘‘প্রচারপত্র নিয়ে দলীয় কর্মীরা অন্তত ১০ লক্ষ মানুষের কাছে পৌঁছবেন। প্রচারপত্র পড়ে দেখতে অনুরোধ করবেন।’’

জনসংযোগের এই প্রয়াস চলতে চলতেই আগামী জানুয়ারি পর্যন্ত গোটা উত্তর ২৪ পরগনায় জেলা সিপিএমের তরফে ছোট-বড় ১৪৭৫টি সভা করা হবে। গৌতমবাবু জেলা সম্পাদক হওয়ার পরে এই ধারাবাহিক সভা এখন উত্তর ২৪ পরগনার রেওয়াজ। তিনি জানিয়েছেন, আগামী ১১ জানুয়ারি সল্টলেকে ১ লক্ষ ৩৯ হাজার মানুষকে নিয়ে সমাবেশের পরিকল্পনা আছে। তবে তিনি বলে রেখেছেন, ‘‘১১ জানুয়ারি মানুষের সমাবেশই হবে, নাকি নবান্ন পর্যন্ত মানুষের পদযাত্রা হবে, সেটা পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’

কোণঠাসা অবস্থার মধ্যেও পুরনো উন্নাসিকতাকে দূরে সরিয়ে সংগঠন চাঙ্গা করতে পাড়ার ক্লাবের সঙ্গে জেলার দলীয় কর্মীদের যুক্ত হতে বলা হয়েছে। তাঁর বক্তব্য, ‘‘পাড়ার ক্লাবগুলি সব মদ-জুয়ার আখড়ায় পরিণত হয়েছে তৃণমূলের জমানায়! মুখ্যমন্ত্রীর টাকা দিচ্ছেন। আর ক্লাবগুলিতে গুন্ডাবাহিনী তৈরি হচ্ছে। পাড়ার ক্লাবকে সামাজিক কাজে ব্যবহারের জন্যই দলীয় কর্মীদের সেখানে যুক্ত হতে হবে।’’

গৌতমবাবু আরও জানান, সাধারণ মানুষের উদ্বেগ মাথায় রেখে দলের যুব কর্মীরা উত্তর ২৪ পরগনা জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের সঙ্গে দেখা করে জানতে চাইবেন, ডেঙ্গি নিয়ে কোনও মানচিত্র তৈরি করা হয়েছে কিনা। ডেঙ্গি মহামারির আকার নিয়েছে বলেই গৌতমবাবুর অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে তাঁরা প্রয়োজনে মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে ডেঙ্গি আক্রান্ত এলাকার বিশেষ মানচিত্র তৈরিতে সাহায্য করবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Gautam Deb CPM
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE