কোনও ভাবেই পরীক্ষায় বসতে পারবেন না দাগি অযোগ্যরা। স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)-এর পরীক্ষায় বসতে চেয়ে তাঁদের করা আবেদন খারিজ করে আরও এক বার তা স্পষ্ট করে দিল সুপ্রিম কোর্ট। বৃহস্পতিবার বিচারপতি সঞ্জয় কুমার এবং বিচারপতি অলোক আরাধের বেঞ্চ জানায়, একই ধরনের কোনও মামলা আর গ্রহণ করা হবে না। বিচারপতি কুমার সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। বলেন, “দাগিদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার কথা সিবিআইয়ের। তার কী হল?” অন্য দিকে, পরীক্ষায় বসতে চেয়ে ‘দাগি’দের করা মামলা খারিজ করে দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্টও। বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি ঋতব্রতকুমার মিত্রের ডিভিশন বেঞ্চ দাগিদের পরীক্ষায় বসতে চাওয়ার আবেদন খারিজ করে দেয়।
রাজ্যকেও ভর্ৎসনা করে সুপ্রিম কোর্ট। দাগিদের করা মামলার শুনানিতে কেন রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) হাই কোর্টে উপস্থিত হচ্ছেন, সেই প্রশ্ন তোলে আদালত। দুই বিচারপতির বেঞ্চের প্রশ্ন, রায় ঘোষণার পরেও আইনজীবীরা দাগিদের হয়ে কী ভাবে আদালতে আবেদন করছেন? বিচারপতি কুমার বলেন, “বার বার বলেছি দাগিরা কোনও ভাবেই পরীক্ষায় বসতে পারবেন না। তার পরেও একই আবেদন নিয়ে এত মামলা কেন? যা বলার রায়ে আমরা তা স্পষ্ট করে বলে দিয়েছি।” একই সঙ্গে বিচারপতির সংযোজন, “এই অযোগ্যদের জন্য অনেকের জীবন নষ্ট হয়েছে।”
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে ২০১৬ সালের শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষায় বেআইনি ভাবে চাকরি পাওয়া ‘দাগি’দের তালিকা প্রকাশ করেছে স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)। শনিবার ১,৮০৬ জন ‘দাগি’ অযোগ্যের তালিকা প্রকাশ করেছিল এসএসসি। তাঁদের মধ্যে যাঁরা নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়েছিলেন, তাঁদের অ্যাডমিট কার্ডও পরে বাতিল করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ দিয়েছিল, এক জন দাগিও যাতে নতুন নিয়োগে অংশ নিতে না পারেন। তা মেনেই এই পদক্ষেপ করেছিল কমিশন। সোমবার বিচারপতি সঞ্জয় কুমার এবং বিচারপতি সতীশচন্দ্র শর্মার বেঞ্চ এসএসসি-র কাছে জানতে চান, সব দাগি অযোগ্যকে বাদ দেওয়া হয়েছে তো? জবাবে এসএসসি-র আইনজীবী বলেন, ‘‘হ্যাঁ, বাদ দেওয়া হয়েছে।’’
তবে নতুন করে নিয়োগের পরীক্ষায় বসতে চেয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন ‘দাগি’ অযোগ্যরা। তাঁদের মামলায় হস্তক্ষেপ করেনি উচ্চ আদালত। হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ, এসএসসির তালিকায় হস্তক্ষেপ করার জন্য এটি উপযুক্ত মামলা নয়। পরীক্ষায় বসতে পারবেন না মামলাকারী ‘দাগি’রা। এই সংক্রান্ত ২৪টি মামলা খারিজ করে দিয়েছে হাই কোর্ট। ‘দাগী’ অযোগ্যদের আগে পরীক্ষার অ্যাডমিট কার্ড দেওয়া হয়েছিল। পরে তা বাতিল করে এসএসসি। এই কাজের সঙ্গে যুক্ত আধিকারিকেরা কেন এর দায় নেবেন না, সেই প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি মিত্র।