অবৈধ ভাবে বালি তোলার অভিযোগে দীর্ঘদিন ধরেই তৃণমূল কংগ্রেস ও রাজ্য সরকারকে নিশানা করে আসছে বিজেপি। তৃণমূলের ‘দুর্নীতি’র জন্য রাজ্যের চারটি নদী ‘শেষ হয়ে গিয়েছে’ বলে এ বার কেন্দ্রীয় বন, পরিবেশ এবং জলবায়ু মন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদবের কাছে অভিযোগ জানালেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তৃণমূল অবশ্য অভিযোগে আমল দেয়নি।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকারের ১১ বছর পূর্তিতে ১১ মাস ধরে তাঁর মন্ত্রীরা বিভিন্ন রাজ্যে এসে কেন্দ্রের সাফল্য প্রচার করবেন। তারই অংশ হিসেবে শহরের একটি হোটেল মঙ্গলবার মোদী-সরকারের সাফল্যের খতিয়ান তুলে ধরেছেন ভূপেন্দ্র। তার ফাঁকেই তাঁর সঙ্গে শুভেন্দুর কথা হয়েছে। বিরোধী দলনেতা পরে বলেছেন, “রাজ্যের নদীগুলি থেকে অবৈধ ভাবে বালি তোলা হচ্ছে। পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। অবৈধ ভাবে বালি তোলার জন্য অজয়, দামোদর, কংসাবতী, সুবর্ণরেখা শেষ হয়ে গিয়েছে।” মন্ত্রীর কাছে নির্দিষ্ট তথ্য দিয়ে অভিযোগ করেছেন বলেও জানিয়েছেন শুভেন্দু। তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ পাল্টা বলেছেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে সমস্যা অনেকটাই সমাধান করেছেন। নদী-সুরক্ষার সঙ্গে জল বাড়ানোর জন্য ‘জল ধরো, জল ভরো’র মতো প্রকল্প এনেছেন।”
বিজেপি নেতৃত্ব এ দিন ফের ‘কেন্দ্রীয় বঞ্চনা’র অভিযোগেরও জবাব দিয়েছেন। কেন্দ্রের প্রকল্পে রাজ্যের উন্নয়নের খতিয়ান দিয়ে মন্ত্রী ভূপেন্দ্রের বক্তব্য, “মোদী বাংলার বিকাশের জন্য ‘রোডম্যাপ’ তৈরি করেছেন। তা বাস্তবায়িত করতে রাজ্যকে সদর্থক ভূমিকা নিতে হবে। শুধু সঙ্কীর্ণ রাজনীতি করলে চলবে না।” এই সূত্র ধরেই রাজ্যের জন্য জমি-জটে ৬১টি রেল প্রকল্প-সহ বিভিন্ন বিষয় আটকে থাকার কথা বলেছেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী তথা বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তাঁর সংযোজন, “ইউপিএ আমলে ১০ বছরে রাজ্যকে ১.৩৪ লক্ষ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছিল। মোদীর আমলে ১১ বছরে ৫.২৪ লক্ষ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে।” মুর্শিদাবাদের সাম্প্রতিক অশান্তি, নারী-নির্যাতন, ভোট-সন্ত্রাস, শিক্ষক-নিয়োগ দুর্নীতির মতো নানা প্রসঙ্গেও তৃণমূলকে নিশানা করেছেন ভূপেন্দ্র। দলের সাবেক রাজ্য দফতর মুরলীধর সেন লেনে মোদী-সরকারের সাফল্য নিয়ে একটি প্রদর্শনীরও উদ্বোধন করেছেন তিনি।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)