Advertisement
E-Paper

মেদিনীপুর জেলা পরিষদ থেকে ইস্তফা শুভেন্দু অনুগামী প্রণবের

শুভেন্দু অনুগামী হিসেবে পরিচিত প্রণবকে সম্প্রতি বিজয়া সম্মেলনে অনুষ্ঠানে দেখা গিয়েছে। ওই মঞ্চে হাজির ছিলেন শুভেন্দু অধিকারীও। তার পর থেকেই শুরু হয় রাজনৈতিক জল্পনা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০২০ ১৫:০৯
‘আত্মসম্মান’ বজায় রাখতেই পদ থেকে ইস্তফা দিলেন বলে দাবি করেছেন প্রণব বসু। —নিজস্ব চিত্র।

‘আত্মসম্মান’ বজায় রাখতেই পদ থেকে ইস্তফা দিলেন বলে দাবি করেছেন প্রণব বসু। —নিজস্ব চিত্র।

মেদিনীপুর পুরসভার পুরপ্রশাসক বোর্ডের সদস্যপদ থেকে তাঁকে সরিয়ে দিয়েছিল রাজ্য সরকার। তা নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি। আশঙ্কা ছিল, মেদিনীপুর জেলা পরিষদের মেন্টর পদ থেকেও তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হতে পারে। তবে ‘আত্মসম্মান’ বজায় রাখতে তার আগেই ওই পদ থেকে ইস্তফা দিলেন শুভেন্দু অনুগামী বলে পরিচিত তৃণমূল নেতা প্রণব বসু। মঙ্গলবার দুপুরে জেলা পরিষদে গিয়ে নিজের ইস্তফাপত্র জমা দিয়েছেন তিনি। ঘটনাচক্রে, মেদিনীপুরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়ের ৭ ডিসেম্বরের সভার আগেই সরলেন প্রণব। তবে এ বিষয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও মন্তব্য করেননি জেলার তৃণমূল নেতারা।

মঙ্গলবার প্রণব বলেন, “যেহেতু পুরসভা থেকে কোনও কিছু না জানিয়েই আমাকে সরানো হয়েছে, তাই জেলা পরিষদের মেন্টর পদ থেকেও যে কোনও মুহূর্তে সরিয়ে দেওয়া হতে পারে। তাই অপমানিত না হতে চেয়ে নিজের থেকে ইস্তফাপত্র জমা দিয়েছি।”

মঙ্গলবার দুপুরে একটি ভাড়া করা গাড়িতে জেলা পরিষদ চত্বরে পৌঁছন প্রণব। তবে সভাধিপতি বা জেলা পরিষদের সচিবের সঙ্গে দেখা না করেই তিনি সটান চলে যান বড়বাবুর চেম্বারে। সেখানে গিয়ে তাঁর ইস্তফাপত্র খামবন্দি অবস্থায় জমা দেন। প্রণব বলেন, “১৮ নভেম্বর মেদিনীপুর পুরসভার পুরপ্রশাসক বোর্ডের সদস্যপদ থেকে সরিয়ে দেয় রাজ্য সরকার। আমাকে যে ওই পদ থেকে সরানো হচ্ছে, তার আগাম কোনও খবর পাইনি। পুরসভা সূত্রে জানতে পারি, আমাকে অব্যাহতি দিয়েছে রাজ্য় প্রশাসন।”

আরও পড়ুন: ‘বহিরাগত’ নয়, প্রার্থী করা হোক স্থানীয়দের, বালিতে পোস্টার, নিশানায় বৈশালী ডালমিয়া?

আরও পড়ুন: বিজেপির মিছিলে বোমা বন্দুক নিয়ে হামলার অভিযোগে উত্তাল খেজুরি

প্রসঙ্গত, প্রণবকে পদ থেকে সরিয়ে তাঁর জায়গায় বসানো হয়েছে খড়্গপুর গ্রামীনের বিধায়ক দীনেন রায়কে। গোটা বিষয়ে ইতিমধ্যে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন প্রণব। কেন তাঁকে পুরপ্রশাসক বোর্ডের সদস্যপদ থেকে সরান হল, তা জানতে চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টে রিট পিটিশন দাখিল করেছেন। তবে আইনি লড়াইয়ের পথ বেছে নিলেও জেলা পরিষদ থেকেও তাঁকে সরানোর আশঙ্কা করছিলেন তিনি। অপমানের হাত থেকে বাঁচতেই এই পদক্ষেপ বলে দাবি প্রণবের।

শুভেন্দু অনুগামী হিসেবে পরিচিত প্রণবকে সম্প্রতি বিজয়া সম্মেলনে অনুষ্ঠানে দেখা গিয়েছে। ওই মঞ্চে হাজির ছিলেন শুভেন্দু অধিকারীও। তার পর থেকেই শুরু হয় রাজনৈতিক জল্পনা। প্রণবের কথায়, “শুভেন্দু অধিকারী এখনও দলে রয়েছেন। তিনি মন্ত্রিপদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন ঠিকই, কিন্তু দলের একজন কর্মী হিসেবে রয়েছেন। যেহেতু তিনি দলের কর্মী, তাই তাঁকে নেতা মনে করি। তিনি যতক্ষণ পর্যন্ত দল না ছাড়ছেন বা তাঁকে দল থেকে সরিয়ে দেওয়া না হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত তাঁকে নেতা হিসেবে মেনে চলব। যেদিন তিনি অন্য কোথাও যাবেন, সে সময় তা ভেবে দেখব।”

শুভেন্দুর রাজনৈতিক অবস্থান সম্পর্কে ধোঁয়াশা তৈরি হলেও এখন পর্যন্ত দলের বিরুদ্ধে মুখ খোলেননি তিনি। তবে তৃণমূলের বিরুদ্ধে নিজের ক্ষোভ-সংশয় উগরে দিয়েছেন প্রণব। তাঁর কথায়, “দলের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়েছে। দলের বহু মিটিং ডাকা হচ্ছে না। আগামী ৭ তারিখের মুখ্যমন্ত্রীর সভাতেও ডাক পাব কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। কোন লুকোচুরির বিষয় নেই। আমিও দলে রয়েছি। দলের হয়ে কাজ করব। কিন্তু যে ভাবে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে, তাতে যে কোন মুহূর্তে মেন্টর পদ থেকে হয়তো সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে খবর পাব। তাই তার আগেই নিজের থেকে ইস্তফাপত্র জমা দেওয়া।”

গোটা বিষয়ে মুখ খুলতে নারাজ জেলার তৃণমূল নেতৃত্ব। জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তরা সিংহ হাজরা বলেন, “বিষয়টি জানা নেই। জেলা পরিষদে যাওয়ার পর বলতে পারব।” অন্য়দিকে, দলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতিও একই কথা বলেছেন। তাঁর কথায়, “বিষয়টি জানা নেই। ফলে এ নিয়ে এখন কিছু বলব না।”

২০১৮ সালের ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত মেদিনীপুর পুরসভার চেয়ারম্যান পদে ছিলেন প্রণব বসু। তারপর আর নির্বাচন না হওয়ায় পুরপ্রশাসক হিসেবে মহকুমাশাসক (সদর)-এর দায়িত্ব নিয়েছেন। গত ১৮ নভেম্বর সরকার থেকে নির্দেশ আসে, পুরপ্রশাসক হিসেবে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেবেন খড়্গপুর (গ্রামীণ)-এর বিধায়ক দীনেন রায়। সেই নির্দেশানুসারে তিনি দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।

Suvendu Adhikari TMC Midnapore
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy