E-Paper

মতুয়া-ধামে দলের ঝান্ডা এনেছে তৃণমূল, তোপ বিরোধী নেতার

শান্তনুদের পাশে থাকার বার্তা দিতে এবং সে দিনের গোলমালে আহত মতুয়াভতক্তদের সঙ্গে দেখা করতে মঙ্গলবার ঠাকুরনগরে এসেছিলেন বিরোধী দলনেতা।

নিজস্ব সংবাদদাতা 

শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০২৩ ০৭:৪৪
Suvendu Adhikari.

মতুয়া-ধামে দু’দিন আগের গোলমালের পরে ঠাকুরনগরে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র।

তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সফর ঘিরে তুলকালাম বেধেছিল মতুয়াদের পীঠস্থান ঠাকুরবাড়িতে। দফায় দফায় বিজেপি ও তৃণমূল সমর্থকদের মধ্যে মারপিট হয়েছিল রবিবার। তার জেরে রাজনৈতিক টানাপড়েন অব্যাহত এখনও। কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী তথা বনগাঁর বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর এবং তাঁর সমর্থকদের বিরুদ্ধে মতুয়াদের ঠাকুরবাড়িকে ‘অপবিত্র’ করা এবং ভাবাবেগে আঘাত দেওয়ার অভিযোগ এনেছিলেন অভিষেক ও অন্য তৃণমূল নেতারা। এ বার ঠাকুরবাড়িতে গিয়ে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী পাল্টা অভিযোগ করলেন, দলীয় পতাকা নিয়ে এসে মতুয়াধামে বিপত্তি ও অশান্তি বাধিয়েছে তৃণমূলই। শাসক দল আবার পাল্টা চ্যালেঞ্জ করেছে, দলের পতাকার একটা উদাহরণ দেখান বিরোধী নেতা!

শান্তনুদের পাশে থাকার বার্তা দিতে এবং সে দিনের গোলমালে আহত মতুয়াভতক্তদের সঙ্গে দেখা করতে মঙ্গলবার ঠাকুরনগরে এসেছিলেন বিরোধী দলনেতা। সেখানেই শুভেন্দু বলেন, ‘‘আমরা এখানে (ঠাকুরবাড়ি) এসে কখনও দলীয় ঝান্ডা ব্যবহার করি না। তৃণমূল সে দিন দলীয় ঝান্ডা নিয়ে এসেছিল। মতুয়া ঠাকুরবাড়ি পবিত্র স্থান। এখানে দুষ্কৃতীরা থাকতে পারে না!’’ শান্তনুর সুরেই তাঁর অভিযোগ, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী এবং তাঁর ভাইপো মতুয়া ঠাকুরবাড়িকে অপবিত্র করেছেন। মতুয়া সমাজকে আক্রান্ত করেছেন।’’ শুভেন্দুর সঙ্গে এ দিন শান্তনু ছাড়াও ছিলেন গাইঘাটা ও বনগাঁ উত্তর কেন্দ্রের দুই বিজেপি বিধায়ক সুব্রত ঠাকুর ও অশোক কীর্তনিয়া। তাঁদের সঙ্গে বৈঠক করেন বিরোধী নেতা।

শুভেন্দুর অভিযোগের জবাবে রাজ্যের মন্ত্রী তথা অভিষেকের সে দিনের সঙ্গী জ্যোতিপ্রয় মল্লিকের পাল্টা বক্তব্য, ‘‘ঠাকুরবাড়ি নিয়ে কোনও রাজনৈতিক দোষারোপে যাব না। শুধু এইটুকু বলছি, আমি বড়মা’র কাছে দীক্ষিত। ওই বাড়ির সঙ্গে ২৫ বছর ধরে আমাদের সম্পর্ক। ফলে, আমরা জানি, ওখানে কী করা উচিত, কী নয়। কেউ একটা দলের পতাকা দেখাতে পারলে আমি ওই মন্দিরের সামনে নাকে খত দেব!’’ ঝান্ডা নিয়ে ঠাকুরবাড়িতে ঢোকার অভিযোগ মানেননি তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বিশ্বজিৎ দাসও।

অভিষেকের নিরাপত্তার স্বার্থে পুলিশ কুকুর দিয়ে রবিবার ঠাকুরবাড়ি তল্লাশি চালানো, মেটাল ডিটেক্টরের ব্যবহার— এ সবের ফলে মন্দিরের পবিত্রতা নষ্ট হয়েছে বলে এ দিন মন্তব্য করেছেন শুভেন্দু। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মতুয়াদের আরাধ্য দেবতা হরিচাঁদ-গুরুচাঁদ ঠাকুরের নাম ভুল উচ্চারণ করেছেন বলে যে বিতর্ক সম্প্রতি দানা বেধেছিল, সে প্রসঙ্গও ফের মনে করিয়ে দেন বিরোধী দলনেতা। মুখ্যমন্ত্রী সিএএ-র বিরোধিতা করেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

চাঁদপাড়া গ্রামীণ হাসপাতালে রবিবারের গোলমালের ঘটনায় পুলিশ শান্তনু, সুব্রত এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা করেছিল। গ্রেফতার করা হয় ৮ জনকে। সেই প্রসঙ্গ তুলে শুভেন্দু বলেন, ‘‘পুলিশ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছে।’’

সে দিন অভিষেক বলেছিলেন, শান্তনুর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা জুতো পায়ে হরিচাঁদ ও গুরুচাঁদ ঠাকুরের মন্দিরে দাঁড়িয়ে ছিলেন। শান্তনুকে নিরাপত্তা দিতে গিয়ে বিজেপি গুরুচাঁদ ও হরিচাঁদ ঠাকুরকে অপমান করল। শুভেন্দু আবার এ দিন পাল্টা বলেছেন, ‘‘ওখানে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা নয়, মমতার পুলিশ, র‌্যাফ ছিল। শান্তনু ঠাকুর পায়ের ছাপ দেখিয়ে তা টুইট করে বলে দিয়েছেন।’’ যদিও তৃণমূল নেতা বিশ্বজিৎ ফের দাবি করেছেন, ‘‘পুলিশ হরিচাঁদ ঠাকুরের মন্দিরে ছিল না। মন্দিরের গর্ভগৃহে জুতো ছিল কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Suvendu Adhikari TMC

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy