Advertisement
E-Paper

আহত তমলুকের সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী, তবে কলকাতায় আসছেন রেলের বৈঠকে যোগ দিতে

বৃহস্পতিবার সকালে মেয়েকে স্কুলে পৌঁছে দিতে যাওয়ার সময় পড়ে গিয়ে পায়ে চোট পান দিব্যেন্দু। তাঁর পায়ের লিগামেন্টে চোট লেগেছে বলে জানা গিয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০০:০৮
কলকাতায় আসছেন দিব্যেন্দু অধিকারী।

কলকাতায় আসছেন দিব্যেন্দু অধিকারী। — ফাইল চিত্র।

পড়ে গিয়ে তাঁর পায়ে গুরুতর চোট লেগেছে। তা সত্ত্বেও শুক্রবার কলকাতায় রেলের একটি বৈঠকে হাজির হবেন তমলুকের তৃণমূল সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী। সাংসদের ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গিয়েছে, রেলমন্ত্রী থাকাকালীন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে রেলপথের শিলান্যাস করেছিলেন, প্রায় ১০ বছর আগে থমকে যাওয়া সেই কাজ শুরু করার দাবি নিয়ে ওই বৈঠকে যাবেন তিনি।

দিব্যেন্দু-ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকালে মেয়েকে স্কুলে পৌঁছে দিতে যাওয়ার সময় পড়ে গিয়ে পায়ে চোট পান তমলুক সাংসদ। তাঁর পায়ের লিগামেন্টে চোট লেগেছে বলে দাবি ওই সূত্রের। চিকিৎসকের পরামর্শ মেনেই তিনি চলছেন। কিন্তু সাংসদ ঘনিষ্ঠ মহলে জানিয়েছেন, সংসদের রেল বিষয়ক কমিটির সদস্য হিসাবে শুক্রবার কলকাতায় রেলের আঞ্চলিক বৈঠকে তিনি যোগ দেবেন। তাঁর ঘনিষ্ঠ ওই সূত্রের দাবি, রেলের বৈঠকে যোগ দেওয়ার বিষয়টি আগে থেকেই ঠিক করে রেখেছিলেন সাংসদ। সেই মতো নিজেকে প্রস্তুতও করেছেন। তাই, পায়ে চোট লাগলেও শেষ মুহূর্তে ওই বৈঠকে যাওয়া বাতিল করতে চান না তিনি।

ওই সূত্রেরই দাবি, নন্দীগ্রামে বন্ধ হয়ে যাওয়া রেলপথের কাজ আবার চালু করার দাবি নিয়ে ওই বৈঠকে হাজির হবেন দিব্যেন্দু। ঘটনাচক্রে, দিব্যেন্দুরই দাদা শুভেন্দু অধিকারী নন্দীগ্রামের বিধায়ক।

প্রসঙ্গত, ২০০৭ সালে নন্দীগ্রামে প্রস্তাবিত কেমিক্যাল হাবের জমি অধিগ্রহণ করতে চেয়েছিল বাম সরকার। কিন্তু জোর করে জমি নেওয়ার বিরুদ্ধে স্থানীয়দের আন্দোলনের জেরে কেমিক্যাল হাব গড়ে না উঠলেও নন্দীগ্রাম রেল প্রকল্প গড়ে তোলার কথা ঘোষণা করেছিল তৎকালীন ইউপিএ সরকার। বাজকুল থেকে নন্দীগ্রাম পর্যন্ত ১৮.৮ কিলোমিটার দীর্ঘ রেলপথের শিলান্যাস করেছিলেন তৎকালীন রেলমন্ত্রী মমতা। সেই মতো জমি অধিগ্রহণ, লাইন পাতা এবং স্টেশন ও আবাসন নির্মাণ শুরু হয়েছিল। কিন্তু ইউপিএ জমানায় রেল মন্ত্রক মমতার ‘হাতছাড়া’ হওয়ার পর থেকেই নন্দীগ্রাম রেল প্রকল্পের গতি ‘শ্লথ’ হয়ে পড়ে। অভিযোগ, দীর্ঘ দিন ধরে এই প্রকল্প রেলের বাজেটেও জায়গা পায়নি।

ঘটনাচক্রে, তৃণমূলে থাকাকালীন এই রেল প্রকল্পের জন্য কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়াতে দেখা গিয়েছিল শুভেন্দুকে। বর্তমানে যিনি বিজেপিতে আছেন এবং গত বিধানসভা নির্বাচনে নন্দীগ্রাম কেন্দ্র থেকে মমতাকে হারিয়ে বিধায়ক হয়েছেন। রেল প্রকল্পের কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ার প্রেক্ষিতে বছর পাঁচেক আগে হলদিয়ার একটি সভা থেকে কেন্দ্রের বিরুদ্ধের রাজ্যের প্রতি বঞ্চনার অভিযোগ তুলে শুভেন্দু বলেছিলেন, “নরেন্দ্র মোদীর সরকার রাজ্যকে বঞ্চনা করছে। নন্দীগ্রামে জাতি বিভাজন করার চেষ্টা করছে। খুনি লক্ষ্মণ শেঠকে বিজেপিতে নিয়ে নন্দীগ্রামের মানুষের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে।”

কিন্তু রাজনীতির সেই জল এখন বহু দূর গড়িয়ে গিয়েছে। শুভেন্দু বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর থেকে অধিকারী পরিবারের সঙ্গে তৃণমূলের দূরত্ব তৈরি হয়েছে। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে শুভেন্দু বিজেপিতে যোগদানের পরেই তাঁর বাবা শিশির অধিকারিকে সরানো হয়েছিল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের সভাপতি পদ থেকে। সেই থেকে তৃণমূলের সঙ্গে অধিকারীদের দূরত্ব আরও বাড়ে।পরের বছর ১ মার্চ এগরায় অমিত শাহের সভামঞ্চে শিশিরের যোগদানে সম্পর্ক ছিন্ন হওয়ার ষোলকলা পূর্ণ হয়। শিশির-দিব্যেন্দু এখনও খাতায়কলমে তৃণমূলের সাংসদ হলেও বিভিন্ন সময় তাঁদের দলের সঙ্গে ‘দ্বন্দ্ব’-এ জড়াতে দেখা গিয়েছে। তবে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরেও নন্দীগ্রামের রেল প্রকল্পের কাজ শুরু করার দাবি থেকে সরে আসেননি শুভেন্দু। গত বছর রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের সঙ্গে দেখা করে রেল প্রকল্পের কাজ শুরু করার আর্জিও জানিয়ে এসেছিলেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক। এ বার একই দাবি নিয়ে সংসদীয় কমিটির বৈঠকে হাজির হচ্ছেন দিব্যেন্দু।

Dibyendu Adhikari Indian Railways Tamluk
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy